একজন সন্তান হিসাবে আমি চাইনা আর কোনদিন আমার বাবা দগ্ধতার যন্ত্রনা সহ্য করতে না পেরে আমার কাছে মৃত্যু ভিক্ষা চাইবে।
- এটা ছিলো তাদের প্রতিবাদের পেছনের মূল কারণ।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে সংহিসতাগুলো হচ্ছে দেশব্যাপী সেগুলো নিয়ে কোন সুশীল, কোন রাজনীতিবিদ স্বার্থ ছাড়া কোন কথা বলেনি। তারা বলেছিলো। তাদের হাতে বিশেষ কোন ক্ষমতা নেই। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট মাত্র। তবুও তারা কোন স্বার্থ ছাড়াই একসাথে হাত মিলিয়ে রাস্তায় নেমেছিলো এই সহিংসতার বিরুদ্ধে কথা বলতে। তারা কোন জ্বালাও পোড়াও করেনি, কাউকে মারেনি, কারো কোন ক্ষতি করেনি। তারা কথা বলেছিলো অন্যায়ের বিরুদ্ধে।
প্রতিবাদের নাম ছিলো - বিদ্রোহ। উদ্দেশ্য ছিলো অন্যায়ের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন।
কোন নায়িকা কোন মডেলকে ফেসবুকে কটুক্তি করেছে, কোন নায়কের পেট খারাপ সেটা এই দেশের পেপারগুলোর নিউজ হয়। কিন্তু তাদের এই প্রতিবাদ কোন টপরেটেড পেপার কাভার করেনি। ফেসবুকের পেইজেও তেমন কেউ সাড়া দেয়নি।
কিন্তু তারা পাশে পেয়েছিলো রাস্তার বয়ো:বৃদ্ধ মানুষটাকে যে বলেছিলো, "হগল দলর বিরুদ্ধ নামস, আমি তোমরার লগো আছি, আমার নামটাও যোগ কর, আমার নাম হান্নান মিয়া।"
যারা বাসে জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে তাদের কেউ এরেস্ট করেনি। যারা হিন্দুদের উপর সাম্প্রদায়িক হামলা চালিয়েছে তাদের নাম পর্যন্ত পুলিশ জানেনা। অথচ এই চারজন ছাত্র, যারা সাহসের সাথে চুপচাপ নিজেদের নাম পর্যন্ত পাবলিকলি এক্সপোজ না করে রাস্তায় নেমেছিলো অহিংস কর্মসূচী নিয়ে তাদেরকে পুলিশ এরেস্ট করেছে আজকে।
চমৎকার।
তাদের দোষ ছিলো খুব সম্ভবত একটাই। তাদের ওয়েবসাইটে কোন রাজনৈতিক দলকেই তারা ছেড়ে কথা বলেনি।
আপনাদের স্যালুট। আপনাদের সাথে আছি। কারণ হাতে অস্ত্র ছাড়া অন্যায়ের বিপক্ষে দাড়ানোর সাহস সবার থাকেনা।
এই চারজনকে আপনি পাত্তা নাই দিতে পারেন, পাগল, রক্ত-গরম বলে খেদিয়ে দিতে পারেন। কিন্তু মনে রাখবেন এরা আপনার জন্যই রাস্তায় নেমেছিলো।
বিশ্বাস না হলে তাদের এই স্মারকলিপিটা পড়ে দেখুন।
আফসোসের ব্যাপার এই যে, দেশে পরিবর্তন আনার নামে রাজনীতির নামে মানুষ মারলে কোন দোষ নাই, পঙ্গু বানিয়ে দিলে দোষ নাই। কিন্তু অহিংসভাবে অন্যায়ের প্রতিবাদ করলেই গ্রেপ্তার। তো আর কি? আসেন মানুষ মারি, আগুনে পুড়াই। দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করি।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:১২