ছবির লোকটি আজ শুধুই ছবি, তার নাম সাহাব উদ্দিন বয়স ৫৫। বাড়ি ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলার মতিগঞ্জ ইউনিয়নে। ভিডিওতে বাড়িটি দেখুন, দোতালা বাড়ি। চাকরি করতেন একটি পেট্রোল পাম্পের ম্যানেজার হিসাবে। দীর্ঘদিনের সংসার জীবনে তার আছে স্ত্রী, তিন ছেলে, তিনি তার চার ভাইকে প্রবাসে পাঠিয়ে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনটি মেয়ে বিয়ে দিয়ে জামাইদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন। নিজেও বহু অর্থসম্পদের মালিক হয়েছেন। টাকা-পয়সা রোজগার করে সারা জীবনের উপার্জন দিয়ে পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের জন্য অনেক কিছু করেছেন। তার এমন মৃত্যু হল। এর চেয়ে হৃদয়বিদারক আর কী হতে পারে? মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করি, কোনো শত্রুকেও যেন তিনি এমন মৃত্যু না দেন। এই মৃত্যু থেকে পৃথিবীর সব মানুষের শিক্ষা নেওয়া উচিত। করোনাভাইরাস মহামারিতে মানবতা যেন আজ থমকে গেছে।
সাহাব উদ্দিন অসুস্থবোধ করায় একা নিজে থানা সদরের হাসপাতালে গিয়ে করোনা পরীক্ষার নমুনা দিয়ে বাড়িতে আসেন। বাড়িতে আসলে বাড়ির সবাই তার সাথে খারাপ ব্যবহার শুরু করেন এবং নিচতালার একটি ঘরে সে ঢুকলে তার পরিবারের লোকেরা বাইরে থেকে ঘরের ছিটকিনি লাগিয়ে দিয়ে দোতালায় চলে যান। এরপর ঘরের ভিতড় হতে বারবার ডাকাডাকি করলেও কেউ সাড়া দেন নাই, এমনকি পরিবারের কেউ খাবার বা পানি পর্যন্ত দেয় নাই। ধারণা করা হয় অসুস্থতা এবং দম বন্ধ হয়ে আতংকে তিনি মারা গেছেন। মারা যাবার পরেও পরিবারের কোনো সদস্য আসেনি, এলাকার চেয়ারম্যান এবং অনান্য মানুষ লাশ বের করে দাফনের ব্যাবস্থা করেন। দাফন দিতেও ঝামেলা, স্থানীয় মসজিদ থেকে খাটিয়া আনতে লোক পাঠালে মসজিদ কমিটির লোকজন দিতে চাননি। তারা তাকে গ্রামে কবর দিতেও বাধা দেন। কবর খোঁড়ার কোদাল এবং গোসলের পর্দাও তারা দিতে চাননি। পরে চেয়রাম্যান গ্রামের লোকদের বুঝিয়ে খাট, পর্দার কাপড় ও কোদাল সংগ্রহ করেন। চেয়ারম্যান নিজের টাকায় কাফনের কাপড় কেনেন।
বর্তমানে তার পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে তালা মেরে অন্য কোথাও গেছেন। এই খুনিদের বিচার কি হবে???????