আমাদের সুন্দর শৈশবে এখনো গ্রামের চাষীরা ধানের কিশলয়ে সোনামুখো চুমু খায়;
গোধূলির কোলাহলে বাড়ি ফেরে, কোরাস কণ্ঠে হেমন্তের গান গায়।
আমাদের আনন্দ ছিল, বৈশাখে দল বেঁধে পদ্মাপাড়ে যাওয়া
বিকেলের হলুদ রোদে শুয়ে পড়ে শমশেরীর কবিতাপাঠ, রসজ্ঞ আলোচনা।
আমরা একযোগে খুঁজতাম প্রেম- কবি নজরুল, বেগম আয়েশা,
এবং অবশ্যই আমাদের প্রিয় নিকেতনে
আমাদের নিস্কলুষ আকাঙ্ক্ষায় ঈপ্সিত তরুণীরা মরীচিকা ছিল
আমাদের কচি কচি যুবকেরা স্কুলের সড়কে, বিস্তৃত মাঠে
এখনো তীব্র উল্লাস করে, অশান্ত ছোটাছুটি করে, দৌড়ায়,
মেয়েদের চুল ছুঁয়ে বুঁদ হয় ঘ্রাণে।
এখনো চোখে ভাসে, আমাদের বান্ধবীরা স্কুলের শেষ দিনে
ওড়নায় অশ্রু মোছে, সকরুণ হাত নেড়ে জানাচ্ছে বিদায়।
এসব উদীয়মান যৌবনের ভেতর, হর্ষমুখর সকল আড্ডায়
অতিশয় প্রাণবন্ত ছিলি তুই
তোর কণ্ঠে সতীনাথ, জগন্ময়, তোর কণ্ঠে উঠে আসতো আব্দুল জব্বার
আমরা তোর ভক্ত, বিমুগ্ধ শ্রোতা
চোখ বুজলেই বর্ণিল কৈশোর, হাস্যোজ্জ্বল তুই
অটুট ইচ্ছেয় হাত বাড়াই, আর বার বার তোকে যেন ছুঁই!
ছবির ছেলেটির নাম জাহিদ। সে ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে আর্জেন্টিনায় এক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়।