মাথায় প্রচন্ড ব্যাথা নিয়ে জ্ঞান ফিরলো......
চোখ খোলার পর চারপাশে তাকিয়ে কিছুটা দ্বিধা-দ্বন্দে পড়ে গেলাম। কনফিউশান লাইক হেল। আমার নীচে মোলায়েম গদির একটা বিছানা। মাথার নীচে নরম তুলতুলে একটা বালিশ। এসির বাতাসে গা জুড়িয়ে যাচ্ছে। পরিপাটি করে সাজানো একটা রুমে আমি নবাবের মত শুয়ে আছি। উঠে বসলাম। সর্বহারাদের এভাবে আয়েশ করা মানায় না।
আমি একটা কুকুর। লাথি খাওয়া কুকুর। ইউজড এন্ড ফাকড টোটালি। যে যখন যেখানে পেয়েছে, যেভাবে পেরেছে ইউজ করেছে, আমার অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে সুখে মেতেছে। আমি কুকুর ছিলাম, কুকুর আছি, ভবিষ্যতেও থাকবো। বিষাক্ত নখের থাবায় উড়িয়ে দেবো সব। হা হা হা। দেয়ার উইল বি এ কাপ অফ ডগি শিট ইন ইউর শোকেস। ইউ উইল ওয়াচ ইট, স্মেল ইট এন্ড দেন টেস্ট ইট। টেস্ট টু ডেথ।
শরীর খুব ক্লান্ত। নিজেকে বেশ পবিত্র মনে হচ্ছে। শার্টের হাতায় রক্ত দেখে আতকে উঠলাম। গত রাতের কথা মনে পড়ে গেল। ঘটনাবহুল একটা রাত। পূণ্যের রাত। হলি নাইট উইথ হলি ব্লাড। উফফ জেনী.... হারায়া গেলা এভাবে? হোয়াই? জেনীর কথা মনে পড়তেই বুকে একটু ব্যাথা অনুভব করলাম। বড় বেশী ভালবাসতাম ওকে। জেনীও আমাকে ভালবাসত। কিন্তু আমি প্রমাণ দিয়েছি, ও দিতে ব্যর্থ হয়েছে। খেলা। জীবনটা একটা খেলা। এ খেলায় জেতার জন্য প্রমাণ লাগে। যে ভাল খেলবে সে জিতবে। আমি ভাল খেলেছি, জিতে গিয়েছি। একাই। জেনী খেলেছে ওর হাজবেন্ড নিয়ে। তবুও ভাল খেলতে পারেনি। হেরে গিয়েছে।
বাট হোয়াই আই এম হিয়ার? এখানে আমার কি? কে আমাকে এখানে আনলো? একটা শাওয়ার নেয়া দরকার। হট শাওয়ার। বাথরুমটা ঘরের ওপাশে।
শাওয়ার নিয়ে ফ্রেশ হয়ে রুমে ঢুকে দেখি টাকমাথা একটা লোক আমার বেডে বসে আছে। চুরুট টানছে। চুরুটের গন্ধ খুব ভালো লাগে। জেনী আমার বার্থডেতে এক ক্যান গিফট করেছিলো। বড় ভালো জিনিস। টাকমাথার পাশে দুটা লোক হাতে শটগান নিয়ে দাড়ানো। এরা কে রে বাবা? বডিগার্ড নাকি? হা হা, এই টাকলুও আমাকে ভয় পেয়ে গেছে। ধীরে সুস্থে গিয়ে টাকলুর সামনে একটা চেয়ার টেনে বসলাম। টেবিল থেকে একটা চুরুট নিয়ে মুখে গুজলাম। আজ থেকে সিগারেট বাদ। খালি চুরুট খাবো।
বাথরুমের আয়নায় চেহারাটা অনেক বিভৎস লেগেছে। ডানগালে শালারা কি দিয়ে যেন পোচ দিয়ে মাংস তুলে নিয়েছে। ভুতের মত লাগছে।
- “হাই নিক, কেমন আছো?”
শালা আমার নাম জানলো কিভাবে? জবার দেয়ার পরমুহূর্তেই টাকলু পকেট থেকে কি জানি একটা বের করলো। ভালমত তাকিয়ে দেখি আমার ডায়রীটা। সুখ দু:খের সাথী, প্রমাণ। আমি জিজ্ঞেস করতে যাব যে, সে কেন আমার পার্সোনাল ডায়রীটা নিল তখনি আমাকে থামিয়ে দিল। সান অফ এ বিচ।
টাকলুর সাথে প্রায় দু ঘন্টা কথা হলো। হারামী বড়সড় বিজনেসম্যান। মালদার পার্টি। জেনীর হাজবেন্ডকে খুন করার সময় থেকে এর একটা লোক আমাকে ট্র্যাক করছিলো। সারারাস্তা আমাকে ফলো করেছে। আমি টেরই পাইনি। থুতু মারতে ইচ্ছা করছে আমাকে। চরম বিরক্ত লাগছে। কিন্তু বিরক্তি প্রকাশ করলাম না। তাহলে রেগে যাব। মাথা গরম করা যাবেনা আর। কথাবার্তা শেষ হবার পর ডিল ফাইনাল হলো।
ডিলটা তেমন কিছু না। কয়েকটা মার্ডার করতে হবে আমাকে। বিভিন্ন দেশে। আমাকে সব অ্যামুনিশন দেয়া হবে। প্রত্যেক দেশে সরকারী কিছু লোক আমাকে সাহায্য করবে। ভিকটিমের লিস্টে কয়েকজন নারীও আছে। তাদেরকে খুন করার আগে রেপ করার পারমিশনও দেয়া হয়েছে আমাকে। প্রচুর টাকা দেয়া হবে আমাকে। সেই টাকা দিলে হাজারটা জেনী মিলবে। টোটাল ১৭ জনের নাম-ধাম দেয়া হয়েছে। প্রথম এসাইনমেন্ট লাস-ভেগাসে। এক ক্যাসিনোর মালিক। পরশু রওনা দেবো। কিন্তু হারামীর বাচ্চা আজব এক শর্ত দিয়েছে। আমার এই প্রিয় ডায়রীতে কিছু লেখা যাবেনা। কাজ সারতে হবে গোপনে। আমাকে তার লোকজন সব জায়গায় হেল্প করবে। উল্টাপাল্টা কিছু দেখলেই আমাকে শ্যুট করবে।
হা হা। শালা আমাকে গরু মনে করেছে। আমাকে শ্যুট করা এত সোজা? আর উল্টা পাল্টা কিছু কারার ইচ্ছাই আপাতত আমার নেই। আমার টার্গেট এখন হাজারটা জেনী।
প্রিয় ডায়রী তোমাকে বিদায়। আবার হয়তোবা লিখব কখনো। তবুও তোমাকে সাথে নিয়ে ঘুরবো। মিশনের হিসাব রাখতে হবে। আজ থেকে ডায়রী বাদ, সিগারেট বাদ। গালে কাটা দাগ, বুকে ক্ষত আর চোখের সামনে হাজারটা জেনীর জন্য আজ থেকে পথচলা। প্রত্যেকটা জেনী আমার ভালবাসা উপভোগ করার পরই আসল জেনীর কাছে চলে যাবে। ওদের বাচিয়ে রাখবো না। বাচিয়ে রাখলেই ধোকা দেবে। ধোকা খাওয়া যাবেনা।
মিশন লাসভেগাস স্টার্টস হিয়ার.............
এরপরে আর কিছু লেখা নেই ডায়রীতে। পরের সতেরোটা পাতায় লেখা মার্ডার -১, মার্ডার -২.. এভাবে ১৭ পর্যন্ত। এর পরেই প্রতিটা পাতায় লেখা জেনী-১, জেনী-২ তারপরে ক্রস। চারটা পাতায় বড় করে ক্রস আকা। নিকের করা চারটা মার্ডারের কমপ্লিশান।
ডায়রীটা ব্যাগে রেখে বসের দিকে তাকায় ইন্টারপোলের ডিটেকটিভ তিন্নী। তার উপর চার্জ পড়েছে নিককে ধরার। এই সিরিয়ার কিলার এখন পর্যন্ত ১৩ টা মার্ডার করেছে। ৯ টা রেপ এন্ড মার্ডার। কাল থেকে মিশন শুরু......
বাকীটা পরের পর্বে............
প্রথম পর্ব
দ্বিতীয় পর্ব