তহুরা আলীর মনে শান্তি নাই। মেয়েটার মাথায় যদি একটু বুদ্ধি থাকতো, পিছন থেকে তাকেই কেবল ঠেলতে হয়। সেই স্কুল/কলেজে থাকতে তাকেই বলতে হতো এই কর সেই কর, এখন দুই বাচ্চার মা হয়েছে এখনও তাকেই সেই একই কথা বলতে হয়। ছলাকলা অবশ্য ভালই পারে, বান্ধবির বাবাকে পটিয়ে পূরো হস্তগত করা তো চাট্টিখানি কথা না। কিন্তু নিজে বুদ্ধি করে যে কিছু করবে তা না। এই সেদিন জেএফকে এয়ারপোর্টে সব গুবলেট পাকিয়ে ফেলছিলো। তিনি সময় মতো ব্যাপারটা হ্যান্ডেল করতে পেরেছিলেন বলে রক্ষা। তিনি মরলে যে এই মেয়ে কি করবে আল্লাহ-ই জানে। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলেন তহুরা আলী।
- কুসুম ! এই কুসুম !!
- আসছি মা। বলো কি বলবে।
- তুই এরকম হয়ে আছিস কেন ? একটু সাজগোজ করতে পারিস না!
- মা, কি যে বলো না।
- তোর যা বুদ্ধি। এমন কি বয়স হয়েছে তোর। সামনে তো পূরো জীবনটাই পড়ে আছে।
একটু দম নিলেন তহুরা আলী।
- হ্যারে, মাজহার ছেলেটাকে দেখি না আজকাল। তোর খোঁজ খবর নেয় ? আমার কিন্তু বেশ লাগে ছেলেটাকে।
- ছেলে !?! তুমি ছেলে বলছো বলছো কেন মা। ওটা তো বুড়ো ব্যাটা একটা।
- তোর যা বুদ্ধি। পূরুষ মানুষের আবার বয়স কি। একটু মাথাটা খাটা বুঝলি। সামনে বইমেলা আসছে।
- মানে ?
- ছেলেটাকে আসতে বল আজ সন্ধ্যায়।
- আজকে ?
তহুরা আলী এবার মেয়ের চোখে চোখ রেখে বললেন
- হ্যাঁ। আজকেই। আমি তোর দুই ছেলেকে নিয়ে বেড়াতে যাচ্ছি। রাত দশটার দিকে ফিরবো।
কথাটা বলার সময় তহুরা আলীর বাম চোখটা কি একটু ছোট হয়ে গিয়েছিলো - কে জানে।
ক্রিং ! ক্রিং !! ক্রিং !!!
এই ভর দূপূর বেলায় আবার কে ফোন করলো। একটু বিরক্ত হয়েই ফোনের রিসিভারটা হাতে নিলেন মাজহার।
- হ্যালো। মাজহার বলছি।
- কেমন আছো মাজহার ? একদম কোন খোজ খবর নাও না আমার ?
- ও ভাবী! কেমন আছেন ?
- ভাবী ভাবী করবা না তো। নিজেকে কেমন ভারিক্কি লাগে। আমাকে কুসুম বলে ডাকবা এখন থেকে। আর তুমি করে বলবা বুঝছো।
- জ্বি আচ্ছা। (একটা ঢোক গিললো মাজহার)
- আবার আপনি!!!
- ঠিক আছে ! ঠিক আছে !!
- আজ সন্ধ্যায় কি করছো ? চলে আসো না 'দখিনা হাওয়া'য়। আমার খূব লোনলি লাগছে।
- কেন তোমার আম্মা আর বাচ্চারা ... কথাটা শেষ করলো না মাজহার।
- ওরা বাইরে গেছে বেড়াতে। দশটার আগে ফিরবে না। আসো না, প্লিজ।
- ঠিক আছে। সন্ধ্যা সাতটায় ....
- হুম।
To Be Continued
[এই গল্পের ঘটনা এবং চরিত্র সবই কাল্পনিক। বাস্তবের কোন ঘটনা বা চরিত্রের সাথে সাদৃশ্য নিতান্তই কাকতাল]
ছবিওয়ালার রোজনামচা 'য় একই সাথে প্রখাশিত
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুলাই, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৩১