somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছাত্র রাজনীতি ও বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট

১১ ই অক্টোবর, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাঙালী মুসলিম সমাজের দাবীর মুখে ১৯২১ সালের ১লা জুলাই যাত্রা শুরু করে বর্তমান বাংলাদেশের বুকে প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। অসাম্প্রদায়িক গণতন্ত্র সচেতন মধ্যবিত্ত সমাজের জন্মদাত্রী এই পীঠস্থান শতবর্ষ থেকে মাত্র নয়টি কদম দূরে। নার্ভাস নাইন্টিজের ঘরে দাঁড়িয়ে হিসাবের খাতা মিলাতে গিয়ে দৃশ্যমান হয় প্রত্যাশার পারদ তলানি ছুঁই ছুঁই করছে। তার জন্য নিকট অতীতকে দায়ী করাই শ্রেয়।

বহু অযত্ন, অনিয়ম আর অবহেলার ফল বর্তমান পরিস্থিতি বিধায় ইতিহাসকে একেবারে নিষ্কলুষ বলা চলে না। হ্যাঁ, এই প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-শিক্ষকের জাতীয়তাবাদী বিপ্লবী চেতনার প্রাপ্তি- নিজের ভাষা, নিজের দেশ ইতিহাসের ঝুঁলিকে সমৃদ্ধ করেছে বটে। তবে পরিকল্পিত গণতান্ত্রিক চর্চার রূপরেখা কখনোই বাস্তবায়িত হয়নি। শুধু ঢাবি নয়, দেশের প্রতিটি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়েই একই চিত্র উপস্থিত। যার চাক্ষুষ সিদ্ধি প্রতীয়মান হয় আমাদের জাতীয় রাজনীতিতে।

একটি গণতান্ত্রিক দেশের মূলমন্ত্র “জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস”। বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি দেশের ক্ষুদ্র সংস্করণ কল্পনা করলে বলা যায় “শিক্ষার্থীই সকল ক্ষমতার উৎস। বিশ্ববিদ্যালয় এমন একটি স্থান, যেখানে ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের আগামীর জন্য শিক্ষিত করে গড়ে তোলে। আর শিক্ষক ও আনুষাঙ্গিক কর্মচারীদের কাজ শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করা। অর্থাৎ কেন্দ্রবিন্দুতে থাকার কথা ছাত্র সমাজের। বাস্তবচিত্র ঠিক এর উল্টো। এখানে শিক্ষক ও কর্মচারী নির্বাচন থাকলেও অকার্যকর ছাত্র সংসদ। তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ (১৯৭৩) অনুযায়ী সিনেটে পাঁচজন ছাত্র প্রতিনিধি থাকার কথা থাকলেও তা অবর্তমান। ফলে বিশ্ববিদ্যায়ের গুরুত্ব্পূর্ণ সিদ্ধান্তে ছাত্রদের অংশীদারিত্ব থাকে না। সেই অর্থে কার্যত ছাত্র রাজনীতিও অনুপস্থিত। ছাত্র রাজনীতির নামে যা চলে তা মূলত কোন নির্দিষ্ট মতাদর্শের অন্ধ অনুসরণ, বিশেষ নেতৃবৃন্দের পদলেহন, নিজের বা নিজেদের শক্তির মহড়া ছাড়া আর কিছুই নয়। সেখানে শিক্ষার্থীদের স্বার্থসংশ্লিষ্টতার কোন যোগ নেই।

জাতীয় রাজনৈতিক ইস্যুতে ছাত্রদের অনুপ্রবেশ দেখে প্রশ্ন জাগে, তবে কি আমাদের জাতীয় নেতারা ব্যর্থ? কারণ জাতীয় নেতাদের কাজ জাতীয় ইস্যুতে তৎপর থাকা, আর ছাত্র নেতাদের দায়িত্ব নিজেকে সুশিক্ষিত করে ভবিষ্যতের জন্য তৈরী করা। অর্থাৎ শিক্ষা ও বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তাদের সচেতনতাই সমীচীন। মাধ্যমিকের গণ্ডি না পেড়িয়ে উচ্চ মাধ্যমিকে প্রবেশ করা যেমন অসঙ্গত, তেমনি প্রকৃত ছাত্র রাজনীতির চর্চা বিনে জাতীয় রাজনীতির মাঠে বিচরণ সমাজের জন্য বিষময়। সেই সুস্থ ধারার ছাত্র রাজনীতির প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ছাত্র সংসদ।

পরাধীন বাংলাদেশ আর বর্তমান প্রেক্ষাপট ভিন্ন। প্রাক-বাংলাদেশে স্বাধীনতা অর্জনই ছিল মূখ্য। এই স্বাধীন দেশেও যদি স্বাধীনতার পতাকা সমুন্নত রাখতে ছাত্র সমাজকেই প্রচলিত রাজনৈতিক কর্মীত্বের ওজনদার পরিচয় বয়ে বেড়াতে হয়, তবে দেশকে এগিয়ে নিতে আগামীর জন্য নিজেদের যথোপযুক্ত করবে কখন? আর এই ধারা চলতে থাকলে উপহার হিসেবে জাতি পাবে মেধাশূন্য মেরুদণ্ডহীন একদল পাতি নেতা। সেই সুযোগে জাতীয় রাজনীতির কলকাঠি চলে যাবে সুযোসন্ধানী কালো টাকার মালিকদের হাতে। যেই চল এখনো সচল।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই অক্টোবর, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:১১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×