মানুষের জীবনের বিয়ের মূল্য কত তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিয়েকে সুন্নত করা হয়েছে। যথাযথ প্রক্রিয়াই বিয়ের মাধ্যমে বৈধ প্রজন্মের ধারা অব্যাহত থাকে। বাসায় অন্য জায়গায় বিয়ে দিতে চাচ্ছে। তখন মেয়ে এসে প্রেমিককে বলে বসছে চলো আমরা বিয়ে করি ফেলি। এটা অতীব সাধারণ ঘটনা যা আমাদের গোচরে অগোচরে প্রত্যহ ঘটছে। যখন ঘটে অনেক সময় তখন জানা যায় না। কেউ কেউ প্রকাশ করে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর। তখন গল্প গল্প লাগে ঘটনাগুলো। তারপরও সত্য সত্যই। হোক না গল্পের মত।
আরে কি লিখতে গিয়ে কি লিখে চলছি। যত্তসব। হা আজ বলব জীবনে প্রথম বিয়ের অফারের কথা। বাস্তবে আমার মত অপদার্থকে কেউ বিয়ের অফার দেবে এটা আমি কখনো ভাবি না। ইহা আমার জন্য স্বপ্ন হয়েই থাক।
আচ্ছা আসল কথায় আসি। ঈদ এদেশে সার্বজনীন অনুষ্ঠান। মুসলিমদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব হলেও অন্য ধর্মের লোকরাও এদিন আনন্দ করে। তা আমার বড় আপুর একটা বান্ধবীদের সার্কেল ছিল। যেখানে যাওয়া হোক না কেন পাঁচ বান্ধবী সঙ্গে যাবেই। আপুর বান্ধবীদের একজন ছিল সীমা নাম। অন্য ধর্মের। কিন্তু ঈদ উপলক্ষে প্রিয় বান্ধবীদের সাথে তিনিও নতুন কাপড় নিতেন।
তখন আমি তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ি। তা আপুর বান্ধবীরা ঈদের দিন আসলেন বেড়াতে। সামনের রুমে বসা। আমি বাহির থেকে আসছি। দেখি অনেক সাজগোজ করা কয়েকজন মেয়ে বসে আছে। সবাই শাড়ি পড়েছে দুইজন। একবার তাকিয়েই ভিতরে চলে যাইতে উদ্যোগ নিই। ওনাদের দেখে কেমন জানি লজ্জা লজ্জা লাগে। এর মধ্যে গেটে থাকতেই আমাকে ডাকেন তারা। আমি সে ডাকে সাড়া দিয়ে লজ্জার সাগরে ডুববো তা হয় না। জিজ্ঞেস করলো, কেমন আছো?
আমি লাজুক মুখে ভাল আছি বলে ভিতরে রুমে ঢুকতে মাত্র পা দিলাম দেখি সীমা আপু আমার ডান হাত ধরে ফেলছেন। সীমা আপু কালো রঙের একটা শাড়ি পড়েছেন। হাতে চুড়ি। অনেক সুন্দর ভাবে সেজে আসছেন। আপুটি এম্নে বেশ সুন্দর ছিলেন। তার উপর সাজ। অপূর্ব লাগছিল। একবার দেখেই কেন যেন লজ্জায় চোখ নামিয়ে ফেলি।
উনি আমার হাত ধরে আছেন। আমি চলে আসতে চাচ্ছি। কিন্তু উনি আসতে দেন না। আপুর অন্য বান্ধবীরা হাসতে হাসতে শেষ। আর বড় আপু তখন ভিতরে ব্যস্ত খাবারের বাটি গুলো ঠিক করতে।
একটু পর উনি সিরিয়াস ভঙ্গিতে বললেন, এই আমাকে বিয়ে করবে? পছন্দ হয় আমাকে? এত লজ্জা কিসের। আমার দিকে তাকাও বলে উনি একহাতে আমরা মুখটা উপর দিকে তোলার চেষ্টা করেন। কিন্তু পারেন না। আমি শক্ত করে মুখ নামিয়ে রেখেছি। ভাবটা এমন দেখলে যেন এখুনি বিয়ে করে বসতে হবে।
বিয়ের কথা শুনিয়া সেদিন পৃথিবীর সমস্ত লজ্জা যেন আমাকে গ্রাস করিল। আমি জোর করে ওনার হাত সরিয়ে নিয়ে চলে আসি।
তবে এটা মনে আছে সে অপার্থিব কথা শুনে অনেকক্ষণ মাথা ঝিম মেরে আছে। এটাই হচ্ছে জীবনে পাওয়া প্রথম বিয়ের অফার। স্মরণীয় তো বটেই।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ৯:৫৭