প্রথম পর্বের লিঙ্কঃ Click This Link
দ্বিতীয় পর্বের লিঙ্কঃ Click This Link
তৃতীয় পর্বের লিঙ্কঃ Click This Link
আগের পর্বে আমাগো টাইম মেশিন আগাইসিল ১৭৮৩ সাল পর্যন্ত। উড়তে শিখার ইতিহাসে এই সাল ডা খুবি ঘটনাবহুল, কারন এই বছরেরই ২১শে নভেম্বর মন্টগলফিয়ার ভাইরা পরথম মানুষবাহি হট এয়ার বেলুন আসমানে উড়াইসেন আবার তার কয়দিন পরেই ১লা ডিসেম্বর জেকুয়েস চার্লস উড়াইসেন মানুষবাহি হাইড্রোজেন বেলুন। লুকজন ভাবসিল এক বছরের জন্য উত্তেজনা বহুত হইসে। কিন্তু না, আরো মজা বাকি আসিল।
মণ্টগলফিয়ার ভাইবেরাদার আর জেকুয়েস চার্লস যহন উপড়ে উডনের তেলেস্মাতি নিয়া চিন্তা কইরা বাংলা চুল,হিন্দি চুল সব সাদা কইরা লাইতাসিলেন, তহন লুইস সেবেসটিয়েন লেনোমান্ড (Louis-Sébastien Lenormand) নামে এক ফরাসি ফিজিসিস্ট ব্যাডায় ভাবলেন, উপড়ে তো উডুম, কিন্তু নাইম্মা আসুম ক্যাম্নে? গাছে উডায়া মই কারনের লুক তো যুগে যুগে সব দেশেই আসিল । তাই উনি করলেন কি দুইডা মডিফাইড ছাতা লয়া একটা গাছ থিকা দিলেন লাফ। দেখলেন, আইসসালা, স্লো মোশন এ নাইমা আইলাম দেহি। এইডা তো ভালা জিনিস বাইর করসি। এইডারে এইবার পাব্লিক এর কাসে প্রেজেন্ট করতে হইব।
ডিসেম্বর ২৬, ১৭৮৩, মন্টপিলিয়ার অব্জারভেটরির নিচে অনেক লুকজন জমা হইসে। ভীড় এর মদ্যে মন্টগলফিয়ার ভাইবেরাদর দের একজন জোসেফ মন্টগলফিয়ারও আসিলেন। ব্যাক্তে চায়া রইসে উপ্রের দিকে। এক পাগ্লা বেডায় কি জানি দেহাইব। এই পাগলা বেডায় ওই কি জানি জিনিষটার নাম দিসে “প্যারাশুট”; প্যারাশুট শব্দডা আবার হেই ব্যাডায় বানাইসে একটা গ্রিক আর একটা ফ্রেঞ্চ শব্দ থিকা। গ্রিক শব্দ para মানে Against. আমগো দেশে অবশ্য পেরা মানে অন্য কিছু, কিন্তু হেই দিকে না যাই, গেলে পেরা খাইবেন। যাউকগা, ফ্রেঞ্চ chute মানে হইল fall করা । একুনে প্যারাশুট মানে দারাইল গিয়া কিসুর against এ fall করা।
তো সেই মহান পাগলা ব্যাডা, যার নাম লুইস সেবেসটিয়েন লেনোমান্ড (Louis-Sébastien Lenormand), তার বানানি ১৪ফিট এর প্যারাশুট লয়া, মন্টপিলিয়ার অব্জারভেটরির উপ্রেত্তে দিলেন এক মহান লাফ। আর নিরাপদে নাইমা আইলেন মাডিতে। দুনিয়া দেখল প্যারাশুট কি জিনিস। লুইস সেবেসটিয়েন লেনোমান্ড পরে তার এক জার্নালে লিখা গেসেন, তিনি এইডা বানাইসিলেন যাতে আগুন লাগ্লে মানুষ নিরাপদে বিল্ডিং থিকা বাইর হইয়া আইতে পারে। আমগো দেশের গারমেন্স মালিক গো তো গ্রিল চিকেন খুব পছন্দ, হেরা এই ধরনের বিকল্প ফায়ার এস্কেপ রাখতে পারেন কিনা ভাইবা দেখতে পারেন।
১৭৮৩ সাল তো গেল হেবি কাহিনি কইরা। ১৭৮৪ সাল এ আইসা দুনিয়ার মানুষ পাইল প্রথম মহিলা আকাশচারি এলিজাবেথ থিবল (Élisabeth Thible)আপা রে। কাজী নজরুল ইসলাম তো আর হুদাই কয়া যায় নাই যে চিরকল্যানকর এর অর্ধেক নারীরাই করসেন। তয় এই এলিজাবেথ থিবল আফার কাহিনিডা এট্টূ মজার।
এলিজাবেথ থিবল আফায় আসিলেন একজন ফরাসি অপেরা গায়িকা। উনার কপাল ডা হেবি লাকি আসিল। প্রথম মহিলা আকাশচারী হউনের চান্সটাও ইনি পায়া যান লাকিলি।
ফ্রান্স এ হঠাত খবর আইল যে সুইডেন এর রাজা , তিন লম্বর গুস্তভ (Gustav III of Sweden) ফ্রান্সের লিয়ন শহরে হাওয়া এবং খাওয়া দুইডাই উপভোগ করতে আইবেন। ফ্রান্স এর রাজা আসিলেন তহন ষোল লম্বর লুইস (King Louis XVI) । তিনি আদেশ দিলেন যে রাজা গুস্তভ রে সম্মান দেহানির লাইগা তার নামে একটা বেলুন বানানি হোক আর ফ্রান্স এর দুইজন হেই বেলুনে উইঠা রাজার সামনে তামশা দেখাক। তাই ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খাউরা রাজার আদেশে মন্টগলফিয়ার ভাইরা লা গুস্তাভ (La Gustave) নামে একটা বেলুন বানায়া লাইলেন।
মন্টগলফিয়ার ভাই রা বেলুন উরানির পর বেক্তেই চাইত, আম্মো বেলুন লয়া আকাশে উড়বাম। তাই তহনকার জনৈক কর্তৃপক্ষ একটা সাবস্ক্রিপশন লিস্ট বানাইসিলেন যেহানে এক লম্বর দুই লম্বর এরুম সিরিয়াল আসিল যে কার পরে কেডায় বেলুনে উঠব। ঠিক হইসিল “লা গুস্তাভ” বেলুন এ উঠবেন কাউন্ট লাউরেঞ্চিন (Count Jean-Baptiste de Laurencin) আর তার পাইলট থাকবেন জনাব থুক্কু “মশিয়ে” ফ্লোরেন্ট।
কিন্তু কাউন্ট ভাইজান এর আগেরবার বেলুনে উইঠা হেবি প্যারা দিসিলেন আর ওই বেলুন্ডা ক্র্যাশ ও করসিল, যদিও কেউ মরে টরে নাই। তাই এইবার বেলুনের পাইলট ফ্লোরেন্ট কইলেন, না ওই কাউন্ট হালারে নিমু না। এর চেয়ে লিস্ট এ থাকা সুন্দরি অপেরা গায়িকা এলিজাবেথ থিবল রে চাই। বেলুনের পাইলট হইসি বইলা কি সাধ আল্লাদ নাই জীবনে।
ফরাসি রাজা বেলুনের পাইলট ফ্লোরেন্ট এর কথা হুনলেন। আর কাউন্ট এর জায়গায় বেলুনে উঠলেন এলিজাবেথ থিবল। ইতিহাস বলে, এই সময় উনার পরনে আসিলে লেস অলা ড্রেস আর পালক অলা টুপি। এলিজাবেথ থিবল সাজসিলেন রোমান দেবি মিনারভা এর মত। বেলুনে উড়া অবস্থায় তিনি দুইডা অপেরার গান গাইসিলেন ফ্রেঞ্চ অপেরা “লা বেলে আরসিন” (La belle Arsène) থিকা । গানগুন গাইতে গাইতে “লা গুস্তাভ” বেলুন , এলিজাবেথ থিবল আর ফ্লোরেন্ট রে লয়া, ৪৫ মিনিটে ১৫০০ মিটার উচ্চতায় চাইর কিলোমিটার পথ পারি দিসিল। বেলুন মাটিতে অবতরনের সময় এলিজাবেথ আফার পাও ইট্টূ মচকায় গেসিল । এছাড়া মুটামুটি সফল ভাবেই শেষ হইসিল দুনিয়ার প্রথম আকাশচারী মহিলার ফ্লাইট । তালি দেন।
এই পর্বে আমি আরো একজন বেলুন পাগলা লুক জ্য পিয়ারে ব্লেঞ্চারড (Jean-Pierre_Blanchard) আর তার বউ (Sophie_Blanchard)রে নিয়া লিখুম ভাবসিলাম। কিন্তু উনারা একটা পুরা পর্ব ডিসারভ করেন। তাই ইনশাল্লাহ আগামি পর্বে তাগো লয়া লিখুম। আপ্নেরা গুগুল আর ইউটিউব কইরা তাগো বেপারে এট্টূ পড়ালেখা কইরা রাখতারেন যদি মুনে চায়। তাইলে পরে আমার লেখাডা পড়লে আরো ভালা মত বুঝবেন। আমি কোন ভুল করলে কানে ধইরা ভুল ধরায়াও দিতে পারবেন।
আসা করি আমি লিখা যেরুম মজা পাইতাসি আপ্নেরা পইড়াও অইরম মজা পাইতাসেন। লেখা সম্পর্কে যে কোন মতামত পড়ের লেখা গুলা রে আরো ভাল করতে আমারে সাহায্য করবে। এতক্ষণ কষ্ট কইরা পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আপনাদের উড়তে শেখা শুভ হোক।
এই পর্বের তথ্য সুত্রঃ
Parachute guy Louis-Sébastien Lenormand
Click This Link
First women in the sky
http://en.wikipedia.org/wiki/Elizabeth_Thible
Click This Link
http://en.wikipedia.org/wiki/Minerva
Click This Link