somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

টুপ-কথা

১৮ ই এপ্রিল, ২০১২ রাত ১০:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আমার "ঘর"-টা রাতে ঘুমিয়ে গেলে ওকে অন্যরকম লাগে।

আবছা একটা আলোয় ঘরটার শরীরের সবটা ধরা পড়ে না। ছায়ামাখা অশরীরী ঘরটার খেরো শরীরে রহস্য ফিসফাস করে। হুট করে লোডশেডিং হলে ওর ছায়াগুলো গাঢ় হয় আরেক-টু। ছায়া-কায়ায় পাশের মানুষটাকেও অচেনা লাগে। মানুষটার অবয়বে-চেহারায় খুব বুঝে যাই চোখটা-নাকটা কোথায়। চোখ কুঁচকে ফেললে বুঝি স্বপ্নে ধুন্ধুমার লেগে গেছে... সমাধানের বেশ তোড়-জোড় চেষ্টা চলছে। পরেই ঠোঁটের কোনে আলতো এক-ঝলক হাসিতে বুঝি স্বপ্নে একেবারে যুদ্ধজয় হয়ে গেছে! পাশ ফিরে যাওয়ায় ওর এলোমেলো চুলের ফাঁক-ফোকর চুঁইয়ে চুঁইয়ে সেই মাখো-মাখো গন্ধটা গড়িয়ে গড়িয়ে আমার নাক-ঠোঁট ছুঁয়ে বালিশে গেঁথে যায়। আমি বরাবর-ই পাঁড় গন্ধসেবী। গন্ধ-চাদর মুড়িয়ে ঘুমোবো ভেবে বালিশের রন্ধ্রে-রন্ধ্রে হাতিয়ে-খুঁচিয়ে আতিপাতি গন্ধ খুঁজে নাজেহাল হই। কাণ্ড দ্যাখো! আলো-ছায়া থেকে সরে সরে কখোন গন্ধে চলে গেছি!

থর-দেয়া ঠাণ্ডা মার্বল-মেঝের উপর উদোম পা ফেললে কেমন শিরশির শীত ওঠে পিঠ বেয়ে। আমি শীত পালন করি। চোখ মুদে নিয়ে শিরশির শীতটুক ঝপাৎ গিলে ফেললাম। রক্তের ভেতর শ্বেত-লোহিতের টি-টোয়েন্টির অস্থিরতা দেখে এক দমক হেসে ফেলি! শ্বেতরা জিতে গেলো বোধহয় ম্যাচে। লোহিতের চিৎকারে-হুড়োহুড়িতে শৈত্যে ভাটা পড়ে। আমি মচমচ করে ম্যাচ ভেঙে ভোরের ময়লাটে আকাশ-গলা রং দিয়ে ঘুম ধুয়ে নিয়ে ঘরের ফিনফিনে পিছল-পর্দা সরিয়ে ওতে ধূসর আলো মাখাই।

পলাশ গুণ। পাড়ায় কীর্তন গায়। অনেকে ওকে সাধক-ফকির বলে। আবার অনেকের বিচক্ষণ মত হলো, ও বেশ উঁচুদরের গায়ক। আমি অতো-শত বুঝি না। আমি আমার ঘরের ভেতর নকশা বুনি। আমার নকশায় ওর সুর এসে বসলে নকশায় কেমোন একটা ঝলক আসে। ঐ ঝলকে ঝকমক করতে থাকে আমার ঘরে সুরের রশ্মি! আমি কীর্তনে বুঁদ হই... "জেবনের মায়া বোঝা পীর-সাধকের কাম... পলাশ বাজায় সুরের বাঁশি, গুণ দেবতার দান...জেবনের মায়া বোঝা পীর-সাধকের কাম"... আমার ফিনফিনে দুই পশলা পর্দাও মাথা ঝুঁকিয়ে হাত জোড় করে সাধনায় রত হয়। ঘরটার মননে-বুননে ঐশ্বরিক সুর তোলপাড় তুলে দেয়।

আমার ঘরটা সকালে জেগে উঠলে ও সোনারঙা রমণীকেও হার মানায়। ওকে অন্যরকম লাগে। খুব খুব অন্যরকম।

সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ২:০৭
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালন সাঁইজির আধ্যাতিকতা,পরিচয় ও মানবতাবাদ

লিখেছেন রাবব১৯৭১, ০১ লা এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৪:৪০

লালন সাঁই ছিলেন একজন বাউল সাধক, দার্শনিক ও মানবতাবাদী। তাঁর আধ্যাত্মিকতা মূলত গুরু-শিষ্য পরম্পরা, সাধনা ও অন্তর্জ্ঞানভিত্তিক। তিনি ধর্ম, জাতি, বর্ণভেদ মানতেন না এবং বিশ্বাস করতেন, "মানুষের ওপরে কিছু নাই।"... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ছোট কালের ঈদ।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০১ লা এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৯:০৫



ঈদ মানেই ছিল নতুন জামা, নতুন টাকা আর আনন্দের ঝলক। ছোটবেলার সেই ঈদগুলো এখনো স্মৃতির মণিকোঠায় জ্বলজ্বল করে।



আমার নানা সোনালী ব্যাংকে চাকরি করতেন। আমি তখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

পিটার প্যান সিনড্রোম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০১ লা এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৯:৪২


প্রাপ্তবয়স্ক হয়েও দায়িত্ব নিতে না চাওয়া, বাস্তবতা এড়িয়ে চলা এবং জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত থেকে পালিয়ে যাওয়ার প্রবণতা অনেকের মাঝেই দেখা যায়। তারা শৈশবের মতো স্বাধীন, নিরুদ্বেগ জীবন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপি কি ক্ষমতা কুক্ষিগত করবে না?

লিখেছেন ধূসর সন্ধ্যা, ০১ লা এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১১:২২

ক্ষমতায় আসার পরে বিএনপির আচরণ কেমন হবে?
এই প্রশ্নের উত্তর নিশ্চিত ভাবে দেওয়া সম্ভব না। তবে আমরা কারো আচরণ কেমন হতে পারে সেটা তার অতীত থেকে খানিকটা আন্দান করতে পারি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নারী

লিখেছেন এসো চিন্তা করি, ০২ রা এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১২:৪৭


"নারী "
এ. কে . এম. রেদওয়ানূল হক নাসিফ

মন খারাপ কেন বসে আছো কেন হতাশ
ওহে আজ নারী তুমি ,
কি হয়েছে তোমার এতো , সবসময় ভাবছো কি এতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×