somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হেলাল হাফিজ : যে জলে তাঁর আগুন জ্বলে

০৯ ই নভেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


হেলাল হাফিজ কবিতার জগতে তাঁর বিচরন বেশি নয় । মাত্র একটি কবিতার গ্রন্থই বেড়িয়েছে তাঁর আজ অবধি । অথচ কী আশ্চর্য এই একটি মাত্র কবিতার বই দিয়েই তিনি আজও কতটা জনপ্রিয় তা বোঝানো সম্ভব নয় , বরং তাঁর কবিতার পাঠক প্রিয়তা দিনদিন বাড়ছেই । কারন হিসেবে বলা যায় তিনি মানুষের জীবন ঘনিষ্ঠ সুখ দুঃখের বিবরন দিয়েছেন কবিতার প্রতিটি লাইনে আর আমরা যখন সেই কবিতা পড়ি তখন চমকে উঠে খেয়াল করি , আরে ! এ কবিতা তো আমার কথা বলছে । তাঁর কবিতা পড়লে চোখের সামনে উঠে আসে একলা পথ আর একলা মানুষের মুখচ্ছবি যে মানুষটি দুঃখের শৃঙ্খল পায়ে জড়িয়ে চলছে তো চলছেই অজানা কোন লক্ষ্যহীন লক্ষ্যে । দুঃখের আরেক নাম যেন হেলাল হাফিজ । তাই বলে তিনি শুধু বিরহেরই কবি নন তাঁর কবিতায় শুধু দুঃখবোধে জমানো জাপিত জীবন উঠে আসেনি বরং আশির দশকের স্বৈরাচার বিরোধী প্রতিবাদী কন্ঠস্বর হয়ে দাড়িয়েছিল তাঁর কবিতা । হেলাল হাফিজ যে দুঃখের বসতি গড়েছিলেন কবিতার খাতায় সেই খাতায় দুঃখটাই স্হায়ী আবাস গড়ে নিলো , কবিতাকে বিদায় জানিয়ে তিনি হয়ে গেলেন ফেরারি সেই কবি কবিতার ঘরছাড়া । ভাল লাগার হেলাল হাফিজ , ভালবাসার হেলাল হাফিজ , এখন তুমি কোথায় আছো কেমন আছো । প্রিয় কবি , ভাল থাকবেন । এখানে এক পাতায় যে জলে আগুন জ্বলে কাব্যগ্রন্হের ৫৬ টি কবিতাই সংকলিত হ'ল ।





..................................................

১. অগ্ন্যুৎসব

ছিল তা এক অগ্ন্যুৎসব, সেদিন আমি
সবটুকু বুক রেখেছিলাম স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্রে
জীবন বাজি ধরেছিলাম প্রেমের নামে
রক্ত ঋণে স্বদেশ হলো,
তোমার দিকে চোখ ছিলো না
জন্মভূমি সেদিন তোমার সতীন ছিলো।

আজকে আবার জীবন আমার ভিন্ন স্বপ্নে অংকুরিত অগ্ন্যুৎসবে
তোমাকে চায় শুধুই তোমায়।

রঙিন শাড়ির হলুদ পাড়ে ঋতুর প্লাবন নষ্ট করে
ভর দুপুরে শুধুই কেন হাত বেঁধেছো বুক ঢেকেছো
যুঁই চামেলী বেলীর মালায়,
আমার বুকে সেদিন যেমন আগুন ছিলো
ভিন্নভাবে জ্বলছে আজও,
তবু সবই ব্যর্থ হবে
তুমি কেবল যুঁই চামেলী বেলী ফুলেই মগ্ন হলে।

তার চেয়ে আজ এসো দু’জন জাহিদুরের গানের মতন
হৃদয় দিয়ে বোশেখ ডাকি, দু’জীবনেই বোশেখ আনি।
জানো হেলেন, আগুন দিয়ে হোলি খেলায় দারুন আরাম
খেলবো দু’জন এই শপথে
এসো স্ব-কাল শুদ্ধ করি দুর্বিনীত যৌবনেরে।

৮.১২.৭২

২. অনির্ণীত নারী

নারী কি নদীর মতো
নারী কি পুতুল,
নারী কি নীড়ের নাম
টবে ভুল ফুল।

নারী কি বৃক্ষ কোনো
না কোমল শিলা,
নারী কি চৈত্রের চিতা
নিমীলিত নীলা।

১৫.৬.৮০

৩. অন্যরকম সংসার

এই তো আবার যুদ্ধে যাবার সময় এলো
আবার আমার যুদ্ধে খেলার সময় হলো
এবার রানা তোমায় নিয়ে আবার আমি যুদ্ধে যাবো
এবার যুদ্ধে জয়ী হলে গোলাপ বাগান তৈরী হবে।

হয় তো দু’জন হারিয়ে যাবো ফুরিয়ে যাবো
তবুও আমি যুদ্ধে যাবো তবু তোমায় যুদ্ধে নেবো
অন্যরকম সংসারেতে গোলাপ বাগান তৈরী করে
হারিয়ে যাবো আমরা দু’জন ফুরিয়ে যাবো।

স্বদেশ জুড়ে গোলাপ বাগান তৈরী করে
লাল গোলাপে রক্ত রেখে গোলাপ কাঁটায় আগুন রেখে
আমরা দু’জন হয় তো রানা মিশেই যাবো মাটির সাথে।

মাটির সথে মিশে গিয়ে জৈবসারে গাছ বাড়াবো
ফুল ফোটাবো, গোলাপ গোলাপ স্বদেশ হবে
তোমার আমার জৈবসারে। তুমি আমি থাকবো তখন
অনেক দূরে অন্ধকারে, অন্যরকম সংসারেতে।

২০.১২.৭৩

৪. অমিমাংসিত সন্ধি

তোমাকে শুধু তোমাকে চাই, পাবো?
পাই বা না পাই এক জীবনে তোমার কাছেই যাবো।

ইচ্ছে হলে দেখতে দিও, দেখো
হাত বাড়িয়ে হাত চেয়েছি রাখতে দিও, রেখো

অপূণতায় নষ্টে-কষ্টে গেলো
এতোটা কাল, আজকে যদি মাতাল জোয়ার এলো
এসো দু’জন প্লাবিত হই প্রেমে
নিরাভরণ সখ্য হবে যুগল-স্নানে নেমে।

থাকবো ব্যাকুল শর্তবিহীন নত
পরস্পরের বুকের কাছে মুগ্ধ অভিভূত।

১০.৩.৮২

৫. অশ্লীল সভ্যতা

নিউট্রন বোমা বোঝ
মানুষ বোঝ না !

২৮.৬.৮০

৬. অস্ত্র সমর্পণ

মারণাস্ত্র মনে রেখো ভালোবাসা তোমার আমার।
নয় মাস বন্ধু বলে জেনেছি তোমাকে, কেবল তোমাকে।
বিরোধী নিধন শেষে কতোদিন অকারণে
তাঁবুর ভেতরে ঢুকে দেখেছি তোমাকে বারবার কতোবার।

মনে আছে, আমার জ্বালার বুক
তোমার কঠিন বুকে লাগাতেই গর্জে উঠে তুমি
বিস্ফোরণে প্রকম্পিত করতে আকাশ, আমাদের ভালবাসা
মুহূর্তেই লুফে নিত অত্যাচারী শত্রুর নি:শ্বাস।

মনে পড়ে তোমার কঠিন নলে তন্দ্রাতুর কপালের
মধ্যভাগ রেখে, বুকে রেখে হাত
কেটে গেছে আমাদের জঙ্গলের কতো কালো রাত!
মনে আছে, মনে রেখো
আমাদের সেই সব প্রেম-ইতিহাস।

অথচ তোমাকে আজ সেই আমি কারাগারে
সমর্পণ করে, ফিরে যাচ্ছি ঘরে
মানুষকে ভালোবাসা ভালোবাসি বলে।

যদি কোনোদিন আসে আবার দুর্দিন,
যেদিন ফুরাবে প্রেম অথবা হবে না প্রেম মানুষে মানুষে
ভেঙে সেই কালো কারাগার
আবার প্রণয় হবে মারণাস্ত্র তোমার আমার।

১৫.২.৭২

৭. অহংকার

বুকের সীমান্ত বন্ধ তুমিই করেছো
খুলে রেখেছিলাম অর্গল,
আমার যুগল চোখে ছিলো মানবিক খেলা
তুমি শুধু দেখেছো অনল।

তুমি এসেছিলে কাছে, দূরেও গিয়েছো যেচে
ফ্রিজ শটে স্থির হয়ে আছি,
তুমি দিয়েছিলে কথা, অপারগতার ব্যথা
সব কিছু বুকে নিয়ে বাঁচি।

উথাল পাথাল করে সব কিছু ছুঁয়ে যাই
কোনো কিছু ছোঁয় না আমাকে,
তোলপাড় নিজে তুলে নিদারুণ খেলাচ্ছলে
দিয়ে যাই বিজয় তোমাকে।

১৩.১০.৮০

৮. আমার কী এসে যাবে

আমি কি নিজেই কোন দূর দ্বীপবাসী এক আলাদা মানুষ?
নাকি বাধ্যতামূলক আজ আমার প্রস্থান,
তবে কি বিজয়ী হবে সভ্যতার অশ্লীল স্লোগান?

আমি তো গিয়েছি জেনে প্রণয়ের দারুণ আকালে
নীল নীল বনভূমি ভেতরে জন্মালে
কেউ কেউ চলে যায়, চলে যেতে হয়
অবলীলাক্রমে কেউ বেছে নেয় পৃথক প্লাবন,
কেউ কেউ এইভাবে চলে যায় বুকে নিয়ে ব্যাকুল আগুন।

আমার কী এসে যাবে, কিছু মৌল ব্যবধান ভালোবেসে
জীবন উড়ালে একা প্রিয়তম দ্বীপের উদ্দেশ্যে।

নষ্ট লগ্ন গেলে তুমিই তো দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে
সুকঠিন কংক্রিটে জীবনের বাকি পথ হেঁটে যেতে যেতে
বারবার থেমে যাবে জানি
‘আমি’ ভেবে একে-তাকে দেখে।
তুমিই তো অসময়ে অন্ধকারে
অন্তরের আরতির ঘৃতের আগুনে পুড়বে নির্জনে।

আমাকে পাবে না খুঁজে, কেঁদে-কেটে, মামুলী ফাল্‌গুনে।

৪.৮.৮০

৯. আমার সকল আয়োজন

আমাকে দুঃখের শ্লোক কে শোনাবে?
কে দেখাবে আমাকে দুঃখের চিহ্ন কী এমন,
দুঃখ তো আমার সেই জন্ম থেকে জীবনের
একমাত্র মৌলিক কাহিনী।

আমার শৈশব বলে কিছু নেই
আমার কৈশোর বলে কিছু নেই,
আছে শুধু বিষাদের গহীন বিস্তার।
দুঃখ তো আমার হাত–হাতের আঙুন–আঙুলের নখ
দুঃখের নিখুঁত চিত্র এ কবির আপাদমস্তক।

আমার দুঃখ আছে কিন্তু আমি দুখী নই,
দুঃখ তো সুখের মতো নীচ নয়, যে আমাকে দুঃখ দেবে।
আমার একেকটি দুঃখ একেকটি দেশলাই কাঠির মতন,
অবয়ব সাজিয়েছে ভয়ঙ্কর সুন্দরের কালো কালো অগ্নিতিলকে,
পাঁজরের নাম করে ওসব সংগোপনে
সাজিয়ে রেখেছি আমি সেফ্‌টি-ম্যাচের মতো বুকে।

৯.২.৭৪

১০. ইচ্ছে ছিলো

ইচ্ছে ছিলো তোমাকে সম্রাজ্ঞী করে সাম্রাজ্য বাড়াবো
ইচ্ছে ছিলো তোমাকেই সুখের পতাকা করে
শান্তির কপোত করে হৃদয়ে উড়াবো।

ইচ্ছে ছিলো সুনিপূণ মেকআপ-ম্যানের মতো
সূর্যালোকে কেবল সাজাবো তিমিরের সারাবেলা
পৌরুষের প্রেম দিয়ে তোমাকে বাজাবো, আহা তুমুল বাজাবো।

ইচ্ছে ছিলো নদীর বক্ষ থেকে জলে জলে শব্দ তুলে
রাখবো তোমার লাজুক চঞ্চুতে,
জন্মাবধি আমার শীতল চোখ
তাপ নেবে তোমার দু’চোখে।

ইচ্ছে ছিল রাজা হবো
তোমাকে সাম্রাজ্ঞী করে সাম্রাজ্য বাড়াবো,
আজ দেখি রাজ্য আছে
রাজা আছে
ইচ্ছে আছে,
শুধু তুমি অন্য ঘরে।

৭.২.৭৩

১১. ইদানিং জীবন যাপন

আমার কষ্টেরা বেশ ভালোই আছেন,
প্রাত্যহিক সব কাজ ঠিক-ঠাক করে চলেছেন
খাচ্ছেন-দাচ্ছেন, অফিসে যাচ্ছেন,
প্রেসক্লাবে আড্ডাও দিচ্ছেন।

মাঝে মাঝে কষ্টেরা আমার
সারাটা বিকেল বসে দেখেন মৌসুমী খেলা,
গোল স্টেডিয়াম যেন হয়ে যায় নিজেই কবিতা।

আজকাল আমার কষ্টেরা বেশ ভালোই থাকেন,
অঙ্কুরোদ্‌গম প্রিয় এলোমেলো যুবকের
অতৃপ্ত মানুষের শুশ্রূষা করেন। বিরোধী দলের ভুল
মিছিলের শোভা দেখে হাসেন তুমুল,
ক্লান্তিতে গভীর রাতে ঘরহীন ঘরেও ফেরেন,
নির্জন নগরে তারা কতিপয় নাগরিক যেন
কতো কথোপকথনে কাটান বাকিটা রাত,
অবশেষে কিশোরীর বুকের মতন সাদা ভোরবেলা
অধিক ক্লান্তিতে সব ঘুমিয়ে পড়েন।

আমার কষ্টেরা বেশ ভালোই আছেন, মোটামুটি সুখেই আছেন।
প্রিয় দেশবাসী;
আপনারা কেমন আছেন?

২.১০.৮০

১২. উপসংহার

আমার যত শুভ্রতা সব দেবো,
আমি নিপুণ ব্লটিং পেপার
সব কালিমা, সকল ব্যথা ক্ষত শুষেই নেবো।

২৪.৭.৮০

১৩. উৎসর্গ

আমার কবিতা আমি দিয়ে যাবো
আপনাকে, তোমাকে ও তোকে।

কবিতা কি কেবল শব্দের মেলা, সংগীতের লীলা?
কবিতা কি ছেলেখেলা, অবহেলা রঙিন বেলুন?
কবিতা কি নোটবই, টু-ইন-ওয়ান, অভিজাত মহিলা -সেলুন?

কবিতা তো অবিকল মানুষের মতো
চোখ-মুখ-মন আছে, সেও বিবেক শাসিত,
তারও আছে বিরহে পুষ্পিত কিছু লাল নীল ক্ষত।

কবিতা তো রূপান্তরিত শিলা, গবেষণাগারে নিয়ে
খুলে দেখো তার সব অণু-পরমাণু জুড়ে
কেবলি জড়িয়ে আছে মানুষের মৌলিক কাহিনী।
মানুষের মতো সেও সভ্যতার চাষাবাদ করে,
সেও চায় শিল্প আর স্লোগানের শৈল্পিক মিলন,
তার তা ভূমিকা চায় যতোটুকু যার উৎপাদন।

কবিতা তো কেঁদে ওঠে মানুষের যে কোনো অ-সুখে,
নষ্ট সময় এলে উঠানে দাঁড়িয়ে বলে,–
পথিক এ পথে নয়
‘ভালোবাসা এই পথে গেছে’।

আমার কবিতা আমি দিয়ে যাবো
আপনাকে, তোমাকে ও তোকে।

১৭.৩.৮১

১৪. একটি পতাকা পেলে

কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে
আমি আর লিখবো না বেদনার অঙ্কুরিত কষ্টের কবিতা

কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে
ভজন গায়িকা সেই সন্ন্যাসিনী সবিতা মিস্ট্রেস
ব্যর্থ চল্লিশে বসে বলবেন,–’পেয়েছি, পেয়েছি’।

কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে
পাতা কুড়োনির মেয়ে শীতের সকালে
ওম নেবে জাতীয় সংগীত শুনে পাতার মর্মরে।

কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে
ভূমিহীন মনুমিয়া গাইবে তৃপ্তির গান জ্যৈষ্ঠে-বোশেখে,
বাঁচবে যুদ্ধের শিশু সসন্মানে সাদা দুতে-ভাতে।

কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে
আমাদের সব দুঃখ জমা দেবো যৌথ-খামারে,
সম্মিলিত বৈজ্ঞানিক চাষাবাদে সমান সুখের ভাগ
সকলেই নিয়ে যাবো নিজের সংসারে।

১৩.১২.৮০

১৫. কবি ও কবিতা

কবির জীবন খেয়ে জীবন ধারণ করে
কবিতা এমন এক পিতৃঘাতী শব্দের শরীর,
কবি তবু সযত্নে কবিতাকে লালন করেন,
যেমন যত্নে রাখে তীর
জেনে-শুনে সব জল ভয়াল নদীর।

সর্বভূক এ কবিতা কবির প্রভাত খায়
দুপুর সন্ধ্যা খায়, অবশেষে
নিশীথে তাকায় যেন বয়ঃসন্ধিকালের কিশোরী,
কবিকে মাতাল করে
শুরু হয় চারু তোলপাড়,
যেন এক নির্জন বনের কোনো হরিণের লন্ডভন্ড খেলা
নিজেরই ভিতরে নিয়ে সুবাসের শুদ্ধ কস্তুরী।

কবির কষ্ট দিয়ে কবিতা পুষ্ট হয়
উজ্জ্বলতা বাড়ায় বিবেক,
মানুষের নামে বাড়ে কবিতার পরমায়ু
অমরতা উভয়ের অনুগত হয়।

১০.২.৮১

১৬. কবিতার কসম খেলাম

আমি আর আহত হবো না,
কোনো কিছুতেই আমি শুধু আর আহত হবো না।

যে নদী জলের ভারে হারাতো প্লাবনে
এখন শ্রাবণে সেই জলের নদীর বুকে
জলাভাবে হাহাকার দেখে আমি আহত হবো না।

সবুজ সবুজ মাঠ চিরে চিরে
কৃষকের রাখালের পায়ে গড়া দু’পায়া পথের বুকে
আজ সেই সরল সুন্দর সব মানুষের চিতা দেখে
আহত হবো না, আর শুধু আহত হবো না।

বৃক্ষ হারালে তার সবুজ পিরান, মৃত্তিকার ফুরালে সুঘ্রাণ,
কষ্টের ইস্কুল হলে পুষ্পিত বাগান, আমি আহত হবো না।

পাখি যদি না দেয় উড়াল, না পোড়ে আগুন,
অদ্ভুত বন্ধ্যা হলে উর্বরা ফাগুন, আমি আহত হবো না।

মানুষ না বোঝে যদি আরেক মানুষ
আমি আহত হবো না, আহত হবো না।
কবিতার কসম খেলাম আমি শোধ নেবো সুদে ও আসলে,
এবার নিহত হবো
ওসবের কোনো কিছুতেই তবু শুধু আর আহত হবো না।

১৭.৭.৮০

১৭. কবুতর

প্রতীক্ষায় থেকো না আমার
আমি আসবো না, থাকলো কথার কবুতর
কখনো বাইষ্যা মাসে পেয়ে অবসর
নিতান্তই জানতে ইচ্ছে হলে আমার খবর
পাখিকে জিজ্ঞেস করো নিরিবিলি,
পক্ষপাতহীন পাখি বিস্তারিত সংবাদ জানাবে
কী কী ব্যথা এবং আর্দ্রতা
রেখেছে দখল করে আশৈশব আমার একালা,
আমি কতো একা,
কতোখানি ক্ষত আর ক্ষতি নিয়ে
বেদনার অনুকূলে প্রবাহিত আমার জীবন।

নিপুণ সন্ধান করো
পাখির চঞ্চুতে-চোখে-কোমল পালকে
আমার বিস্তার আর বিন্যাসের কারুকাজ পাবে,
কী আমার আকাঙ্ক্ষিত গঠন প্রণালী আর
আমার কী রাজনীতি কবুতর জানে।

জীবন যাপনে কতো মানবিক,
কবিতায় কতোটা মানুষ,
পরিপাটি নির্দোষ সন্ত্রাস নিয়ে
আমি কতো বিনীত বিদ্রোহী,
পাখিকে জিজ্ঞেস করো সব জেনে যাবে
অবিকল আমার মতন করে কবুতর নির্ভুল জানাবে।

১৯.১১.৮১

১৮. কে

বেরিয়ে যে আসে সে তো এভাবেই আসে,
দুর্বিনীত ধ্রুপদী টংকার তুলে
লন্ডভন্ড করে চলে আসে মৌলিক ভ্রমণে, পথে
প্রচলিত রীতি-নীতি কিচ্ছু মানে না।

আমি এক সেরকম উত্থানের অনুপম কাহিনী শুনেছি।

এমন অনমনীয় পৃথক ভ্রমণে সেই পরিব্রাজকের
অনেক অবর্ণনীয় অভিমান থাকে,
টসটসে রসাল ফলের মতো ক্ষত আর
ব্যক্তিগত ক্ষয়-ক্ষতি থাকে। তাকে তুমুল শাসায়
মূলচ্যুত মানুষের ভুল ভালোবাসা, রাজনীতি,
পক্ষপাতদুষ্ট এক স্টাফ রিপোর্টার। আর তার সহগামী
সব পাখিদের ঈর্ষার আকাশে ভাসে ব্যর্থতার কিচির-মিচির।

এতো প্রতিকূলতায় গতি পায় নিষ্ঠাবান প্রেমিক শ্রমিক,
আমি এক সে রকম পথিকের প্রতিকৃতি নির্ভূল দেখেছি।

ইদানিং চারদিকে সমস্বরে এক প্রশ্ন,–কে? কে? কে?
বেরিয়ে যে আসে সে তো এই পথে এইভাবে আসে, নিপুণ ভঙ্গিতে।

১৫.২.৮২

১৯. কোমল কংক্রিট

জলের আগুনে পুড়ে হয়েছি কমল,
কী দিয়ে মুছবে বলো আগুনের জল।

১৫.১১.৮০

২০. ক্যাকটাস

দারুন আলাদা একা অভিমানী এই ক্যাকটাস।
যেন কোন বোবা রমণীর সখী ছিলো দীর্ঘকাল
কিংবা আজন্ম শুধু দেখেছে আকাল
এরকম ভাব-ভঙ্গি তার।
ধ্রুপদী আঙিনা ব্যাপী
কন্টকিত হাহাকার আর অবহেলা,
যেন সে উদ্ভিদ নয়
তাকালেই মনে হয় বিরান কারবালা।

হয় তো কেটেছে তার মায়া ও মমতাহীন সজল শৈশব
অথবা গিয়েছে দিন
এলোমেলো পরিচর্যাহীন এক রঙিন কৈশোর,
নাকি সে আমার মত খুব ভালোবেসে
পুড়েছে কপাল তার আকালের এই বাংলাদেশে।

বোকা উদ্ভিদ তবে কি
মানুষের কাছে প্রেম চেয়েছিলো?
চেয়েছিলো আরো কিছু বেশি।

৩০.৬.৮২

২১. ঘরোয়া রাজনীতি

ব্যর্থ হয়ে থাকে যদি প্রণয়ের এতো আয়োজন,
আগামী মিছিলে এসো
স্লোগানে স্লোগানে হবে কথোপকথন।

আকালের এই কালে সাধ হলে পথে ভালোবেসো,
ধ্রুপদী পিপাসা নিয়ে আসো যদি
লাল শাড়িটা তোমার পড়ে এসো।

১৬.২.৮৪

২২. ডাকাত

তুমি কে হ?
সোনালী ছনের বাড়ি তছনছ করে রাতে
নির্বিচারে ঢুকে গেলে অন্দর-মহলে
বেগানা পুরুষ, লাজ-শরমের মাথা খেয়ে
তুমি কে হে?

তোমাকে তো কখনো দেখিনি আগে এ তল্লাটে
মারী ও মড়কে, ঝড়ে, কাঙ্ক্ষিত বিদ্রোহে।
আমাদের যুদ্ধের বছরে
ভিন্‌ গেরামের কতো মানুষের পদচারণায়
এ বাড়ি মুখর ছিলো, তোমাকে দেখিনি ত্রি-সীমায়।

চতুর বণিক তুমি আঁধারে নেমেছো এই বানিজ্য ভ্রমণে,
কে জানে কী আছে পাড়া-পড়শীর মনে!
লোভে আর লালসায় অবশেষে আগন্তুক সর্বস্ব হারাবে,
কেন না প্রভাত হলে চারদিকে মানুষের ঢল নেমে যাবে।

২.৩.৮৫

২৩. তীর্থ

কেন নাড়া দিলে?
নাড়ালেই নড়ে না অনেক কিছু
তবু কেন এমন নাড়ালে?
পৃথিবীর তিন ভাগ সমান দু’চোখ যার
তাকে কেন একমাস শ্রাবণ দেখালে!

এক ওভাবে নাড়ালে?
যেটুকু নড়ে না তুমুলভাবে ভেতরে বাহিরে
কেন তাকে সেটুকু নাড়ালে?

ভয় দেখালেই ভয় পায় না অনেকে,
তবু তাকে সে ভয় দেখালে?
যে মানুষ জীবনের সব ক’টি শোক-দ্বীপে গেছে,
সব কিছু হারিয়েই সে মানুষ
হারাবার ভয় হারিয়েছে,
তার পর তীর্থ হয়েছে।

৩.৬.৮০

২৪. তুমি ডাক দিলে

একবার ডাক দিয়ে দেখো আমি কতোটা কাঙাল,
কতো হুলুস্থূল অনটন আজম্ন ভেতরে আমার।

তুমি ডাক দিলে
নষ্ঠ কষ্ঠ সব নিমিষেই ঝেড়ে মুছে
শব্দের অধিক দ্রুত গতিতে পৌছুবো
পরিণত প্রণয়ের উৎসমূল ছোঁব
পথে এতোটুকু দেরিও করবো না।
তুমি ডাক দিলে
সীমাহীন খাঁ খাঁ নিয়ে মরোদ্যান হবো,
তুমি রাজি হলে
যুগল আহলাদে এক মনোরম আশ্রম বানাবো।

একবার আমন্রণ পেলে
সব কিছু ফেলে
তোমার উদ্দেশে দেবো উজাড় উড়াল,
অভয়ারণ্য হবে কথা দিলে
লোকালয়ে থাকবো না আর
আমরণ পাখি হয়ে যাবো, -খাবো মৌনতা তোমার

২৫. তৃষ্ণা

কোনো প্রাপ্তিই পূর্ণ প্রাপ্তি নয়
কোনো প্রাপ্তির দেয় না পূর্ণ তৃপ্তি
সব প্রাপ্তি ও তৃপ্তি লালন করে
গোপনে গহীনে তৃষ্ণা তৃষ্ণা তৃষ্ণা।

আমার তো ছিলো কিছু না কিছু যে প্রাপ্য
আমার তো ছিলো কাম্য স্বল্প তৃপ্তি
অথচ এ পোড়া কপালের ক্যানভাসে
আজন্ম শুধু শুন্য শুন্য শুন্য।

তবে বেঁচে আছি একা নিদারুণ সুখে
অনাবিষ্কৃত আকাঙ্ক্ষা নিয়ে বুকে
অবর্ণনীয় শুশ্রূষাহীন কষ্টে
যায় যায় দিন ক্লান্ত ক্লান্ত ক্লান্ত।

৪.৭.৮২

২৬. তোমাকেই চাই

আমি এখন অন্য মানুষ ভিন্ন ভাবে কথা বলি
কথার ভেতর অকথিত অনেক কথা জড়িয়ে ফেলি
এবং চলি পথ বেপথে যখন তখন।

আমি এখন ভিন্ন মানুষ অন্যভাবে কথা বলি
কথার ভেতর অনেক কথা লুকিয়ে ফেলি,
কথার সাথে আমার এখন তুমুল খেলা
উপযুক্ত সংযোজনে জীর্ণ-শীর্ণ শব্দমালা
ব্যঞ্জনা পায় আমার হাতে অবলীলায়,
ঠিক জানি না পারস্পরিক খেলাধূলায়
কখন কে যে কাকে খেলায়।

অপুষ্টিতে নষ্ট প্রাচীন প্রেমের কথা যত্রতত্র কীর্তন আমার
মাঝে মধ্যে প্রণয় বিহীন সভ্যতাকে কচি প্রেমের পত্র লিখি
যেমন লেখে বয়ঃসন্ধি-কালের মানুষ নিশীথ জেগে।

আমি এখন অন্য মানুষ ভিন্নভাবে চোখ তুলে চাই
খুব আলাদা ভাবে তাকাই
জন্মাবধি জলের যুগল কলস দেখাই,
ভেতরে এক তৃতীয় চোখ রঞ্জনালোয় কর্মরত
সব কিছু সে সঠিকভাবে সবটা দেখে এবং দারুণ প্রণয় কাতর।

আমি এখন আমার ভেতর অন্য মানুষ গঠন করে সংগঠিত,
বীর্যবান এক ভিন্ন গোলাপ এখন কসম খুব প্রয়োজন।

১০.১১.৮১

২৭. দুঃখের আরেক নাম

আমাকে স্পর্শ করো, নিবিড় স্পর্শ করো নারী।
অলৌকিক কিছু নয়,
নিতান্তই মানবিক যাদুর মালিক তুমি
তোমার স্পর্শেই শুধু আমার উদ্ধার।

আমাকে উদ্ধার করো পাপ থেকে,
পঙ্কিলতা থেকে, নিশ্চিত পতন থেকে।
নারী তুমি আমার ভিতরে হও প্রবাহিত দুর্বিনীত নদীর মতন,
মিলেমিশে একাকার হয়ে এসো বাঁচি
নিদারুণ দুঃসময়ে বড়ো বেশি অসহায় একা পড়ে আছি।
তুমুল ফাল্‌গুন যায়, ডাকে না কোকিল কোনো ডালে,
আকস্মিক দু’একটা কুহু কুহু আর্তনাদ
পৃথিবীকে উপহাস করে।
একদিন কোকিলেরো সুসময় ছিলো, আজ তারা
আমার মতোই বেশ দুঃসময়ে আছে
পাখিদের নীলাকাশ বিষাক্ত হয়ে গেছে সভ্যতার অশ্লীল বাতাসে।

এখন তুমিই বলো নারী
তোমার উদ্যান ছাড়া আমি আর কোথায় দাঁড়াবো।
আমাকে দাঁড়াতে দাও বিশুদ্ধ পরিপূর্ণতায়,
ব্যাকুল শুশ্রুষা দিয়ে আমাকে উদ্ধার করো
নারী তুমি শৈল্পিক তাবিজ,
এতোদিন নারী ও রমনীহীন ছিলাম বলেই ছিলো
দুঃখের আরেক নাম হেলাল হাফিজ।

৩.৩.৭৪

২৮. দুঃসময়ে আমার যৌবন

মানব জন্মের নামে হবে কলঙ্ক হবে
এরকম দুঃসময়ে আমি যদি মিছিলে না যাই,
উত্তর পুরুষে ভীরু কাপুরুষের উপমা হবো
আমার যৌবন দিয়ে এমন দুর্দিনে আজ
শুধু যদি নারীকে সাজাই।

১৪.২.৭১

২৯. নাম ভূমিকায়

তাকানোর মতো করে তাকালেই চিনবে আমাকে।

আমি মানুষের ব্যকরণ
জীবনের পুষ্পিত বিজ্ঞান
আমি সভ্যতার শুভ্রতার মৌল উপাদান,
আমাকে চিনতেই হবে
তাকালেই চিনবে আমাকে।

আমাকে না চেনা মানে
মাটি আর মানুষের প্রেমের উপমা সেই
অনুপম যুদ্ধকে না চেনা।

আমাকে না চেনা মানে
সকালের শিশির না চেনা,
ঘাসফুল, রাজহাঁস, উদ্ভিত না চেনা।

গাভিন ক্ষেতের ঘ্রাণ, জলের কসম, কাক
পলিমাটি চেনা মানে আমাকেই চেনা।
আমাকে চেনো না?
আমি তোমাদের ডাক নাম, উজাড় যমুনা।

৫.১২.৮০

৩০. নিখুঁত স্ট্র্যাটেজী

পতন দিয়েই আমি পতন ফেরাবো বলে
মনে পড়ে একদিন জীবনের সবুজ সকালে
নদীর উলটো জলে সাঁতার দিয়েছিলাম।

পতন দিয়েই আমি পতন ফেরাবো বলে
একদিন যৌবনের শৈশবেই
যৌবনকে বাজি ধরে
জীবনের অসাধারণ স্কেচ এঁকেছিলাম।

শরীরের শিরা ও ধমনী থেকে লোহিত কণিকা দিয়ে আঁকা
মারাত্মক উজ্জ্বল রঙের সেই স্কেচে
এখনো আমার দেখো কী নিখুঁত নিটোল স্ট্র্যাটেজী।

অথচ পালটে গেলো কতো কিছু,–রাজনীতি,
সিংহাসন, সড়কের নাম, কবিতার কারুকাজ,
কিশোরী হেলেন।

কেবল মানুষ কিছু এখনো মিছিলে, যেন পথে-পায়ে
নিবিড় বন্ধনে তারা ফুরাবে জীবন।

তবে কি মানুষ আজ আমার মতন
নদীর উলটো জলে দিয়েছে সাঁতার,
তবে কি তাদের সব লোহিত কণিকা
এঁকেছে আমার মতো স্কেচ,
তবে কি মানুষ চোখে মেখেছে স্বপন
পতন দিয়েই আজ ফেরাবে পতন।

৪.১.৭৪

৩১. নিরাশ্রয় পাচঁটি আঙুল

নিরাশ্রয় পাচঁটি আঙুল তুমি নির্দ্বিধায়
অলংকার করে নাও, এ আঙুল ছলনা জানে না।
একবার তোমার নোলক, দুল, হাতে চুড়ি
কটিদেশে বিছা করে অলংকৃত হতে দিলে
বুঝবে হেলেন, এ আঙুল সহজে বাজে না।

একদিন একটি বেহালা নিজেকে বাজাবে বলে
আমার আঙুলে এসে দেখেছিলো
তার বিষাদের চেয়ে বিশাল বিস্তৃতি,
আমি তাকে চলে যেতে বলিনি তবুও
ফিরে গিয়েছিলো সেই বেহালা সলাজে।

অসহায় একটি অঙ্গুরী
কনিষ্ঠা আঙুলে এসেই বলেছিলো ঘর,
অবশেষে সেও গেছে সভয়ে সলাজে।

ওরা যাক, ওরা তো যাবেই
ওদের আর দুঃখ কতোটুকু? ওরা কি মানুষ?

২.৪.৭০

৩২. নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়

এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়
এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়
মিছিলের সব হাত
কন্ঠ
পা এক নয় ।

সেখানে সংসারী থাকে, সংসার বিরাগী থাকে,
কেউ আসে রাজপথে সাজাতে সংসার ।
কেউ আসে জ্বালিয়ে বা জ্বালাতে সংসার
শাশ্বত শান্তির যারা তারাও যুদ্ধে আসে
অবশ্য আসতে হয় মাঝে মধ্যে
অস্তিত্বের প্রগাঢ় আহ্বানে,
কেউ আবার যুদ্ধবাজ হয়ে যায় মোহরের প্রিয় প্রলোভনে
কোনো কোনো প্রেম আছে প্রেমিককে খুনী হতে হয় ।

যদি কেউ ভালোবেসে খুনী হতে চান
তাই হয়ে যান
উৎকৃষ্ট সময় কিন্তু আজ বয়ে যায় ।

এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়
এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময় ।

১.২.৬৯

৩৩. নেত্রকোনা

কতো দিন তোমাকে দেখি না
তুমি ভালো আছো? সুখে আছো? বোন নেত্রকোনা।

আমাকে কি চিনতে পেরেছো? আমি
ছিলাম তোমার এক আদরের নাগরিক নিকট-আত্মীয়
আমাদের বড়ো বেশি মাখামাখি ছিলো,
তারপর কী থেকে কী হলো
আভাইগা কপাল শুধু বিচ্ছেদের বিষে নীল হলো।

দোহাই লক্ষ্মী মেয়ে কোন দিন জিজ্ঞেস করো না
আমি কেন এমন হলাম জানতে চেয়ো না
কী এমন অভিমানে আমাদের এতো ব্যবধান,
কতোটা বিশৃংখলা নিয়ে আমি ছিমছাম সন্নাসী হলাম।

কিছু কথা অকথিত থেকে যায়
বেদনার সব কথা মানুষ বলে না, রমনী-কাতর
সবিতা সেনের সূতী শাড়িও জানে না
সোনালী অনল আর কতো জল দিদির ভেতর।

কেউ কি তাকিয়ে থাকে নিষ্পলক দাঁড়িয়ে প্রাঙ্গণে?
কারো কি তোলপাড় ওঠে ট্রেনের হুইসেল শুনে মনে?
তোমার মাটির রসে পরিপুষ্ট বৃক্ষ ফুল।
মগড়ার ক্ষীণ কলরোল
অমল কোমল এক মানুষের প্রতীক্ষায় থাক বা না থাক,
তুমি আছো আমার মজ্জায় আর মগজের কোষে অনুক্ষণ,
যে রকম ক্যামোফ্লাজ করে খুব ওতোপ্রোতভাবে থাকে
জীবনের পাশাপাশি অদ্ভুত মরণ।

২৫.১১.৮১

৩৪. পরানের পাখি

পরানের পাখি তুমি একবার সেই কথা কও,
আমার সূর্যের কথা, কাঙ্খিত দিনের কথা,
সুশোভন স্বপ্নের কথাটা বলো,–শুনুক মানুষ।

পরানের পাখি তুমি একবার সেই কথা কও,
অলক্ষ্যে কবে থেকে কোমল পাহাড়ে বসে
এতোদিন খুঁটে খুঁটে খেয়েছো আমাকে আর
কতো কোটি দিয়েছো ঠোকর,
বিষে বিষে নীল হয়ে গেছি, শুশ্রূষায়
এখনো কী ভাবে তবু শুভ্রতা পুষেছি তুমি দেখাও না
পাখি তুমি তোমাকে দেখাও,–দেখুক মানুষ।

পরানের পাখি তুমি একবার সেই কথা কও,
সময় পাবে না বেশি চতুর্দিক বড়ো টলোমলো
পরানের পাখি তুমি শেষবার শেষ কথা বলো,
আমার ভেতরে থেকে আমার জীবন খেয়ে কতোটুকু
যোগ্য হয়েছো, ভূ-ভাগ কাঁপিয়ে বেসামাল
কবে পাখি দেবেই উড়াল, দাও,–শিখুক মানুষ।

২১.৭.৮০

৩৫. পৃথক পাহাড়

আমি আর কতোটুকু পারি ?

কতোটুকু দিলে বলো মনে হবে দিয়েছি তোমায়,
আপাতত তাই নাও যতোটুকু তোমাকে মানায়।

ওইটুকু নিয়ে তুমি বড় হও,
বড় হতে হতে কিছু নত হও
নত হতে হতে হবে পৃথক পাহাড়,
মাটি ও মানুষ পাবে, পেয়ে যাবে ধ্রুপদী আকাশ।

আমি আর কতোটুকু পারি ?
এর বেশি পারেনি মানুষ।

৯.১০.৮০

৩৬. প্রতিমা

প্রেমের প্রতিমা তুমি, প্রণয়ের তীর্থ আমার।

বেদনার করুণ কৈশোর থেকে তোমাকে সাজাবো বলে
ভেঙেছি নিজেকে কী যে তুমুল উল্লাসে অবিরাম
তুমি তার কিছু কি দেখেছো?

একদিন এই পথে নির্লোভ ভ্রমণে
মৌলিক নির্মাণ চেয়ে কী ব্যাকুল স্থপতি ছিলাম,
কেন কালিমা না ছুঁয়ে শুধু তোমাকেই ছুঁলাম
ওসবের কতোটা জেনেছো?

শুনেছি সুখেই বেশ আছো, কিছু ভাঙচুর আর
তোলপাড় নিয়ে আজ আমিও সচ্ছল, টলমল
অনেক কষ্টের দামে জীবন গিয়েছে জেনে
মূলতই ভালোবাসা মিলনে মলিন হয়, বিরহে উজ্জ্বল।

এ আমার মোহ বলো, খেলা বলো
অবৈধ মুদ্রার মতো অচল আকাঙ্ক্ষা কিংবা
যা খুশী তা বলো,
সে আমার সোনালি গৌরব
নারী, সে আমার অনুপম প্রেম।

তুমি জানো, পাড়া-প্রতিবেশী জানে পাইনি তোমাকে,
অথচ রয়েছো তুমি এই কবি সন্নাসীর ভোগে আর ত্যাগে।

১১.৩.৭৩

৩৭. প্রত্যাবর্তন

প্রত্যাবর্তনের পথে
কিছু কিছু ‘কস্ট্‌লি’ অতীত থেকে যায়।
কেউ ফেরে, কেউ কেউ কখনো ফেরে না।
কেউ ফিরে এসে কিছু পায়,
মৌলিক প্রেমিক আর কবি হলে অধিক হারায়।

তবু ফেরে, কেউ তো ফেরেই,
আর জীবনের পক্ষে দাঁড়ায়,
ভালোবাসা যাকে খায় এইভাবে সবটুকু খায়।

প্রত্যাবর্তনের প্তহে
পিতার প্রস্থান থেকে,
থাকে প্রণয়ের প্রাথমিক স্কুল,
মাতার মলিন স্মৃতি ফোটায় ধ্রুপদী হুল,
যুদ্ধোত্তর মানুষের মূল্যবোধ পালটায় তুমুল,
নেতা ভুল,
বাগানে নষ্ট ফুল,
অকথিত কথার বকুল
বছর পাঁচেক বেশ এ্যানাটমিক ক্লাশ করে বুকে।

প্রত্যাবর্তনের পথে
ভেতরে ক্ষরণ থাকে লাল-নীল প্রতিনিয়তই,
তাহকে প্রেসক্লাব–কার্ডরুম, রঙিন জামার শোক,
থাকে সুখী স্টেডিয়াম,
উদ্‌গ্রীব হয়ে থাকে অভিজাত বিপনী বিতান,
বাথরুম, নগরীর নিয়ন্ত্রিত আঁধারের বার,
থাকে অসুস্থ সচ্ছলতা, দীর্ঘ রজনী
থাকে কোমল কিশোর,
প্রত্যাবর্তনের পথে দুঃসময়ে এইভাবে
মূলত বিদ্রোহ করে বেহালার সুর।

তারপর ফেরে, তবু ফেরে, কেউ তো ফেরেই,
আর জীবনের পক্ষে দাঁড়ায়,
ভালোবাসা যাকে খায় এইভাবে সবটুকু খায়।

১২.৫.৮০

৩৮. প্রস্থান

এখন তুমি কোথায় আছো কেমন আছো, পত্র দিয়ো৷
এক বিকেলে মেলায় কেনা খামখেয়ালী তাল পাখাটা
খুব নিশীথে তোমার হাতে কেমন আছে, পত্র দিয়ো৷
ক্যালেন্ডারের কোন পাতাটা আমার মতো খুব ব্যথিত
ডাগর চোখে তাকিয়ে থাকে তোমার দিকে, পত্র দিয়ো৷
কোন কথাটা অষ্টপ্রহর কেবল বাজে মনের কানে
কোন স্মৃতিটা উস্কানি দেয় ভাসতে বলে প্রেমের বানে
পত্র দিয়ো, পত্র দিয়ো৷

আর না হলে যত্ন করে ভুলেই যেয়ো, আপত্তি নেই৷
গিয়ে থাকলে আমার গেছে, কার কী তাতে?
আমি না হয় ভালোবেসেই ভুল করেছি ভুল করেছি,
নষ্ট ফুলের পরাগ মেখে
পাঁচ দুপুরের নির্জনতা খুন করেছি, কী আসে যায়?

এক জীবনে কতোটা আর নষ্ট হবে,
এক মানবী কতোটা আর কষ্ট দেবে!

৭.৮০


৩৯. ফেরীঅলা

কষ্ট নেবে কষ্ট
হরেক রকম কষ্ট আছে
কষ্ট নেবে কষ্ট !

লাল কষ্ট নীল কষ্ট কাঁচা হলুদ রঙের কষ্ট
পাথর চাপা সবুজ ঘাসের সাদা কষ্ট,
আলোর মাঝে কালোর কষ্ট
‘মালটি-কালার’ কষ্ট আছে
কষ্ট নেবে কষ্ট ।

ঘরের কষ্ট পরেরর কষ্ট পাখি এবং পাতার কষ্ট
দাড়ির কষ্ট
চোখের বুকের নখের কষ্ট,
একটি মানুষ খুব নীরবে নষ্ট হবার কষ্ট আছে
কষ্ট নেবে কষ্ট ।

প্রেমের কষ্ট ঘৃণার কষ্ট নদী এবং নারীর কষ্ট
অনাদর ও অবহেলার তুমুল কষ্ট,
ভুল রমণী ভালোবাসার
ভুল নেতাদের জনসভার
হাইড্রোজনে দুইটি জোকার নষ্ট হবার কষ্ট আছে
কষ্ট নেবে কষ্ট ।

দিনের কষ্ট রাতের কষ্ট
পথের এবং পায়ের কষ্ট
অসাধারণ করুণ চারু কষ্ট ফেরীঅলার কষ্ট
কষ্ট নেবে কষ্ট ।

আর কে দেবে আমি ছাড়া
আসল শোভন কষ্ট,
কার পুড়েছে জন্ম থেকে কপাল এমন
আমার মত ক’জনের আর
সব হয়েছে নষ্ট,
আর কে দেবে আমার মতো হৃষ্টপুষ্ট কষ্ট ।

৭.৮০

৪০. বাম হাত তোমাকে দিলাম

এই নাও বাম হাত তোমাকে দিলাম।
একটু আদর করে রেখো, চৈত্রে বোশেখে
খরা আর ঝড়ের রাত্রিতে মমতায় সেবা ওশুশ্রূষা দিয়ে
বুকে রেখো, ঢেকে রেখো, দুর্দিনে যত্ন নিও
সুখী হবে তোমার সন্তান।

এই নাও বাম হাত তোমাকে দিলাম।
ও বড়ো কষ্টের হাত, দেখো দেখো অনাদরে কী রকম
শীর্ণ হয়েছে, ভুল আদরের ক্ষত সারা গায়ে
লেপ্টে রয়েছে, পোড়া কপালের হাত
মাটির মমতা চেয়ে
সম্পদের সুষম বন্টন চেয়ে
মানুষের ত্রাণ চেয়ে
জন্মাবধি কপাল পুড়েছে,
ওকে আর আহত করো না, কষ্ট দিও না
ওর সুখে সুখী হবে তোমার সন্তান।

কিছুই পারিনি দিতে, এই নাও বাম হাত তোমাকে দিলাম।

২৩.৭.৮০

৪১. বেদনা বোনের মত

একদিন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দেখলাম
শুধু আমাকেই দেখা যায়,
আলোর প্রতিফলন প্রতিসরণের নিয়ম না জানা আমি
সেই থেকে আর কোনদিন আয়না দেখি না।

জননীর জৈবসারে বর্ধিত বৃক্ষের নিচে
কাঁদতাম যখন দাঁড়িয়ে
সজল শৈশবে, বড়ো সাধ হতো
আমিও কবর হয়ে যাই,
বহুদিন হলো আমি সেরকম কবর দেখি না
কবরে স্পর্ধিত সেই একই বৃক্ষ আমাকে দেখে না।

কারুকার্যময় চারু ঘরের নমুনা দিয়ে
একদিন ভরা ছিল আমার দু’রেটিনার সীমিত সীমানা,
অথচ তেমন কোনো সীমাবদ্ধতাকে আর কখন মানি না।

কী দারুণ বেদনা আমাকে তড়িতাহতের মতো কাঁপালো তুমুল
ক্ষরণের লাল স্রোত আজন্ম পুরোটা ভেতর উল্টে পাল্টে খেলো,
নাকি অলক্ষ্যে এভাবেই
এলোমেলো আমাকে পাল্টালো, নিপুণ নিষ্ঠায়
বেদনার নাম করে বোন তার শুশ্রূষায়
যেন আমাকেই সংগোপনে যোগ্য করে গেলো।

১৬.১.৭৩

৪২. ভূমিহীন কৃষকের গান

দুই ইঞ্চি জায়গা হবে?
বহুদিন চাষাবাদ করিনা সুখের।

মাত্র ইঞ্চি দুই জমি চাই
এর বেশী কখনো চাবো না,
যুক্তিসঙ্গত এই জৈবনিক দাবি খুব বিজ্ঞানসম্মত
তবু ওটুকু পাবো না
এমন কী অপরাধ কখন করেছি!

ততোটা উর্বর আর সুমসৃণ না হলেও ক্ষতি নেই
ক্ষোভ নেই লাবন্যের পুষ্টিহীনতায়,
যাবতীয় সার ও সোহাগ দিয়ে
একনিষ্ঠ পরিচর্যা দিয়ে
যোগ্য করে নেবো তাকে কর্মিষ্ঠ কৃষকের মত।

একদিন দিন চলে যাবে মৌসুম ফুরাবে,
জরা আর খরায় পীড়িত খাঁ খাঁ
অকর্ষিত ওলো জমি
কেঁদে-কেটে কৃষক পাবে না।

১২.১১.৮১

৪৩. মানবানল

আগুন আর কতোটুকু পোড়ে ?
সীমাবদ্ধ ক্ষয় তার সীমিত বিনাশ,
মানুষের মতো আর অতো নয় আগুনের সোনালি সন্ত্রাস।

আগুন পোড়ালে তবু কিছু রাখে
কিছু থাকে,
হোক না তা শ্যামল রঙ ছাই,
মানুষে পোড়ালে আর কিছুই রাখে না
কিচ্ছু থাকে না,
খাঁ খাঁ বিরান, আমার কিছু নাই।

৭.২.৮১

৪৪. যাতায়াত

কেউ জানে না আমার কেন এমন হলো।

কেন আমার দিন কাটে না রাত কাটে না
রাত কাটে তো ভোর দেখি না
কেন আমার হাতের মাঝে হাত থাকে না কেউ জানেনা।

নষ্ট রাখীর কষ্ট নিয়ে অতোটা পথ একলা এলাম
পেছন থেকে কেউ বলেনি করুণ পথিক
দুপুর রোদে গাছের নিচে একটু বসে জিরিয়ে নিও,
কেই বলেনি ভালো থেকো সুখেই থেকো
যুগল চোখে জলের ভাষায় আসার সময় কেউ বলেনি
মাথার কসম আবার এসো

জন্মাবধি ভেতরে এক রঙিন পাখি কেঁদেই গেলো
শুনলো না কেউ ধ্রুপদী ডাক,
চৈত্রাগুনে জ্বলে গেলো আমার বুকের গেরস্থালি
বললো না কেউ তরুন তাপস এই নে চারু শীতল কলস।

লন্ডভন্ড হয়ে গেলাম তবু এলাম।

ক্যাঙ্গারু তার শাবক নিয়ে যেমন করে বিপদ পেরোয়
আমিও ঠিক তেমনি করে সভ্যতা আর শুভ্রতাকে বুকে নিয়েই দুঃসময়ে এতোটা পথ একলা এলাম শুশ্রূষাহীন।

কেউ ডাকেনি তবু এলাম, বলতে এলাম ভালোবাসি।

১০.৪.৮১

৪৫. যার যেখানে জায়গা

ভোলায়া ভালায়া আর কথা দিয়া কতোদিন ঠাগাইবেন মানুষ
ভাবছেন অহনো তাদের অয় নাই হুঁশ।
গোছায়া গাছায়া লন বেশি দিন পাইবেন না সময়
আলামত দেখতাছি মানুষের অইবোই জয়।

কলিমুদ্দিনের পোলা চিডি দিয়া জানাইছে,–’ভাই
আইতাছি টাউন দেখতে একসাথে আমরা সবাই,
নগরের ধাপ্‌পাবাজ মানুষেরে কইও রেডি অইতে
বেদম মাইরের মুখে কতোক্ষণ পারবো দাঁড়াইতে।’

টিকেট ঘরের ছাদে বিকালে দাঁড়ায়ে যখন যা খুশি যারা কন
কোনো দিন খোঁজ লইছেন গ্রামের লোকের সোজা মন
কী কী চায়, কতোখানি চায়
কয়দিন খায় আর কয়বেলা না খায়া কাটায়।

রাইত অইলে অমুক ভবনে বেশ আনাগোনা, খুব কানাকানি,
আমিও গ্রামের পোলা চুত্‌মারানি গাইল দিতে জানি।

৯.২.৮১

৪৬. যুগল জীবনী

আমি ছেড়ে যেতে
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই নভেম্বর, ২০১১ সকাল ৯:৫৫
৩১টি মন্তব্য ২৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মপোলব্ধি......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৫১

আত্মপোলব্ধি......

একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !

লিখেছেন হাসানুর, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩২



হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩৩

আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?

লিখেছেন রাজীব, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৪২

ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।

আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×