খবরে প্রকাশ, "বিএনপির মওদুদ আহমেদ" আশঙ্কা প্রকাশ করছেন, "দেশ গৃহযুদ্ধের দিকে চলে যাচ্ছে" বলে !! আমার ৪ রুমমেট ঘুমায়, আমি ঘুমাই, রুম থেকে বের হয়ে আশে পাশের কয়েক রুমের বাসিন্ধাদের ও দেখলাম ঘুমাইতে !! তবে কোন গৃহে যুদ্ধ লাগছে?? যুদ্ধ পূর্ববর্তী প্রস্তুতি কোন গৃহে হচ্ছে??? !!মাথায় খেলে না... !!
একটা জিনিস এখন সত্য, দেশের মানুষ মুড়ি বিক্রেতা থেকে শুরু করে বিজনেস ম্যাগনেট পর্যন্ত সবাই আজ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। কেউ আওয়ামী লীগ- কেউ বিএনপি। বিএনপির ভোট নেহায়েত কম নয়, এদের বেশিরভাগ ভোটার ই নীরব ভোটার। আজ শিক্ষক সমাজ, ছাত্র সমাজ, কুলি, মজুর, রিক্সাচালক, গার্মেন্টস মালিক সবাই আজ দুই ভাগে বিভক্ত। কিছুদিন আগে কুমিল্লায় এক চানাচুর মিক্রেতা কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, "আপনি কি শুধু এখানেই চানাচুর বিক্রি করেন?? ওইদিকে যান না??"
- কইলো, "ঐ এলাকার কমিশনার লীগের। এটা বিএনপির কমিশনারের এলাকা, আমি এখানেই বেচমু"!!!
দেশের মানুষ, মিডিয়া সবাই দুই ভাগে বিভক্ত। তাইলে কি গৃহযুদ্ধ আসন্ন???
নাহ আসন্ন না। সোজা বাংলায়, সহজ কথায় "কোন দেশে গৃহযুদ্ধ শুরুর আগে সামাজিক বৈষম্য প্রাধান্য পায়, শুধুমাত্র আদর্শিকতার দ্বন্দে কোন দেশে গৃহযুদ্ধ সম্ভব নয়। এখন একজন আওয়ামী সাপোর্টার রিক্সাচালক যে দামে চাউল কিনে, বিএনপি রিক্সাচালক বেশী দামে কিনে না। তাহলে এখন মানুষের মাঝে দ্রব্যমূল্যের উদ্ধগতি সহ নানাবিধ সমসসায় যে হতাশা আছে , ক্ষোভ আছে তার ফলশ্রুতিতে কি ঘটতে পারে?? বড় জোর চিমটি কাটা বা কাতুকুতু টাইপের একটা বিদ্রোহ ঘটতে পারে। পূর্বাপর যে সকল দেশে গৃহযুদ্ধ হয়েছে কিংবা চলছে, সে সকল দেশের গৃহযুদ্ধ পূর্ববর্তী অবস্থা পর্যালোচনা করলে দেখবেন- সে সকল দেশে সেনাবাহিনী স্পষ্ঠত দুই ভাবে ভাগ হয়ে গিয়েছিলো। আমাদের দেশেও কিছুদিন আগে এমন একটা আভাস পাওয়া গিয়েছিলো বেশ জোরেশোরে, বিশেষ করে বিডিআর বিদ্রোহের পর। বিডিআর বিদ্রোহ একটি বিশেষ দেশের আঙ্গুলির হেলনে ও তাদের গোয়েন্দা সংস্থার পরোক্ষ মদদ ও সহযোগিতায় হয়েছে এটা এখন দিবালোকের মতো সত্য। তবে এই সরকারের বড় ধরণের একটা সাফল্য হিসেবে আমি দেখি, সেনাবাহিনীতে এমন একটি বিদ্রোহ রুখে দেওয়া।
বিডিআর বিদ্রোহের পরপর ই সেনাবাহিনীতে "ধর্মীয় শিক্ষক"(সেনাবাহিনীর একটা স্পেশাল পোস্ট) দের মাধ্যমে সাধারন সৈনিক দের "ইসলামের আলকে সৈনিক জীবন""যুদ্ধের মাঠে সিনিয়রের নির্দেশ পালন""ইসলামের আলোকে সিনিয়ার জুনিয়র সম্পর্ক""নবীজি (সাঃ) এর সেনাবাহিনীতে সেনাপতির নির্দেশ" এমন হাজারো টপিকের উপরে নরমাল ট্রেনিং বাদ দিয়ে "মোটিভেশান ক্লাস" নিয়ে মগজ ধোলাই করে সাধারন সৈনিক দের শান্ত করা হয়েছে।
সরকার এটা সফলভাবে করার পরপরই কয়েকটা স্কেল বাড়িয়ে সেনাবাহিনীর সৈনিকদের বেতন ৫ বছর আগের তুলনায় প্রায় "দিগুন" করে দেয়।। এ ছাড়া সুযোগ সুবিধা প্রচুর বাড়িয়েছে। এখন একজন আর্মি ফিসার যেমন জেনারেটর সুবিধা পায়, তেমনি একজন সাধারন সৈনিক এর বাসাতেও কারেন্ট গেলে ২ টা লাইট-২ টা ফ্যান চলে জেনারেটর এ।।
রাশিয়া থেকে কিছুদিন আগে ৮ হাজার কোটি টাকার অস্ত্র কিনে সেনাবাহিনীকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটাকে সবাই বিরোধিতা করলেই আমি সাপোর্ট করি এবং এটা থেকেই আমার কাছে একটা জিনিস পুরোপুরি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, "বর্তমান সরকার গৃহযুদ্ধ কিংবা সেনা ক্যু এর ব্যাপারে খুবই সিরিয়াস এবং এটা ঠেকাতে সম্ভাব্য সকল প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। সবার আগে আর্মির মাথা ঠাণ্ডা রাখো নীতি ধরে রেখেছে..."
তবে মওদুদ সাহেব, এতদিনে ঝানু রাজনীতিবিদ- এতো বিজ্ঞ মানুষ কেন এমন কথা বলছেন??? সব ই রাজনীতি ।। এর আগেও ৯১, ৯৬, ২০০০ সব সময়েই নির্বাচনের প্রক্কালে সকল বিরোধী দল জু জু তুলেছিল(ইতিহাস তাই বলে) "দেশে যুদ্ধ লাগলো, লাগলো বলে..." এবং সেটা ভোটে কাজে লাগিয়েছে। গৃহযুদ্ধের আগে, সেনাবাহিনীকে স্পষ্টত দুইভাগে ভাগ হতে হবে এবং সেটা মনে হয়না এখন সম্ভব কোন উপাদানে।। সো, আমজনতা আপাতত বিনোদন দেখি দুই দলের
** আব্বু সেনাবাহিনীতে আছে, সেই অভিজ্ঞতা ঝেড়ে দিলাম।