ডিসক্লেইমার : নিশি নাম দেখেই কেউ লাফিয়ে উঠবেন না, সব মানুষের জীবনেই একজন নিশি থাকে। জীবনের কোন না কোন পর্যায়ে কোন না কোন নিশি সবার জীবনেই আসে। কারও জীবনে থাকে, কারও থাকে না। তবে আমি যে নিশির কথা লিখবো তা অনেকটাই কাল্পনিক। আর নিশি নামটা কারও পেটেন্ট করা নাই। সুতরাং এই নাম ব্যবহারে কোন বাধ্যবাধকতা থাকা উচিৎ না। এত কথা লিখতাম না, লিখলাম এই কারনে যে মানুষ এখন বড়ই অধৈর্য্য হয়ে গেছে। পোস্ট না পড়েই গালি দিতে আসে। এমন ব্লগার পাওয়া মাত্র ব্লক করা হবে। কারণ আমি শুধুমাত্র নিজের বাকস্বাধীনতায় বিশ্বাসী।
নিশির কথামত আগে আগে ড্রয়িং ক্লাসে উপস্থিত হলাম। আমাদের ড্রয়িং ক্লাসগুলো সেকেন্ড হাফে হয়। আমি যেয়ে দেখি নিশি বেন্চে মাথা ঠেকিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে। এই দৃশ্য আমার সহ্য হল না। ঠিক কিভাবে করে ওর ঘুমটা ভাংগালে সবথেকে বেশি মজা পাওয়া যাবে সেই চিন্তা করতে করতে ওর দিকে এগিয়ে গেলাম।
ওর পাশে যেয়ে আস্তে করে বসলাম, ও তখনও রীতিমত নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে। ওর চুলগুলো মুখের উপরে পড়ে আছে। আর যখন নাক ডাকছে তখন চুলগুলো সরে যেয়ে ওর সুন্দর মুখটা আমার কাছে দৃশ্যমান হচ্ছে।
চুলগুলো মুখের উপর থেকে আলতো করে সরিয়ে দিলাম। এরপরে ক্লাসরুম থেকে আস্তে করে বের হয়ে গেলাম।
ডিপার্টমেন্টের নিচে দাড়িয়ে দাড়িয়ে অপেক্ষা করছি আর ভাবছি কেন এত আগে আসলাম। মনে মনে নিজেকে গালি দিচ্ছি। যখনি ঠিক করলাম যে আর কোনদিন এই কাজ করবো না ঠিক তখনি দেখি মোবাইলে একটা কল আসল। মনে হয় নিশির কল। আমি তখন রাগে দাত কিরমির করছি। কলটা ঠাস করে কেটে দিলাম। সাথে সাথে অনাবিল আনন্দে মনটা ভরে গেল।
দাড়িয়ে আছি তো আছিই, সময় যেন আর কাটছে না। ক্লাসেরও সময় হয়ে আসল অথচ কাউকে দেখছি না। হঠাৎ করে মাথায় আসল আজকে তো সেকেন্ড হাফের সব ক্লাস সাসপেন্ড করা হয়েছে। এই কথা কেন আগে মাথায় আসল না। এই দুপুরের রোদ মাথায় নিয়ে আবার রুমে যাওয়া। ওফফফফ...অসহ্য !!!
দুপুরের কাঠফাঁটা রোদ সহ্য করে রুমের দিকে আগাচ্ছি। এমন সময় পিছন থেকে কে জানি- অ্যাঁইইইইই্ বলে ডাক দিল। আমি মনে করলাম- অতিরিক্ত গরমে মনে হয় এমন হচ্ছে। যাকে বলে হ্যালুসিনেশন। আমি পাত্তা না দিয়ে হাটতে থাকলাম। রাস্তাঘাট পুরাপুরাই ফাঁকা। এখন চোখ বন্ধ করে হাটলেও কোন সমস্যা নাই। যেই ডাকুক আমি হাটতেই থাকবো।
হঠাৎ করেই দেখি কে জানি আমার কাঁধে ঠাস করে হাত রাখল। হঠাৎ করে এই শরীরের উপর এই ইমপ্যাক্ট লোডের কারণে আমার পুরা শরীরই কলাপ্স করবে করবে এমন অবস্থা। কোনমতে পিছনে ফিরে দেখি- নিশি কোমড়ে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছে। ওরে ঝাড়ি দিবো না কি করবো কিছু বুঝে উঠার আগেই নিশি শুরু করলো-
নিশি: ক্লাস থেকে চলে আসলা কেন ?!?
আমি: আমি আসলে.... :-& :-& :-& :-&
নিশি: আগে বল চলে আসলা কেনোওওওওওওওও?!?
আমি: তুমি তো ঘুমাচ্ছিলে তাই ডিসটার্ব করি নাই।
নিশি: আমি ঘুমাচ্ছিলাম ?!? আবার বল কি বললা ?!? বল !!!
আমি: বললামই তো, আর কি বলবো।
নিশি: আমি কিন্তু আসলে জেগেই ছিলাম।
আমি: :-& :-& :-& :-&
নিশি: তোমার আনইজি ফিল করার কিছু নাই, আমি ব্যাপারটা এনজয় করেছি।
আমি: আচ্ছা !!!! :-& :-& :-& :-&
নিশি: তুমি আমাকে ডাক দিলেই আমি উঠে পড়তাম। ডাকলে না কেন ?!? :!> :!> :#> :#>
আমি: এমনি এমনিই আরকি, মনে করলাম টায়ার্ড কিনা।
নিশি: টায়ার্ড ছিলাম, এখন ঘুমিয়ে নিয়ে ফ্রেশ লাগছে।
আমি: তুমি না বললা তুমি ঘুমাও নাই ?!?
নিশি: ঘুমাইছি তো, কিন্তু আমার ঘুম অনেক পাতলা তো...ঘুমালেও আশেপাশে কি হচ্ছে বুঝতে পারি।
আমি: আচ্ছা আচ্ছা, গুড !!!
নিশি: এখন চল আমার সাথে !!!
আমি: কোথায় যাবো ?!?
নিশি: আড়ং এ যাবো, একটা শ্যাম্পু কিনবো, ওদের হার্বাল শ্যাম্পুটা অনেক জোসসস্।
আমি: হুমম, ভাল তো।
নিশি: তোমার কি হয়েছে ?!? কথা বলছো না কেন ?!?
আমি:কই কথা বলছি তো, বেশি বেশিই বলছি !!!
নিশি: থাক, এখন না বললেও সমস্যা নাই, পরে বলো। এখন কথা জমিয়ে রাখো !!!
আমি: আচ্ছা।
চলবে....
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে নভেম্বর, ২০১২ বিকাল ৩:৩৩