somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

Paulo Coelho এর adultery (পরকীয়া)

২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ১২:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(২৪) শেষ অধ্যায়

লুকোনো,হারানো কথাগুলো ছূটে আসছিল মনের আয়নায়,স্থবির এক রুপ,বদলাবে না কিছুই,সময় কেটে যাবে,এ ভাবেই,একই সুরে,তারপর একসময় আমিও হব আকাশের মেঘ।যতই উপরে উঠছিলাম্,ততই সরে যাচ্ছিলাম নিজের কাছ থেকে,আমি তখন অন্য আরেক পৃথিবীতে,পৃথিবীর যন্ত্রনা নেই ওখানে,আছে শুধু আনন্দের সুর।শূন্য আমি,তবুও পূর্নতার এক চেহারা।

একসময় বাজপাখীটা ছুটে গেল আরেক পাশে,আমিও ছুটছিলাম তার পিছু পিছু।এই নতুন আমাকে কেউ চিনবে না,বাতাসে ভেসে যাওয়া নতুন আরেক মুখ।
বাজপাখীটা বললো, ‘জান,এটাই অনন্তের সুর’।অনন্তের ঐ আকাশে আমরা অস্তিত্ব হারানো অরুপ কিছু একটা,আমরা ঐ মহাশক্তির খেলার পুতুল,যার সাজানো পাহাড়,পর্বত,সূর্য।
ছুটে যাচ্ছিলাম সময়ের সেই আদি সময়ে,আমি ঐ মহাশক্তির পাশে নিজেকে উপলদ্ধি করতে চাই।অনেক ছবিই দোলা দিচ্ছিল মনে,বদলায়নি আমার অনুভুতি,খোলা আকাশে শরীর হারানো আরেক বাজপাখী,আমি।
‘বড় খারাপ লাগছে বাজপাখী,তোমাকে ছেড়ে এখন আমাকে যেতে হবে,নামতে হবে ঐ হোটেলের সামনে।জানি না কি আছে ভবিষত্যে?আমি এখন আছি মায়ের জরায়ুতে,শূন্য থেকে পূর্নতার স্বপ্ন দেখার আশায়।সারা পৃথিবী আঁটকে আছে আমার এই ছোট্ট মনটায়।ভাবছিলাম কি ভাবে মনের কথা প্রকাশ করবো,জানা নেই ভাষা আমার,কিছু নেই কোথাও,শুধু শূন্যতা’।
হায় রে মন!

মনের আকাশে,সামনের বিরাট পৃথিবীটা;যেন ছোট্ট একটা বিন্দু।এ নতুন এক দেখা,নতুন এক আর্শীবাদ।নতুন এক উপলদ্ধি।একটা ঝড়ো বাতাস এলোমেলো করে দিচ্ছে আমাকে,কিন্ত ভাষায় বলার ক্ষমতা নেই আমার?

শক্তি।তার অনন্তের ছোঁয়ায় অদ্ভুত এক ক্ষমতা দিয়ে গেছে আমাকে।যে কোন কিছুই করতে পারি,আমি,এমন কি যে কোন মূহুর্তে শেষ করতে পারি এই পৃথিবীর সব যাতনা,যন্ত্রনা দূর করে তৈরী করতে অজানা,না দেখা স্বর্গ রাজ্য।ভেসে বেড়াচ্ছি দেবদূতদের রাজ্যে,তাদের কথা কানে ভেসে আসছে,ছুটে আসছে নতুন নতুন দৃশ্য,হারিয়ে যাচ্ছে আবার অজানায়।বুঝতে পারছি না,আমার মনের পরিবর্তনটা,অবশ্য তাতে কি বা যায় আসে?ভবিষ্যত খুঁজছি আমি,কিন্ত কোন ভাবে আঁটকে আছি বর্তমানে।

যুক্তিযুদ্ধের শক্তিটাও নেই আর,জানা আমার অনুভব যা ঘটে গেছে,এটাও জানি যা ঘটবে ভবিষ্যতে।বাস্তবতায় ফিরে গেছি আমি,একটা কুকুর ডাকছে কো্থাও।আকাশ ছেড়ে মাটিতে ফিরছি আমরা,আর কিছুক্ষন পর ফিরে যাব এই নক্ষত্র রাজ্য ছেড়ে সাধারণের বাস্তবতায়,
হাসি কান্না দুঃখের প্রতিদিনে।তবে অনুভব করলাম,সূর্য,নক্ষত্র,গ্রহের সেই দেশটা যা অবাক হয়ে দেখি আমরা,দেবতা আরেক আমি।

ইচ্ছে হচ্ছিল না স্বপ্নের এই রাজ্য ছেড়ে,বাস্তবতায় ফিরে যেতে,তবুও যেতে হলো,ফেলে আসা আর্কষন ধীরে ধীরে আমাকে নিয়ে গেল সেদিকে।হোটেলটা ডানদিকে,লেকগুলো চোখে পড়ছিল না,ঢাকা পড়ে গেছে জঙ্গলে।কেন চিরদিন,থাকতে পারি না আমার ঐ অনুভুতিতে?
‘ওটা সম্ভব না,কোন ভাবেই’,বাজপাখীটা বললো,আমাদেরকে মাটির কাছে নিয়ে যেতে যেতে,
তারপর হারিয়ে গেল ছুটে যাওয়া বাতাসে।যেতে যেতে পাখীটা বলছিল, ‘এ ভাবে ভেসে বেড়াতে চাইলে,এ পৃথিবী তোমার জন্যে না’।
কি যায় আসে তাতে?বাদানুবাদ করছিলাম,তবে যুক্তি ছিল না কথায়।কি ভাবে ফিরে যাব পৃথিবীর ঐ জঞ্জালে,অনন্তের এই অনুভুতি ছেড়ে।
‘একটা পথ খুঁজে নিও’,বাজপাখীটা ফিসফিস করে বললো।তারপর হারিয়ে গেল কোন সে অজানায়।
গ্লাইডারের ট্রেনার আবার বললো,যেন ভুলে না যাই নামার পর দৌড়ানোর কথা।নীচের ঘাস এটা ওটা দেখা যাচ্ছিল,যে মাটিতে ফিরে যাওয়ার জন্যে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে ছিলাম,
দেখে পুরোনো সেই উৎসাহ ছিল না আর মনে,বরং দুঃখ হচ্ছিল আমার অভিজ্ঞতার নতুন পর্ব এত তাড়াতাড়ি ফুরিয়ে গেল।
কি,সেই অভিজ্ঞতা?
পা ছুঁয়ে গেল মাটিতে,গ্লাইডারের ট্রেনার এক এক করে বলছিল,যা যা করতে হবে।থেমে যাওয়ার পর কাছে এসে বেল্টটা খুলে দিল,লোকটা।আমি আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিলাম,আর লোকটা দেখছিল আমাকে।কিছুই ছিল না আকাশে,যেন ঝকঝকে নীল ছুটে যাওয়া বিরাট এক মাঠ,দু এক জায়গায় আসর করে বসে ছিল সাদা মেঘ,আর কটা গ্লাইডার ছুটে যাচ্ছিল মাটির দিকে।
আমি কাঁদছিলাম,কেন জানি অযথার কান্নায় ভেসে গেছি তখন।
‘কোন অসুবিধা হচ্ছে নাকি,আপনার’?
মাথা নেড়ে বললাম,না,না।কাউকে কি আর বোঝানো সম্ভব আমার উপলদ্ধিটা?লোকটা বললো,বছরে অন্তত দুই একজন থাকেই যাদের এ ধরণের উপলদ্ধি হয়।
জিজ্ঞাসা করলাম,কি সেই অনুভুতি যা তারা প্রকাশ করতে পারে না।লোকটা বললো,তার সাথের কজন ট্রেনার বন্ধুও আছে,যারা অন্ধকারের হারিয়ে যায় অজানার গভীরে তাদের অজান্তেই,মাটিতে ফিরে আসার পর তারা খুঁজে পায় নিজেদের।
মনে হলো তার উল্টোটাই সত্যি,কিন্ত জানিনা ওটার ব্যাখা দেয়াটা কি সম্ভব?
ট্রেনারকে ধন্যবাদ দিলাম তার সাহায্যের জন্যে,বলার ইচ্ছা ছিল ভেসে যাওয়ার রাজ্যের ঐ অনুভুতি তো ছিল না আমার চাওয়ায়।কিন্ত কি দরকার ও সব ঝামেলায় যাওয়ার?হেঁটে গেলাম পার্কের বেঞ্চে,অপেক্ষা করছিলাম স্বামীর জন্যে।
কান্না থামছিল না,আমার স্বামী ফিরে এসে হাসি মুখে আরম্ভ করলো,তার অদ্ভুত,অবিশ্বাস্য অভিজ্ঞতার কথা।কান্না থামেনি আমার,সে আমাকে জড়িয়ে ধরে ক্ষমা চাইলো,বললো তার উচিত হয়নি ওভাবে আমাকে গ্লাইডিং করার জন্যে জোর করাটা।কিছুটা সময় একটু একা থাকার অনুরোধ করলাম,সময় গেলেই সবকিছুই ধাতস্থ হয়ে যাবে।

কাপড়চোপড়ের দায়িত্বের লোকটা আমাদের কাপড়চোপড় এনে দিল।যন্ত্রের মতই সবকিছুই করে যাচ্ছিলাম,তবু কেমন জানি আমি একটা ভিন্ন জগতে, যা সবাই বলে, ‘বাস্তবতা’।স্বামী বললো,হোটেলে ফিরে গেলেই ভাল,শীতের দাপটটা বেশ প্রচন্ড তখন।আমার ইচ্ছা ছিল আরও কিছুটা সময় একা কাটানোর জন্যে।

ঘন্টা আধেক একা একা বসে ভাবছিলাম,যদি চোখের কান্নায় ভেসে যায় আমার আত্মার অপরাধ বোধ।এক সময় মনে হলো,ফিরে যাওয়া দরকার,হোটেলে ফিরে গাড়ী করে ছুটলাম আমরা জেনেভার দিকে।রেডিওটা বাজছে,কথায় নিস্তব্ধতার বরফ ভাঙ্গার কোন দরকার ছিল না।মাথা ঝিমঝিম করছিল,তখন আবেগের স্রোতে ভেসে যাচ্ছি আমার পুরোনোয়।কি কথা হলো গতকাল,কেনই বা হলো আলাপ আলোচনা,সেগুলো নিয়ে মাথা ঘামানোর দরকার নেই।
এই সেই আর্দশ জগত।

আর ঘন্টাখানেক আছে,তার পর পুরোনো এ বছর ছেড়ে আমরা ছুটে যাবো,নতুন বছরে,তবে নতুন হব লি আমরা?হয়তো বদলাবে অনেক কিছুই,আসবে অনেক কিছুই মতুন চেহারা নিয়ে,আমি আঁটকে থাকবো আমার এই পুরোনোতেই,হয়তো বদলাবে না কিছুই আমার রাজ্যে।এ বছরের বাজেট অনেক কম,আতসবাজি তেমন একটা পোড়ানো হবে না।
আতসবাজির খেলা সারা জীবন দেখে যাচ্ছি,কিন্ত ছোটবেলার আনন্দ হারিয়ে গেছে,বয়সে আতসবাজীর রকমারী রং এর আকাশটাকে এখন খুবই সাধারণ মনে হয়।ফেলে আসা ৩৬৫ দিনের জন্যে আমার যে খুব একটা দুঃখ হবে তা না,তবু একটা বছর চলে গেল কোথায় যেন,নিয়ে গেল আমার বরাদ্দের একগাদা সময়।জীবন নৌকাটা ভেসে যাচ্ছে সমুদ্রের ঝড়ো হাওয়ায়,ডুবে যায়নি,খুঁজে নিচ্ছে এক কিনারা থেকে আরেক কিনারা,কোন না কোন ভাবে পৌঁছে গেলাম সময়ের নতুন এক কিনারায়,অনন্তের কুয়াশায় হারিয়ে যাওয়ার আগে।

সমুদ্রের জল ছেড়ে শুকনো মাটি?কোন সম্পর্কেই এ ধরণের টানাপোড়েনটা মানায় না।যে কোন সম্পর্কেই,একঘেয়েমি নীরস ভাব,সেটাকে ভাঙ্গনের দিকে ঠেলে দেয়।সম্পর্কের দুজনকে-দুজনের কাছে মাঝে মাঝে অবাক হওয়া দরকার।

সংসার খেলার এ যাত্রা আরম্ভ হয় বেশ বড়সড় একটা অনুষ্ঠান দিয়ে,বন্ধুবান্ধব আত্মীয়স্বজন কেউ বাদ পড়ে না,অজানা কাউকে সাক্ষী করে,হাজারবার বলা কথাটা নতুন করে বলা হয়। ঐ সব কথায় বাড়ীটা তৈরী হবে শক্ত মাটিতে,বালিতে তো কখনও সাজানো যায় না বাড়ীঘর।অতিথিরা ছুঁড়ে দেয় চাল আর আমরা ছুঁড়ে দেই ফুলের তোড়া।বিয়ে হয়নি যাদের তারা ঈর্ষা করে,আর যারা বিবাহিত জানে এরাও ছুটে যাচ্ছে চোরাবালিতে।

বাস্তব তার নিষ্ঠুর চেহারা নিয়ে যখন সামনে দাড়ায়,তাকে আমরা একপাশে ঠেলে দিতে চাই একটা দুঃস্বপ্ন ভেবে।ধরে রাখতে চাই বিয়ের অনুষ্ঠানের মিষ্টি আকাশটা,কোনভাবে আঁটকে রাখতে চাই সময়ের চাকা।কিন্ত তা কি আর হয়,আর ওটাই আমাদের ভুল,ভেসে যাওয়া অযথাই আবেগের স্রোতে।সময় মানুষকে বদলায় না,যা বদলায় সময়ের ঝড়ে বদলানো ভালবাসার চেহারা।আকাশে ভেসে এ টুকু জানি এখন,আমি নিজেকে বড়ই ভালবাসি,ভালবাসি আমার চারপাশের সাজানো পৃথিবীকে।

মনে পড়লো উনবিংশ শতাব্দীর কমবয়সী এক পুরোহিতের লেখায়, st.paul এর করিনিথিয়ানদের চিঠিতে লেখা ভালবাসার বিশ্লেষণ,ওখানে বলা ভালবাসা খুঁজতে গিয়ে আমরা শুধু জীবনের এক দিকেই তাকিয়ে থাকি,সেটাতে শান্তি কিছুটা আসে সন্দেহ নেই,তবে হারায় জীবনের বৈচিত্র।একসময় ছুটে আসে বিশ্বাস আর ধর্মের স্বাদ,কিন্ত ভালবাসা কোথায় সেখানে?

জানা যায় আর্দশের কথা,তবে জানা হয় না তৃতীয় চোখের দেখা,এই আকাশে ছুটে যাওয়ার সময় উপলদ্ধিটা আমার,যেখানে আমি ছুটে গেলাম সেই অন্ধকার গর্তে আর নতুন করে খুঁজে পেলাম আমাকে।কোন সন্দেহ নাই আর,ভালবাসাই শুধু কাউকে উদ্ধার করতে পারে এই চারপাশের যন্ত্রনার আকাশ থেকে।ভালবাসায় নিঃস্ব হওয়ায় কোন দুঃখ নেই বরং আনন্দ আকাশ ছোঁয়া।ভালবাসায় কোন ভঁয় নেই,একঘেয়েমি সুরে হতাশা ঘিরে ধরে না চারপাশটা,বরং অদ্ভুত এক ছন্দে দুটো মনকে কাছাকাছি নিয়ে যায়। ভালবাসার আলো আনে নতুন রং ধনুর চমক,নতুন আশায়,নতুন স্বপ্নে ভঁরে উঠে জীবন ক্ষনেক্ষনে।ভালবাসা আমাদের নিয়ে যায় সেই অনন্ত শক্তির কাছে,যা মানুষের চাওয়ায়, সাধনায় লুকোনো।এখন জানি কেন খুঁজি আমরা সেই অনন্ত ভালবাসাকে,কেন খুঁজি আমরা,সেই আকাশটা যেখানে ফুরোনো নেই কোন?আমরা চাই ভালবাসার মানুষটাকে আরেকটু পাশে,ভালবাসার আরেক নাম বেঁচে থাকা।

কুকুর বা জন্তদের ভালবাসার মধ্যেও লুকোনো আছে বেঁচে থাকা,যখন ভালবাসা থাকে না,ফুরোয় বেঁচে থাকার আনন্দ।বিয়ের এই দশ বছরে আনন্দের যা যা ধরন থাকতে পারে,তার সবটাই অনেকটা পাওয়া আমার,আবার অনেক যন্ত্রনাও জুটেছে কপালে।
অথচ ঐ দশটা বছরে দুএকটা ঘটনা ছাড়া আর তেমন কিছু নাই,যেখানে খুঁজে পাবো হয়তো ভালবাসায় ভেসে যাওয়ার স্বাদ।সন্তানের জন্মের সময়ে অবাক চোখে নতুন প্রজন্মকে দেখা,
স্বামীর হাত ধরে অবাক আল্পসের সৌন্দর্যে হারানো,জেনেভা লেকের আকাশ ছোঁয়া ফোয়ারায় স্বপ্ন খোঁজার স্বাদ।হয়তো ঐ কটা মুহুর্ত আমাকে জোগাচ্ছে বেঁচে থাকার উদ্দীপনা।

জানালার বাইরে দেখলাম,কোন তুষারপাত হয়নি,যদিও আবহাওয়ার খবরে সেটাই জোরেসোরে জাহির করা।মনে হচ্ছিল এটাই যেন আমার দেখা সবচেয়ে আবেগপুর্ন নববর্ষের সন্ধ্যা।
মনে হচ্ছিল আমি একটা মরা লাশ,এই সন্ধ্যা আমাকে পুর্ণজীবিত করলো।পৃথিবীর সবকিছুই হারায় সময়ে-থেকে যায় ভালবাসার ছোঁয়াচ।

ভালবাসা!আমার চোখ ভঁরে গেছে কান্নায়।অদ্ভুত একটা জগত,জোর করে কাউকে যেমন ভালবাসা যায় না,জোর করে কেউ আমাকে ভালবাসতেও পারবে না।শুধু ভালবাসার চোখে দেখে যাওয়া,মত্ত হয়ে যাওয়া ভালবাসায়।ভালবাসায় শুধু খুঁজে পাওয়া যায় ভালবাসা আর কোন পথ নেই সেখানে।আমরা ভালবাসি নিজেকে,ভালবাসি অন্যকে,ভালবাসি আমাদের শত্রুকে,আর কিইবা চাওয়ার আছে আমাদের জীবনে।টেলিভেশনে পৃথিবীর দুঃখ,দূর্যোগ দেখছিলাম,এটুকু জানি যতদিন ভালবাসা আছে পৃথিবীতে,বেঁচে থাকবে মানব সমাজ।ভালবাসা নিয়ে আসে ভালবাসা,সরায় দুঃখকষ্ট,হিস্রতার আকাশটা।

ভালবাসতে জানে যারা,যারা ভালবাসে সততা,ভঁয় পায় না,কেন না এটা তো সব দুঃস্বপ্নের কালো মেঘ একপাশে ঠেলে,একদিন না একদিন আসল রুপ,আসল চেহারাটা বের হয়ে আসবেই।মানুষ খোঁজে সত্যি চেহারাটা,কোন পক্ষপাতিত্ব বা অসহিষ্ণুতায় ভর না করে আসল চেহারাটা কে না দেখতে চায়।সত্যির প্রতি এ ধরণের ভালবাসাকে হয়তো ‘আন্তরিকতা’ বললেই মানায় ভাল,আর অন্য কিছু বলাটা ঠিক মানায়ও না।ভালবাসার মনটা কোন দূর্বলতা খোঁজে না,বরং মনের মানুষটার দূর্বল হতাশ সময়টায় তাকে হাত ধরে এগিয়ে দেয়।
জেকব আর মারিয়ানের কথা ভাবছিলাম,অনিচ্ছাকৃত তারা আমাকে পৌঁছে দিল,আমার স্বামীর কাছে।আশা করি তারাও হয়তো ভালবাসায়,আনন্দে কাটাচ্ছে বছরের শেষ দিনটা,হয়তো এই অজানা ঝড়টা তাদের দুজনকেও নিয়ে গেছে কাছে।

আমি কি আমার পরকীয়া প্রেমকে যুক্তিযুক্ত করার চেষ্টা করছি?হয়তো তা না,আমি আমার নিজের আসল চেহারাটা খুঁজছিলাম,আর সেটা খুঁজেও পেলাম।কেন জানি আমার মনে হয়,পরকীয়া আর কিছু না,হঠাৎ করে হারানো নিজেকে খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা।
আসলে ভালবাসতে শেখাটাও দরকার।আর সেটাই পৃথিবীতে প্রতিটা মানুষের বেঁচে থাকার উদ্দেশ্য হওয়া উচিত।মানুষের জীবনে শেখার সূযোগ আসে হাজার হাজার বার।যে কোন মানুষের জীবনে সূযোগ আসে ভালবাসার কাছে আত্মসর্মপণ করার।জীবনটা তো শুধু আনন্দে ভেসে যাওয়ার না,বরং প্রতি মুহুর্তে নিজেকে খুঁজে নেয়ার।নিজেকে খোঁজার সবচেয়ে বড় সূযোগ ভালবাসায়।

দেশ,ভাষা,এই জেনেভা শহর,রাস্তার বাতিগুলো,ঘরের আসবাবপত্র সব কিছুই বদলাবে,বদলাবে না শুধু ভালবাসার মনটা।পৃথিবীর কোন এক জায়গায় থাকবে চিহ্ন আমার ভালবাসার মনটার।আমার ভুলগুলো,আমার কারণে অন্য কারও মনে দুঃখ দেয়া,যার অস্তিত্ব জানা ছিল না আমার।

জানালার পাশ থেকে সরে ছেলেমেয়ে,স্বামীকে সবাইকে ঐতিহ্যের চেহারায় সোফায় বসে মাঝরাতে ডান পা এগিয়ে আমরা নতুন বছরকে বরণ করার জন্যে এগিয়ে যাব।
‘দেখছো,বাইরে বাইরে,বরফ পড়ছে’,আমার স্বামী বললো।
জানালায় ছুটে রাস্তার বাতির দিকে তাকিয়ে দেখলাম,সত্যি সত্যিই বরফ পড়ছে!আমি আগে দেখিনি কেন?

না,না,এখনও না,প্রথমে আমরা সোফায় পা তুলে বসবো,তারপর বারোটা আঙ্গুর খেয়ে বিচিগুলো রেখে দেব,সারা বছরে উন্নতির আশায়।পূর্ব পুরুষদের শেখা সবকিছুই মেনে চলবো,আমরা।

আমরা একসাথে সবাই বাইরে ছুটে যাব,বেঁচে থাকার আনন্দে।আসবে নতুন বছর,আসবে আনন্দ,উন্নতি।পুরোনো রক্তাত্ত আমি হবো ভালবাসায় নতুন,ক্ষমা চাওয়ার কিছু নেই,আত্মগ্লানি নেই কোন,সব কিছু নিয়েই আমি।আমার চাওয়া পাওয়া,হতাশার,আমি।

পুরোনো আঙ্গিকে,তবুও নতুন।



০০০০০





সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ১২:২১
৪৫৬ বার পঠিত
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

১. ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:২৪

রাজীব নুর বলেছেন: এরপর এলকেমিষ্ট ধারাবাহিক ভাবে দিবেন।

২. ০২ রা জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১২:৩৩

ইল্লু বলেছেন: ধন্যবাদ,চেষ্টা করবো

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তোমাদের অভিবাদন হে বিপ্লবী!

লিখেছেন বিদ্রোহী ভৃগু, ২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৫


তোমাদের অভিবাদন হে বিপ্লবী!

বিপন্ন সময়ে, ইতিহাসের ক্রান্তিকালে
চাটুকারিতা আর মোসাহেবির আবশ্যিকতাকে দলে
স্বৈরাচারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে-
ছররা গুলি, টিয়ার শেল, গুপ্ত আক্রমন
সব কিছু ছাপিয়ে দৃঢ় চেতনায় অবিচল- বিজয়ের স্বপ্নে।

তোমাদের অভিবাদন হে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে সুবাসে তুমি গোলাপ

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৫০



তরঙ্গে মন উচাটন,কাঁপছে দুরুদুরু বুক,
তোমায় দেখবো বহুদিন বাদে,
একগুচ্ছ রজনীগন্ধা
স্বইচ্ছায় গোলাপকে আলাদা করে ফেললো,
গোলাপ হেসে কুটি কুটি,
লাল থেকে আরো লাল হয়ে গেলো,
সে যেন লজ্জায়।
চেনা সুর আরো চেনা হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবশেষে রিক্সালীগ সফল!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:২২


অবশেষে আবারো সরকার হার মানলো। হার মানলো রিক্সালীগের কাছে। এটা শুরু মাত্র। এখন সবকিছুতেই হার দিয়েই চলতে হবে হয়তো। যেটা কারোরই কাম্য ছিলনা। কাম্য ছিল তাদেরই যারা অন্যায়ভাবে শত শত... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেগা মানডে: সংঘর্ষ, বিক্ষোভ ও অহিংস প্রতিবিপ্লবের ভূত চেপে বসেছে ঢাকাবাসীর ঘাড়ে !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৬



ঢাকায় নৈরাজ্য বেড়েই চলেছে। প্রতিদিন বিক্ষোভ ও সংঘর্ষ হচ্ছে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে। আজকে তার সাথে ঢাকাবাসী প্রত্যক্ষ করলো অহিংস অভ্যুত্থান কর্মসূচীর! বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

চিন্ময় ব্রহ্মচারী প্রভুকে গ্রেফতার করা হল কোন উদ্দেশ্যে?

লিখেছেন সাড়ে চুয়াত্তর, ২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩৯

আমার ধারণা চিন্ময় ব্রহ্মচারী প্রভুকে গ্রেফতার করা হয়েছে ইচ্ছাকৃতভাবে দেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার জন্য। ভালো উদ্দেশ্যে তাকে গ্রেফতার করা হয় নাই। চিন্ময় ব্রহ্মচারীর কথা বার্তা আমার ভালো লাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×