সবুজের সারি সারি দেয়াল, আলো-ছায়ায় ঘেরা এই ক্যম্পাস, প্রথম দেখাতেই ভালো লেগে যায়. ক্যম্পাস-এর গেট দিয়ে ঢুকলেই মনে হয় "মায়ের কোলে উঠলাম". আমার মত অজস্র ছাত্র-ছাত্রীর প্রিয় জাহাঙ্গীরনগর বিশবিদ্যালয়. ২০০৮ সালের কথা, তখন আমি প্রথম বর্ষের ছাত্র. ডেইরি গেট দিয়ে ঢুকার পথে দেখলাম কয়েকটা গাছে cross চিহ্ন দেয়া. কিছুক্ষণ-এর মধ্যে জেনে গেলাম cross চিহ্ন দেয়া গাছগুলো কেটে ফেলা হবে !!!
ব্যস, সেই রাত থেকে শুরু হয়ে গেল গাছ কাটার প্রতিবাদ. হলে হলে চলল ব্যান্যার, ফেস্টুন লেখার যুদ্ধ. সকাল হতেনা হতেই register ভবনের সামনে জড়ো হলো সবাই. দেখতেনা দেখতেই বিশাল এক মানব বন্ধন তৈরী হয়ে গেল. সাংবাদিকরা এলো, বিভিন্নি টিভি চান্যেল-এর লোক এলো, আমাদের মনে সাহস বাড়লো, গাছগুলোকে আমরা মনে হয় রক্ষা করতে পারব. অবশেষে আমরা বিজীয় হলাম, সেই যাত্রায় গাছগুলা বেচে গেল.
অনেকদিন পার হয়ে গেল. অনেক কিছু ঘটে গেল, নতুন VC এলো. সবাই গাছ কাটার কথা ভুলে গেল. ২০১০ সালের summer vacation শেষ করে আমরা যখন হলে ফিরলাম, অবাক হয়ে তাকিয়ে রই ক্ষত-বিক্ষত প্রিয় ক্যম্পাস-এর দিকে. গাছ খেকো প্রশাসন নির্বিচারে গাছ কেটেছে. summer vacation-এ ক্যম্পাস প্রায় ১ মাস বন্ধ থাকে. ছাত্র ছাত্রী-রা সবাই তখন বাসায় যায়. এই ফাকে আমাদের সম্মানীয় কিছু শিক্ষকগণ এই কার্য-সমাধা করেছে !!! [গাছ বিক্রি করে ভালই "অর্থ উপার্জন" করেছেন ওই অর্থ পিপাসু শিক্ষকরা. এইসব শিক্ষকদের কাছ থেকে আমরা কি শিক্ষা লাভ করব? ]
আসছে June মাস, আমাদের ক্যম্পাসে আবার summer vacation -এর বন্ধ হবে. এইবার কি হবে ? আবারও কি গাছ-খেকো-দের আবির্ভাব হবে? অবশিষ্ট যা গাছ আছে তা কি আবার গাছ খেকো-দের খাবার হবে?
অনেক কষ্ট হয় যখন কেটে ফেলা গাছের গুড়ি গুলো দেখি. নিজেকে তখন অপরাধীর মত মনে হয়. আমরা পারিনি গাছগুলো রক্ষা করতে.
অনেক শিক্ষক আমাদের পাশে এসে দাড়িয়েছেন, প্রতিবাদ করেছেন গাছ কাটার. লাভ হয়নি. মুষ্টিমেয় কিছু শিক্ষকের কাছে আমরা জিম্ম্মি !!!
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মে, ২০১১ বিকাল ৩:০৩