ছেলেটা তার মায়ের হাত ধরে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে, জোৎস্নার প্লাবনে ভেসে যাচ্ছে, চার পাশ, সে কাঁদতে কাঁদতে তার মায়ের কাছে জানতে চায়, মা বাবা আকাশের কোন তারাটা হয়েছেন?
মেয়ে টা তার ছেলের দিকে তাকিয়ে বলে, বাবারে মানুষ মরে গেলে আকাশের তারা হয়না।
ছেলেটা তার জামার হাতায় চোখ মুছতে মুছতে বলে, দাদু যে বললো, বাবা আকাশের তারা হয়ে গেছেন,
মেয়েটা আচলে চোখ মোছে আবেগ নিয়ে বলে, মানুষ মারা গেলে আল্লাহ পাকের কাছে যায়,
ছেলেটা আবারো জামার হাতায় চোখ মুছে জানতে চায়, আল্লাহ কোথায় থাকে?
ময়েটা বলেন, বাপধন আল্লাহ সবার উপরে থাকেন।
ছেলেটা বলে, আল্লাহ কে বলো না। বাবা কে ফিরিয়ে দিতে।
বাবা রে- তোর আব্বা না ফেরার দেশে গেছে।
বাবা কেনো ফিরবেনা,
ছেলেটা এবার আর চোখ মোছেনা সে জানতে চায়, আমার কি আর বাবার সাথে কখোন দেখা হবে না?
-হবে বাবা, আমরা সবাই মরে গেলে আবার দেখা হবে?
তাহলে আমাকে মেরে ফেলো মা, আমি বাবার কাছে যাবো।
উথাল পাথাল জোৎস্নায় মেয়েটি তার ছেলে কে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থেকে, দুরে কোথাও একটা গান বাজে, "আজ জোৎস্না রাতে সবাই গেছে বনে, আজ বসন্তেরই মাতাল সমিরনে।"
হিমু দাড়িয়ে আছে ছাদের কার্নিসে, সামনে পুর্নীমার ধবল চাঁদ, আকাশ ভরা তারা, চাঁদনি প্রহর রাইত, এই রাতে তার বাবা মরে যেতে চেয়ে ছিলো। আজকে কি সেই চাঁদনী প্রহর রাইত এসেছে? সব কিছু ছেরে বনে চলে যাও কি যায়? এই উত্তর হিমু খুজে পায়নি, বাবাও ডাইরিতে কিছু লিখে যায়নি, হিমু তার হলুদ পান্জাবীর হাতায় চোখ মোছে, পাগল করা এই জোৎস্নায় বাবা কে খুব মনে পড়ে হিমুর, সে সেই অদ্ভুত মায়াবী আলোয় তার মাকে দেখতে পায়, তার মা এসে তার পাসে দ্বাড়ায় বলে, বাপ ধন তুই না তোর বাবার কাছে যেতে চেয়েছিলি, যাবি নারে বাপ ধন, বাবার কাছে। আয় আমার হাত ধর।
হিমু তার মায়ের হাত ধরতে সামনে কাতর হাত বাড়ায়, এর পর আর মাকে কোথাও দেখা যায়না, হিমু পরে যেতে থাকে ছাদের কার্নিস থেকে নিচে, সে চলে যেতে থাকে আবছা চাদের আলো ভেদ করে দুরের তারা টার দিকে, যেটাকে সে এত দিন ভেবে এসেছে বাবা বলে।
উৎসর্গঃ সেই মানুষ টাকে, যার লেখা পড়ে প্রথম জেনে ছিলাম আমার মধ্যে ও একজন হিমু আছে, মানে আত্যাও আছে। সেই হুমায়ন স্যারকে, আল্লাহ আপনাকে বেহেস্ত নসিব করুন,
স্যার এবারের বইমেলা থেকে আপনার নতুন হিমুর বইটা কিনতে পারবোনা, সারা বছর বসে থেকেছি বইমেলা দিয়ে আপনার হিমুর বইটা কেনার জন্য, এখন অনেক বড় হয়ে গেছি, ভালো চাকরী ও করি, তবুও মা প্রতি বছর ২১শে বই মেলার সময় আপনার নতুন হিমুর বইটা কেনার জন্য টাকা দেয়, কথা গুলো আপনি কোন দিনও হয়তো জানতে পারবেনা না, তবুও লিখে রাখলাম জেনো আমার পরের প্রজন্ম জানতে পারে, একজন ছিলো এই বাংলায় যার বই কেনার জন্য ইস্কুলের টিফিনের পয়াসা বাঁচিয়ে রেখেছিলো, তার পুর্ব পুরুষেরা।
স্যারের একটি লেখা পড়ার খুব ইচ্ছে ছিলো, দেয়াল বইটা আর পড়া হলোনা,
সে আমি এবং একটি কুকুর
ফেইস বুকে যারা আমার পেইজ দেখত চানঃ
View this link