নিজেকে খুব মোটামুটি ধর্মপ্রাণ বলা যেতে পারে, মাঝে মাঝে নামাজ পড়ি, একেবারে না পড়লে জুমার দিনে সব ওয়াক্ত পড়া হয়; রোজা সবগুলোই রাখার চেষ্টা করি।
বছর দুই তিন আগেও রোজার মাসে নিয়মিত তারবীহ পড়ার চেষ্টা করেছি, সুরা তারাবী হলে ও। খুব ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফিরেও পড়েছি। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ তো অবশ্যই। রোজার মাসে সত্যিকার অর্থেই একধরনের প্রশান্তি কাজ করতো।ধর্মের সবগুলো রীতি আমার পক্ষে মানা সম্ভবপর হয় না হয়তো, যা মানি মন দিয়েই মানি।
এই রমজান মাসে একটা রোজা ভাঙা ছাড়া (রক্তক্ষরণের ফলে) সবগুলোই রেখেছি, কিন্তু কেন জানি সেই আবেগটা আর টের পাচ্ছি না। তারাবীহ প্রায় পড়াই হয়নি, আচ্ছা যাহোক – অন্যান্য ওয়াক্তের নামাজগুলোও বাদ যাচ্ছে।

আর লাগছে ক্লান্তি –সীমাহীন। সাধারণত রমজান মাসে আমার কাজকর্মে বেশ সুবিধা হয়, গুছিয়ে টানা কাজ করা যায় – মাঝখানে খাওয়া দাওয়ার ঝামেলা নাই। এইবার ডিজি টাইমের ঠেলায় পড়ে খালি ঝিমাই । রাত ১টা-৪টা , ভোর ৬টা-৮ টা ঘুমিয়ে আর কতদিন ।

প্রায় দিনই কিচ্ছু ভালো লাগে না। বই পড়তে ইচ্ছা করে না ,লিখতে ও না , গান শুনতেও না , কারো সাথে যোগাযোগ করতে ও না ,ঘুমাতেও না, মুভি দেখতেও না, এমনকি খেতে ও না। আবার যে খারাপ লাগে তাও বলবো না।
ঈদের ব্যাপারেও কোন আবেগ টের পাচ্ছি না। ভাইদের জন্য কিছু কিছু কিনেছি,এম্নিতেই আম্মু চরম মার্কেট বিমুখ,আমার মতই , উনি অসুস্থ , বাসায় আরেকজনকে নিয়ে ও হাসপাতালে টানাটানি; তাই এবার সাধারণ কেনাকাটা ও বাদ।আর নিজের জন্য কেনার কিছু খুঁজে পাই না। এক পাঞ্জাবী দিয়ে সাড়ে পাঁচটা ঈদ চলে গেলো, এইবার ছয় নাম্বার।
বুঝতে পারছি না, গত একমাসের চলমান হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে দৌড়াদৌড়ি, না ইদানীংকার অবিশ্রান্ত জীবনযাপনের ক্লান্তি সব আবেগকে ঢেকে রেখেছে? আমাকে না হয় তাই, কিন্তু বন্ধুদের কলিগদের কাছেও শুনি একই অবস্থা। বয়স হচ্ছে আর ধীরে ধীরে এরকম হচ্ছিইবা কেন?
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১২:৪৭