১. আমার এক কলিগ অন্ধ আওয়ামী কর্মী ছিলেন। আমার কর্মজীবনে ২/৩ জন আওয়ামী সমর্থক পেয়েছি কিন্তু এই কলিগের মত সরাসরি রাজনীতি করা আওয়ামী লীগার কখনো পাইনি। তিনি এলাকার এমপি-র সাথে কাজ করতেন। স্বভাবতই ভয়, ভীতি, চাঁদাবাজি, মারামারি, মিছিল, মামলা সব কিছুরই অভিজ্ঞতা আছে। এরকম একজন ভদ্র মানুষ (অনেকটা দিনে চাকুরি, রাতে ক্যাডারগিরি টাইপ) কেন আওয়ামী লীগের মত একটা দল করতেন জিজ্ঞেস করাতে তিনি বলতেন, এলাকাতে টিকে থাকার জন্য…
২. উপরের সব বাক্যেই আমি ’অতীত’ কাল ব্যবহার করেছি। কারণ, জুলাইয়ের শেষ দিকে তিনি পরিবারের সদস্যদের কথায় ও বিবেকের তাড়নায় আওয়ামী লীগের কর্মসূচী থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন। ৩৬শে জুলাই বিজয়ের পর তিনি ছাত্র জনতার সাথে আনন্দ মিছিলে যোগ দেন, ছবি তোলেন, স্ট্যাটাস দেন। পরদিন থেকে অফিসে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের ধ্বংস কামনা করে কথা বলেন। মানে, এভাবেও ফিরে আসা যায়…
৩. জুলাই আন্দোলনে বিজয় আসবে সেটা মনে হয় না কেউই ভেবেছিল। জুলাইয়ের শেষ দিকে ফেসবুকে কোন একজনের স্ট্যাটাস দেখেছিলাম ’সময় থাকতে পক্ষ ত্যাগ করুন। নয়তো পরে বেঈমান হয়ে থাকবেন – এরকম কিছু লেখা। আমি নিজের অরিজিনাল আইডি প্রোপিক ’লাল’ করিনি, কোন রাজনৈতিক স্ট্যাটাসও দেইনি। কারণ, আমি ভীতু। তবে ফেক আইডি থেকে সরকার বিরোধী স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম। আমার বোন, বন্ধু কাজিনদের মত আমিও কেন নিজের প্রোপিক ‘লাল’ করলাম না এ নিয়ে আমার এখনো দুঃখবোধ আছে…
৪. ১৯৭১-এ জামায়াত সময় মত পক্ষ ত্যাগ না করায় আজো কলংক বয়ে বেড়াচ্ছে। হাসনাত, সারজিস সহ অনেক সমন্বয়ক এক সময় ছাত্রলীগ করলেও সময়ের প্রয়োজনে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। মিডিয়ার সব দাপুটে অভিনেতা, অভিনেত্রীরা যখন বিটিভি’র জন্য মায়া কান্না করছিল, তখন মোশাররফ করিম, বাঁধন রা ক্যারিয়ারের ঝুঁকি নিয়েই সরকারের সমালোচনায় রাস্তায় নেমেছিল। সময় মত পক্ষ ত্যাগ না করায় আজকে সোলায়মান সুখন, আফ্রিদি, রাফসানরা ঘৃণার পাত্র আর সালমান মুক্তাদির ভালবাসার। একই ভাবে ‘বঙ্গমাতা’ চরিত্রে অভিনয় করা তিশার স্বামী যিনি স্রোতের বিপরীতে সুশীলদের ভীড়ে আন্দোলনে সমর্থন করেছিলেন মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী এখন উপদেষ্টা…
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:১২