চৌধুরী সাহেব একজন শিল্পপতি, বিশাল ব্যস্ত মানুষ।
সকাল না হতেই গুরত্বপূর্ন মিটিং এ বের হয়ে পড়েছেন আজকে।
মিটিং সফল হয়েছে, খুশী মনে আরেকটি অফিসে যাচ্ছেন তিনি
রাস্তায় দেখলেন অনেক ভিড়, একটি গাড়ি দুজন পথচারীকে চাপা দিয়ে পালিয়ে গেছে। মানুষের ভিড়ে রাস্তা প্রায় জ্যাম লেগে আছে।
রাস্তায় জ্যাম এর কারনে দেরী হচ্ছে দেখে উনার মেজাজ পুরো গরম হয়ে আছে।
এমন সময় এক বৃদ্ধ এসে তাকে অনুরোধ করলো সেই দু'জন পথচারীকে একটু তার গাড়িতে করে হাসপাতালে পৌছে দেওয়ার জন্য। দু'জনই গুরতর আহত জলদি হাসপাতালে নিতে না পারলে বাচানো যাবে না।
বৃদ্ধের এই অনুরোধ শুনে চৌধুরী আর মেজাজ সামলে রাখতে পারলেন না। চেচিয়ে উঠলেন - ফুটপাথ দিয়ে হাটা এই সব লো-লাইফগুলোর জীবন বাচাতে আমি আমার দামী গাড়ি ময়লা করতে পারবো না। দূর হন আমার সামনে থেকে। বৃদ্ধ উনার ধমকের চোটে পালিয়ে বাচলেন।
জ্যাম থেকে অফিসে ফেরার পরপরই চৌধুরী সাহেবের মোবাইলে কল আসে। উনার স্ত্রী ও মেয়ে গুরতর আহত হয়ে হাসপাতালে। এখন ওটিতে আছে।
এই খবর শুনে চৌধুরী সাহেবের ব্লাড-প্রেশার বেড়ে যায়। তার স্ত্রী মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির মেয়ে। তার অনেক অনুরোধ সত্ত্বেও ও গাড়ি ব্যবহার করে না। আজকে মেয়েকে স্কুল থেকে আসার পথে একটি গাড়ি ওদের চাপা দিয়েছে।
রকেটের গতিতে চৌধুরী হাসপাতালে পৌছলেন। যেয়ে দেখেন অপারেশন এখনো শেষ হয়নি।
অপারেশন শেষ করে ডাক্তার বের হয়ে চৌধুরী সাহেবকে বল্লেন এবারের মত উনারা বেচে গিয়েছেন। চৌধুরী সাহেব ডাক্তারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানানোর পরে যাক্তার উনাকে বল্লেন, "আমাকে না ওয়েটিং রুমে বসা ভদ্রলোককে ধন্যবাদ দিন, উনি সময়মতো আপনার পরিবারকে হাসপাতালে না আনলে হয়তো কাউকে বাচানো যেতো না"
ওয়েটিং রুম এ ডুকে ভদ্রলোককে দেখে চৌধুরী সাহেবের চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়, উনিতো সেই লোক যে উনাকে রাস্তায় অনেক অনুরোধ করেছিলো আহত দুজন পথচারীকে হাসপাতালে নিয়ে আসার জন্য। চৌধুরী সাহেবের চোখ জাপসা হয়ে আসে, তিনি ধন্যবাদ জানানোর ভাষা হারিয়ে ফেলেন।
(ছবি গুলো ইন্টারনেট থেকে সংগৃহিত, কেউ যদি হাতে একে দিতে পারেনতো কৃতজ্ঞ থাকবো)
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:১৮