সে কি এমন জল তুলতে পারে যখন তখন?
বুকের শেওলা পড়া সবুজ ইদারায়?
অথবা ঘুঙুর তোলে মাঝ রাতে বৃষ্টির?
.......
কার কথা বলছ?
তোমার একান্তের নিজেস্ব পুরুষ
যে তোমার ডাল পালা নাড়ে ঝড়ে কিংবা হৈমন্তি বাতাসে..
নির্জন রান্নাঘরে মাংসের নুন দেখে অসম্ভব ব্যস্ততায়।
খসে যাওয়া তারায় বেঁধে দেয় তোমার নিলাম্বরী রাত পোষাক
কে থাকে নতজানু তখন?
বৃষ্টি হয়না বুঝি মাঝরাতে তোমাদের হলুদ রারান্দায়?
............
রোদ্দুরই থাকে বেশিক্ষণ অথবা কালো কালো অমাবশ্যা
মাঝে মাঝে শুধূ বতাসের গোল গোল নিঃশ্বাস
মেঘের আর বিদ্যুতের মৃদংগ বিলাপ
তারপর মাঝরাতে মেঘেদের কোলাহল পতন...
সেদিন সারা রাত বাড়ি ফেরেনা আমার পুরুষ
বৃষ্টিদগ্ধ হতে থাকে সীমানার নীল গেট,বাতাবির পাতা, আর শরীরের লাল নীল হলুদ উপাখ্যান।
তুম কী কর অনাদি তখন?
মাঝরাতে বৃষ্টি এলে?
............
চৌরাছিয়া বাজে আমার দেয়ালে দেয়ালে...
মৃত মা চুপি চুপি শিয়রে বসে আমার কপালে রাখে তার ঠান্ডা হাত।
অন্ধকারে উঠে বসি ...জানালায় টিক টিক করে টিকটিকি
নারকেল পাতা... খোলা তলোয়ার যেন ..চিক চিক করে বিদ্যুৎ ঝলকে
মাথার মধ্যে কিছু একটা ছিঁড়ে যায় তখন
আর গল গল করে বেরোয় রাশি রাশি অন্ধকার...
অন্ধকারে ডুবতে ডুবতে..ডুবতে ডুবতে ডুবতে ডুবতে
হঠাৎ তোমার জ্যোতির্ময় মুখ..
ভেসে ওঠে প্রবাল দ্বীপের মতন অন্ধকারের তলায়..
আমি আকড়ে ধরি
মায়ের মতন মুখ গুঁজে দেই তোমার বুকে
সেই ময়দার গন্ধ, হলুদের গন্ধ আর মায়ের গন্ধ লেগে থাকা
তোমার কোলে মুখ ঘষে বলি ননীর ছেলের মতন ..
চলে যাও কেন? কান্না পায়না বুঝি?
অতঃপর......
আবারো অন্ধকার......
কোন ফাঁকে চলে আসি ৩১৭ লন, রামপুরায়
শ্বেত পাথরে খোদাই করা তোমাদের বাড়ির নাম
আঙ্গুলের ডগায় ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখি
বড় অদ্ভুত নাম রেখেছ বাড়ির ..চন্দ্রালোকে
যেন কাব্যের শান বাধা ঘাট..
রুপশ্রী জোৎস্না ঝুর ঝুর করে ঝরে পরে অবিরাম
তোমার নাভিমূলে, কবঞ্চ বুকে আর পাদপদ্যে
মাঝরাতে ভিজে ভিজে চেয়ে থাকি জানালার শার্সিতে
তোমাদের "চন্দ্রালোকে"
শাড়ির খস খস শব্দ ওঠে নীল সাদা শয্যায়
তুমি জেগে ওঠো, অভ্যাস্ত চোখে একবার দেখে নাও
অধিকার বলে শুয়ে থাকা ,পাশের ঘুমন্ত পুরুষ
"চন্দ্রালোকে" তোমার নিজেস্ব পুরুষ
মাঝরাতে বৃষ্টি এলে যে তোমায় বলেনা কখোনো
কোলে আয় মেয়ে , বৃষ্টিতে ধুয়ে দেই তোর খরতাপ ,কষ্টের...
আমি বলি, অন্ধকারের বৃষ্টিতে নিঃশব্দ চিৎকারে বলি, জোড় হাতে বলি
বুকে আয় বুড়ি জলে আয় তুই ,ভিজে ভিজে খুটে খাই কষ্টের দানা।
..................
তুম অবিচল চেয়ে থাক অন্ধকারে.....গ্রিলের বারান্দায় গাল ছুঁয়ে ।।
আনমনে একবার ছিঁড়ে নাও টবের বাহারী পাতা
আর ডাকাত বৃষ্টি খুব ধীরে গ্রাস করে তোমার আগ্নেয় শরীর
স্মৃতির শিকে বিদ্ধ হতে হতে
তোমারও চোখ বেয়ে নেমে আসে নীলে ভেজা অন্ধকার..
অধরা ...
এমন দৃশ্য দেখে দেখে ঘরে ফিরি আমি রাত শেষে....
নিঃশব্দ বিলাপে একা একা.....
কোনদিন বৃষ্টি এলে মাঝরাতে......