somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আত্মকথন ২ - ফিরে দেখা (২০১০ সাল)

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ৯:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১ম পর্ব : Click This Link


(অনেক কারণে ২০১০ সাল আমার কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।প্রচুর আনন্দ,কষ্ট দিয়েছে আমাকে এ বছরটা।কতকিছু শিখেছি এ সময়টাতে!কত বাস্তব অভিজ্ঞতা হয়েছে আমার!কোন কিছুই ভুলবার নয়।যদি আমি বড় হয়ে ভালো কিছু করতে পারি,তবে এর পিছনে এ বছরটা দায়ী থাকবে।তাই এই বিশাল সময়টাকে অবহেলা করি কিভাবে?
গত কয়েকদিন ধরে ভাবছিলাম এ বছরটা সম্পর্কে কিছু একটা লিখব।হঠাৎ মাথায় এল সামুর কথা।মনে হল অভিজ্ঞতা শেয়ারের জন্য আপাতত সামুই বেষ্ট।তাই এখন এ পোষ্ট দিচ্ছি।পরে আরো লেখার ইচ্ছে আছে।)




আমি সে সময়টাতে বেশ দার্শনিক টাইপ হয়ে গিয়েছিলাম।না পড়ে নানা কথা চিন্তা করতাম,নানা কিছু আবিষ্কার করতাম।একদিন হঠাৎ মনে হল আমি স্বপ্ন আর লক্ষ্যের মধ্যকার পার্থক্যটা ধরতে পেরেছি।এ বিষয়টা হয়ত বা অনেকেই জানে,কিন্তু আমি তখন জানতাম না।তাই পার্থক্যটা ধরতে পারার পর বেশ ভালো লাগছিল।আমার কাছে তাদের মধ্যকার সম্পর্কটা এমন -

"স্বপ্নের সাথে যদি তা পূরণের তাগিদ যুক্ত হয়, তবেই তা লক্ষ্যে রুপান্তরিত হয়।
সুতরাং,স্বপ্ন < লক্ষ্য
বা, স্বপ্ন + তাগিদ = লক্ষ্য।"


স্যাররা স্কুলে প্র্যাকটিকেল খাতা নিয়ে বেশ ঝামেলা করছিল তখন।তাঁরা সিগনেচার করতে চান না।বেশ কায়দা করে ছেলেরা সাইন করাতো।আমি অত কায়দা-কানুন জানতাম না,তাই খাতা নিয়ে সরাসরি স্যারদের কাছে চলে যেতাম।তাঁরা সেগুলো সাইন করে দিতেন,আমি বাসায় চলে আসতাম।

জানুয়ারীর ৩০ তারিখ প্রথমবারের মত আমির খানের ‘গজিনি’ দেখি।এত ভালো লেগেছিল মুভিটা যে ঐদিন আর পড়তে পারিনি,সারাদিন গুনগুন করে গানগুলো গাচ্ছিলাম।পাশাপাশি অসিনের জন্য মন খারাপও লাগছিলো।মনে হচ্ছিল গজিনিকে গিয়ে দুইটা কষে লাথি মেরে আসি।

৩১ তারিখ স্কুলে যাই মডেল টেষ্টের খাতাগুলো আনার জন্য।জানতাম খাতা এনে লাভ নেই,তবুও গিয়েছিলাম সময় কাটাতে।গিয়ে দেখি ধুন্ধুমার কান্ড।স্যাররা অডিটোরিয়ামের মধ্যে কিছু খাতা রেখে চলে গেছেন,আর সবাই সেগুলো নিয়ে কাড়াকাড়ি করছে।ছেলে-মেয়ে সব মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে।আমি কোনমতে গা বাঁচিয়ে কিছু খাতা জোগাড় করি।এরপর এক বন্ধুর সাথে বাসে করে বাসায় চলে আসি।

সে বন্ধু আবার বলল যে ঐদিন বিকেলবেলা তার বাসায় যেতে হবে খেলার জন্য।আমি অবাক হয়ে যাই।পরীক্ষার বাকি মাত্র ১০ দিন,এমন সময় আবার কেউ খেলে নাকি?আমি দুর্বল গলায় তার কথার প্রতিবাদ করার চেষ্টা করি,কিন্তু সে চাপাচাপি করাতে শেষতক রাজি হই।কথা দিই,বিকেলে খেলতে তার বাসায় যাব।

ছেলেটার বাসা আমাদের বাসা থেকে বেশ দূরে,হেঁটে গেলে ১৫ মিনিটের মত লাগে।আমি তাই এত দূরে যেতে চাচ্ছিলাম না,কিন্তু সে কি মনে করে ভেবে রওয়ানা হই।যাবার সময় বাসায় বলে যাই যে তার কাছে যাচ্ছি কিছু নোট নেবার জন্য।এ কথা মা-বাবা দুইজনই বিশ্বাস করে।কিন্তু তারা যদি আসল কথা জানতে পারত,তাহলে আর আস্ত রাখত না।

একটা রিকশা জোগাড় করে দুরুদুরু বুকে যেতে থাকি আর আশেপাশে মুখ লুকিয়ে দেখতে থাকি।কারণ কেউ যদি দেখে ফেলে আমাকে জিজ্ঞেস করে “তুমি কোথায় যাচ্ছো?” তখন কি উত্তর দিব,এই কথা ভেবে মৃদু মৃদু ঘামছিলাম।

যাই হোক,শত বাধা অতিক্রম করে সেখানে যাই।গিয়ে দেখি খেলাই হচ্ছে না!মাথা গরম হয়ে যায়।ছেলেটার বাসায় গিয়ে তাকে বলি সব কিছু জোগাড় করে বাইরে চলে আসতে।এরপর আমি সেখানকার এক পুকুরের পাড়ে চলে যাই।কিছুক্ষণ বসে থাকার পর ছেলেটা আসে কিছু জুনিয়র ছেলেপিলেকে নিয়ে।আমি অবাক হই।কারণ সেখানে আমার মত এসএসসি পরীক্ষা দেবে এমন প্রচুর ছেলে আছে,কিন্তু একটাও বেরুচ্ছে না!পরে নিজের উপরেই রাগ উঠে।ভাবি,তারা কি আমার মত পাগল নাকি যে পরীক্ষার ১০ দিন আগে খেলতে আসবে?এত কিছু ভেবে মনটাই খারাপ হয়ে যায়।মনে হতে থাকে এখানে এসে ঠকেছি,না আসলেই পারতাম।

সেদিন কোনমতে খেলে বাসায় চলে আসি।এসে দেখি বাবা টিভিতে ক্রিকেট দেখছে।সেদিন সম্ভবত ভারত-শ্রীলঙ্কা খেলা হচ্ছিল।আমি সেটা দেখতে থাকি।কিন্তু বেশিক্ষণ পারি না,মা এসে উঠিয়ে দেয়।বলে সেই কথা যা আমি অপছন্দ করি, “পড়তে যাও।”


(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১০:২২
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সাধু সাবধান! দেশে অপরাধ বৃদ্ধির পেছনে পলাতক আওয়ামী ফ্যাসিবাদী অপশক্তি!

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৮ ই এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৩:০৬

সাধু সাবধান! দেশে অপরাধ বৃদ্ধির পেছনে পলাতক আওয়ামী ফ্যাসিবাদী অপশক্তি!

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদ কর্মসূচির মিছিল, প্রথম আলো অনলাইন থেকে সংগৃহিত।

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে চুরি, ডাকাতি, রাহাজানি, লুটপাট, ভাংচুর এবং বিভিন্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের কেটে কুচিকুচি-নিরাপত্তা চায় ভারত

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৮ ই এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


বর্তমানে ভারতে ওয়াকফ সম্পত্তির পরিমাণ ৮৭০,০০০টি যার আয়তন ৯৪০,০০০ একর বা ৩,৮০৮ বর্গ কিমি জমি জুড়ে বিস্তৃত এবং এস সম্পত্তির মোট মূল্য ১,০০,০০০ কোটি রুপি বা ১২ বিলিয়ন মার্কিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এইতো জীবন=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৮ ই এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৪:২০


অভিমানগুলো আর জমিয়ে রাখি না,
যে অভিমান কী দিন কী রাত
পীড়া দেয় অনবরত,
সে অভিমান কবিতার শব্দে ছুঁড়ে ফেলি।
আহ্লাদি আবেগ বুকের বামে জমা নেই আর,
অলস সময়গুলো আর ভাবনার বেড়াজালে
ছেড়ে দেই না,
কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিডনী রোগ নিয়ে ব্লগার গণ নিজেদের অভিজ্ঞতা ও সাজেশনস জানাবেন।

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ০৮ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৯:৩২






আমার খুব কাছের (রক্তের), বয়স ৪৭, একজনের কিডনী সমস্যা ধরা পড়ে গত বছর জুলাইয়ে,তখন ক্রিয়েটিনিন ছিলো ৪.৩৩ ; পরে শরীর খারাপ হওয়ায় মেডিকেল ভর্তি থেকে ঔষধ সেবন করে ক্রিয়েটিনিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

Fun Post : পহেলা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ না খেয়ে মরিচ ও ভর্তা খান ...... !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৮ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১০:৫৬


এমন মন্তব্য করেছেন বাংলার কাল মার্ক্স ফরহাদ মজহার সাহেবের স্ত্রী মৎস উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার। তিনি বরাবরই ইলিশ মাছের প্রতি বেশি যত্নবান। সাধারণ মানুষ যাতে বড়ো ইলিশ মাছ খেতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×