ব্যাপারটা গ্রামীনফোন প্রথম শুরু করেছিলো নাকি বাংলালিংক ঠিক মনে নেই, যেকোনরকম ভণ্ডামির অগ্রপথিক প্রথম আলো তারো আগে টুকটাক চালাতো,তবে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে এই দুই সেলফোন সার্ভিস প্রোভাইডার, কোন সন্দেহ নেই। "ব্যাপারটা" মানে হলো স্বাধীনতা দিবস, শহীদ দিবস, বিজয় দিবস এলেই আবেগী কিছু বিজ্ঞাপন দিয়ে জনগণের নাকের পানি চোখের পানি এক করে দেয়া এবং তার সাথে নিজেদের লোগো লাগিয়ে দেশদরদী প্রমাণ করার একটা চেষ্টা (নাকি অপচেষ্টা)। তা করতে থাকুক, আমাদের ধৈর্য বেশ ভালই,আবেগেরও কমতি নেই,এইসব বিজ্ঞাপন দেখে ২-৪টা লোকও যদি স্বাধীনতার মানে বোঝার চেষ্টা করে,মন্দ কি? তো,তাহলে এমন খেপেটেপে কীবোর্ড ধরার মানেটা কি? ধরা লাগতো না,কিন্তু মাঝে মাঝে নিরীহ বাঙ্গালিরও ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙ্গে,তখন একটু হইহল্লা করে রাগটা বের করে না দিলে আর চলে না,সেজন্য পয়সাও লাগে না।
এই মুহূর্তে গ্রামীনের ঐ বিজ্ঞাপনটার কথাই মনে পড়ছে বেশি,ঐ যে, মুক্তিযুদ্ধে ভাই হারানোর শোকে শোকার্ত এক বোন অনেক বছর পরে কেঁদেকেটে একাকার,দেখে তখন আমার চোখেও যে ২-১ ফোঁটা পানি আসেনি তা না। তবে ঠিক পরের মুহূর্তেই "ডিজুস দুনিয়ায় হারিয়ে যাও" ডায়ালগটা শুনে,আবেগটা মুহূর্তের মাঝেই বিবমিষায় পরিণত হয়ে গেলে কেউ অবাক হবেন না যেন। সারারাত ফ্রি তে কথা বলে,এর সাথে ওর সাথে এফএম বাংলায় ডিজুস আড্ডা মেরে শেষমেশ জটিল কিছু সম্পর্কের প্যাঁচ লাগিয়ে তারপরে মুক্তিযুদ্ধে ভাই হারানোর শোকের কথা তরুণ প্রজন্মের ঠিক মাথায় থাকে কিনা,যথেষ্ট সন্দেহ হয়,আমি আবার একটু সংশয়বাদী বটে।
তা গ্রামীফোন যা করবে বাংলালিংক তার পিছু ধাওয়া করবে না সেটা হতেই পারে না। কাজেই দৃশ্যপটে উদয় হলেন 'গুরু' আযম খান,সাথে ষাঁড়ের মত গলা নিয়ে আইয়ুব বাচ্চু। বন্দুকের সুর গীটারের সুর মিলিয়ে এক জটিল প্যারোডি বানিয়ে আবেগে মাখামাখি অবস্থা,তাও হজম করে নেয়া গেল। কিন্তু 'মুজিব' কাব্যগ্রন্থের রচয়িতা নির্মলেন্দু গুন আর 'মা' উপন্যাস লিখে শ্রদ্ধা কুড়ানো আনিসুল হক যখন ফুল নিয়ে কৃত্রিম আবেগে গদগদ চোখে শহীদ মিনারের দিকে তাকিয়ে থাকেন আর পরবর্তী শটে বাংলালিংকের অকৃত্রিম শ্রদ্ধাসম্বলিত স্লোগান ভেসে ওঠে,তখন ঠিক খেপে যাওয়ার ভাষাটাও পাই না,দেশপ্রেম আর আবেগের সংজ্ঞা নতুন করে শেখার চেষ্টা করি। টাকার অংকটা অবশ্য বিশাল এবং লোভনীয় ছিল,প্রথম আলোর সাথে এক একান্ত সাক্ষাৎকারে গুণদা নিজেই স্বীকার করেছেন।
ইদানিং গ্রামীনফোনের সেই ভাই-বোন আবার নাক জাগিয়েছে, সাথে আবার নতুন একটা বিজ্ঞাপন,একাত্তরের চিঠি। খুবই ভাল উদ্যোগ, সন্দেহ নেই। প্রশংসা করতাম,যদি ঠিক এরপরেই কয়েকটা বহুতল বাড়ির ছাদে আর ট্রাকের উপর একপাল উদ্ভট পোশাকের ছেলেমেয়ে ততোধিক উদ্ভট বাংলা উচ্চারণে কি যেন একটা কিছুতে সাড়া দেবার জন্য ষাঁড়ের মত চেঁচাতে থাকতো। ঠিক তারপরেই নাক জাগাবে ভার্সিটি ফেরত এক তরুণী,এসেই ব্যাগটা কোনমতে ছুঁড়ে ফেলেই মোবাইলটা নিয়ে বসে যাবে,ডায়াল করবে একটা বিশেষ নাম্বারে, তারপরেই মুখোশ পরা অজানা একদল বন্ধুবান্ধব ডাকতে থাকবে, এসো হে বন্ধু,এসো এসো। একেকজনের একেক গুণ,কেউ গানবাজ,কেউ শাড়িতে পরমাসুন্দরী,কেউবা বলবে তার সুন্দরবনের ভ্রমণকাহিনী। তোমাকে শুধু সব কাজকর্ম বাদ দিয়ে দিনরাত বন্ধু,আড্ডা,গান চালিয়ে যেতে হবে,দীনদুনিয়ার আর কোন খবর রাখার দরকার নেই। সন্দেহ নেই,গুনদা'র বুড়ো আর আনিসুল হকের গুঁফো চেহারার চেয়ে তিন্নি আর মোনালিসার রঙিন নাচাগানাই তরুণ প্রজন্ম বেশি খাবে,ঠিক যেমন একাত্তরের চিঠি দেখেই ডিজুস বাংলার আহ্বানে মেতে গিয়ে ঐ চিঠির মর্ম উদ্ধারের আর সময় হবেনা কাঁধে ব্যাগ ঝুলানো জেনারেশন নেক্সটের।
কর্পোরেটরা ব্যাপারটাকে ঠিক কিভাবে ব্যাখ্যা করে? তাদের ভাষায় এইসব বিজ্ঞাপন অনেকটাই "কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি",আমি অবশ্য নিশ্চিত নই এ ব্যাপারে,তবে আপাতত সেরকমই দেখায়। দেশ,দশ ও জাতির প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই গ্রামীনফোন এদেশের জনগণ ও ইতিহাসের পাশে ছিল,আছে ও থাকবে এমন ২-১ টা বক্তব্য শুনেও থাকতে পারি কোথাও,বাংলালিংক তো একেবারে দিনবদলের সারথী। মেনে নিলাম,বেকুব বাঙ্গালিদের পকেট কেটে নিজের জেব ভারি করা ফোনওয়ালারা খানিকটা গরু মেরে জুতা দান করতে চাইছে,কিন্তু সন্দেহবাদী মনে আরেকটু কুতর্ক উঁকি দেয় মাঝে মাঝেই। এই যেমন,ক'দিন আগেই টিএসসিকে সাজিয়ে দেয়ার নাম করে পুরো টিএসসিকেই নিজেদের বিজ্ঞাপন বিলবোর্ড বানিয়ে ফেলতে চেয়েছিল গ্রামীনফোন,আহা,কত দরদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা ব্যাপারটা মেনে নেবে এমন দুঃস্বপ্ন দেখার দিন এখনো আসেনি,কাজেই তাদের ধাওয়া খেয়ে গ্রামীন আর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উভয়েই পিছু হটেছে। বুয়েটের শিক্ষার্থীদের মনে হয় অত মাথা ঘামাবার সময় নেই,কাজেই একটা ল্যাবরেটরি সেটআপ করে দেয়ার নাম করে হুয়াই মোটামুটি আস্ত একটা ল্যাবই দখল করে ফেললো বুয়েটের। তড়িৎকৌশলের ছাত্রদের কতটা লাভ হয়েছে সেটা তারাই বলতে পারবে (তথ্যে ভুল থাকলে সংশোধন করে দেয়ার অনুরোধ থাকলো), তবে হুয়াই যে তাদের কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য বুয়েটের অবকাঠামো ব্যবহার করার একটা চমৎকার সুযোগ বুয়েটের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে করে নিলো,সেটা বোঝার মত বুদ্ধি বুয়েট কর্তৃপক্ষের ছিলই না,নাকি গুণদা'র মতই টাকার গুণ দেখে তারা মুগ্ধ হয়েছেন,বলা মুশকিল।
ব্যাপারটাকে আরেক দিক থেকে দেখা যাক একটু। স্বাধীনতা,ক্রিকেট আর ফুটবলের পাশে দাঁড়ানো,দিনবদল,এই জাতীয় বড় বড় কথা দিয়ে আমাদের ব্রেইন ওয়াশ করা হচ্ছে কি? মানে,এভাবে দেখা যাক,আমরা কি অবচেতনেই অনেকে এভাবেও ভেবে ফেলি না যে যারা স্বাধীনতা যুদ্ধ আর একাত্তরের চিঠি নিয়ে এতগুলো ভাল কথা বলে,যাদের হয়ে আনিসুল হকের মত দেশবরেণ্য লেখক আর গুণদা'র মত কবি জলে চোখ ভেজান শহীদ মিনারের সামনে দাঁড়িয়ে,হয়তো তাদের ডিজুসের তালে নেচে ওঠা আর কমলা রঙে মন রাঙিয়ে ভাল থাকার মানেই হলো এগিয়ে যাওয়া? শেষমেশ সামাজিক বা ৭১ এর বার্তাগুলো কিন্তু তরুণ মনে চাপ ফেলেনা,সানগ্লাস পরা চোখে অনেক বেশি আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে স্কিনটাইট জামা আর হাঁটু উঁচানো জিন্সের তরুনী গার্লফ্রেন্ডের স্বপ্ন, "করসো, খাইসো,দেখসো,হাউ ফানি,কুল ডুড" ধরণের এফএম বাংলার কাছে রবিঠাকুর আর নজরুলকে মনে হয় নিতান্তই ব্যাকডেটেড বুড়োদের মাল। স্বাধীনতার বার্তা সামনে দিয়ে তারা জায়েজ করে ফেলে একটা প্রজন্মকে ধ্বংস করে দেয়ার সফল একটা মিশনকে, সারারাত টেলিকনফারেন্স আর ভয়েস চ্যাটে ব্যস্ত কিশোরীর সকাল কাটে ঘুমের ঘোরে,বিকাল কাটে এফএমের মূর্ছনায় আর সন্ধ্যায় তার আঙুল ব্যস্ত থাকে রাতের পরিচিত অতিথির পানে ফ্রি এসএমএস ছুঁড়ে দেয়ায়।
খুব বেশি ভুক্তভোগী না হলে অবশ্য আমাদের গলা বা কলম,কোনটাই ওঠে না,নিজেও যে তার ব্যতিক্রম তা না। নিজেদের আত্মীয়পরিজনের মাঝেই এক প্রজন্ম ব্যবধানের ছেলেমেয়ে আছে,মোটামুটি আতংকের সাথে গত ২-৩ বছরে তাদের মাঝে জাদুকরী পরিবর্তন খেয়াল করা যাচ্ছে। যে কাজিনটা আগে মাঝে মাঝে ভুল করে হলেও ২-১ টা গল্পউপন্যাসের বই নিয়ে ঘণ্টা পার করতে পারতো,এখন বইগুলোর দিকে ফিরেও তাকায় না। বড় ভাইবোনরা যখন আখতারুজ্জামান ইলিয়াস না হোক অন্তত হুমায়ুন আহমেদের ব্যবচ্ছেদ করতে ব্যস্ত,তখন তাদের আলোচনার একমাত্র,আবারো বলছি,একমাত্র বিষয়বস্তু হয়ে দাঁড়ায় গ্রামীনের ফ্রি মিনিট আর বাংলালিংকের ফ্রি মিনিটের মাঝে কোনটা লাভজনক,অমুক কোম্পানির টেলিকনফারেন্স ভালো নাকি তমুকের ভয়েস চ্যাটে সুবিধা বেশি,ওমুকে তো নতুন একটা সেট কিনেছে সেটা অনেক সুন্দর,জানিস আমার সেট টায় এভাবে এভাবে এইসব করতে হয়,আরে ঐ নতুন ছেলেটা এত্ত কিউট করে কথা বলে,একদম ডিজে লিমনের মত,উহ ডিজে ফারিয়া কিভাবে যে অমন করে কথা বলে,যা হট লাগে শুনতে,ওর মত পারলে কিন্তু আজকেই ফোনে ছেলেটাকে পটিয়ে ফেলতাম বুঝলি! ওল্ড জেনারেশনের বেকুব আমি শুধু হাঁ করে শুনেই যাই,ভাবি একসময় এই আলোচনা শেষ হয়ে অন্য দিকে যাবে,কিন্তু শেষ আর হয়না। কিছু বলতে গেলে ধাতানি খাই,তোমরা কিচ্ছু বুঝোনা বুঝলা? মাথা নাড়ি, হয়তো আসলেই অচল হয়ে গেছি,অথবা খুব দারুণভাবে অচল করে দেয়া হচ্ছে,আমাদের,আমাদের স্বপ্ন বয়ে নিয়ে যাওয়া পরের প্রজন্মটাকেও। হয়তো খুব বেশি শংকিত হয়ে যাচ্ছি,কিন্তু এই ডিজুস জেনারেশন রুবাবা মতিন আর আসিফ ইকবালের মত কিছু নষ্ট মানুষের পাল্লায় পড়ে অনেক অনেক এগিয়ে যাওয়ার যে উন্মাদনায় নিজেদের ভাসিয়ে দিচ্ছে,তার শতভাগের একভাগ উন্মাদনাও কি স্বাধীনতা আর মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এদের মাঝে আছে? এদের মাঝে কতজন শুনেছে অপারেশন সার্চলাইটের সেই কুখ্যাত অডিও টেপ? কতজন জানে মধুদা'র নাম? একুশের সকালে সাদাকালো'র বাহারি শাড়ি-পান্ঞ্জাবিতে যারা খিলখিলিয়ে ডেটিংয়ে বের হয়,তাদের ঠিক কতজন জানে সালাম-বরকত-রফিক-জব্বারের রক্তের দামে পাওয়া এই শহীদ দিবস আসলে শোক দিবস? একজন জীবনানন্দের রূপসী বাংলাকে কয়জন দেখেছে দিনবদলের বাংলালিংকের মাঝে? ঘুম নেই খাওয়া নেই,একটা সৃষ্টিশীল কাজ নেই,কবিতার লয় নেই,পৃথিবীর খবর নেই,যুদ্ধে কে কবে মরেছিল অত কিছু জানার সময় আছে নাকি? কুল ম্যান,এগিয়ে যাও,ওদের মত হতে হবে,একটা লেটেস্ট মোবাইল,হট কিছু বন্ধুবান্ধব,হালফ্যাশানের জামা,রাতভর ডিস্কো,ইয়াও ডুড,লাইফে আর কি চাই? এনজয় ম্যান,এনজয়!
তা ওরা এনজয় করছে বটে। আমাদের মত কিছু ব্যাকডেটেড লোকজন মাঝে মাঝে হতাশায় মাথা নেড়ে বলে বটে যে--"রুবাবা আর আসিফ ইকবালরে রাস্তায় নামায়া পিটানি দরকার"-- কিন্তু আদতে সেটা যে সম্ভব না আমরাও জানি। কাজেই আমরা আসলে হেরেই যাই,আমাদের সবকিছু নিয়ে এই মশকরা দেখে আমরাও নাচি বইকি। এই তো,আরেক দিন বদলের কারিগর,এক কালের বামপন্থী মতিউর রহমানের প্রথম আলো,তাদের তামাশা দেখেও আমোদ পাই বড়। মঙ্গলবারে 'নকশা' নামে একটা বেহুদা পাতা বের করে,রাজ্যের ফ্যাশান আর হেনোত্যানো কি কি যেন থাকে,এরা আবার ফেব্রুয়ারি,মার্চ আর ডিসেম্বরে বিশেষ সক্রিয়। লাল-সবুজ দিয়ে টিশার্ট,অমুক শিল্পীর আঁকা ক-খ-গ-ঘ-ঙ শাড়ি,সালোয়ার-কামিজে রবীন্দ্রনাথ। হায় গুরু!হায় গুরু!! এমন জানলে কি বুড়ো দাদু ঐসব কবিতা লিখতেন? কে জানে, হয়তো রবিবুড়োকেও দেখা যেত হাইহিল তরুণীর বগলদাবা হয়ে হাসিমুখে কবিতা আওড়াতে,তোমারো হিয়ার মাঝে লিখিনু পদ্য,ধন্য হইলো মম জীবন। শালার দুনিয়ার সুখ,ওনলি অন মাই ডিজুস, রবিঠাকুর কি আর সুখ চাইতেন না?
তা এ পর্যন্তও হজম হচ্ছিলো,কিন্তু আজ দেখি নকশার শেষ পাতায় দেয়া কতকগুলো খাবারের রেসিপি,শিরোনাম হলো--"লাল-সবুজে রাঙিয়ে তুলুন খাবার টেবিল" বা এমন কিছু একটা। খাবারগুলো কে লাল টমেটো আর সবুজ কাচামরিচ দিয়ে বোধকরি পতাকা বা এমন কিছুর অনুভব দেয়ার চেষ্টা,যার মস্তিষ্ক থেকে এসেছে সে-ই বলতে পারবে কিভাবে কি। দেখে শুরুতে চড়াক করে মাথায় রক্ত উঠে গেল,তারপর খানিক ঝিম মেরে থাকলাম, শেষে পত্রিকাটা ছুঁড়ে ফেলে উঠে পড়লাম। বলি স্বাধীনতা কি খেয়ে ফেলার জিনিস রে? বিজ্ঞাপন আর কাপড়চোপড়ে ঢুকিয়ে শান্তি হয়নি, কবে দেখা যাবে বাংলাদেশের পতাকা লাগানো আন্ডারওয়্যারের নকশাও দেখিয়ে ছাড়বেন মতি মিয়ার বাহিনী,কিন্তু খেয়ে ফেলাটা কি খুব জরুরী ছিল? হয়তো ছিল,ভেতরে ভেতরে তো খেয়ে দিচ্ছেই,নাহয় এবার থেকে সামনেই খাবে মূল্যবোধ,চেতনা নামের বড় বড় শব্দগুলোকে। হয়তো এই আমাদের নিয়তি,খুব সহজেই আমরা ভুলে যাই,বড় কম দামে আমরা বিক্রি হয়ে যাই,বুকের ভেতরে বাংলাদেশ না নিয়ে আমরা তো শাড়ির আঁচলেই নিয়ে ঘুরবো।
বেশ ২-৩ বছর আগে,কোন এক নেট বন্ধু প্রশ্ন করেছিল,আচ্ছা ঐ যে নতুন "আমরা বাংলাদেশী" লেখা রিস্ট ব্যান্ড বের হইসে,কিনসো নাকি? খুব বেশি অহংকারে মেসেন্ঞ্জারের জানালায় একটা রূঢ় জবাব ছুঁড়ে দিয়েছিলাম-- "আমার হৃদয়ে বাংলাদেশ,হাতের ব্যান্ড লাগে না।"
ভয় হয়,আমার সন্তানও কি একইভাবে কথাটা বলতে পারবে একই ঔদ্ধত্য নিয়ে?
সবাইকে স্বাধীনতা দিবসের প্রাণঢালা শুভেচ্ছা।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মার্চ, ২০০৯ ভোর ৪:০১