একদা একটি দেশে কিছু ব্যাঙ বাস করত। দেশটির নাম ব্যাঙ-দেশ। দেশটি ছিল সুজলা, সুফলা শশ্য শ্যামলা, কিন্তু তারপরো এর অধিবাসি ব্যাঙদের মনে সুখ ছিল না। কারন তাদের দেখভাল করার জন্য, রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য মনের মত কোন রাজা বা রাণী ছিল না।

তাই তারা ২৪টা ঘন্টা দন্ডমুন্ডের কর্তার কাছে ঘ্যানর ঘ্যানর করতে লাগল, হে দন্ডমুন্ডের কর্তা আমাদের মনের মত একজন রাজা বা রাণী দাও।সভ্য সব দেশে রাজা বা রাণী আছে শুধু আমাদেরই নাই।সবাই সমস্মরে চিল্লাতে লাগল, দাও দাও, দিতে হবে, হবেই হবে, ঘ্যাংগর ঘ্যাংগর ঘ্যান।


চিল্লা পাল্লায় অতিস্ট হয়ে দন্ডমুন্ডের কর্তা জিজ্ঞেস করলো, আরে কয়েকদিন আগেই না তোদের একজন বাশ রাজা দিলাম। ব্যাঙরা চেতে গিয়ে বলল ঐটাতো তত্তাবধায়ক বাশ, আমরা চাই গণতান্ত্রিক বাশ। সৃস্টকর্তাতো মহা ফাপড়ে পরলো। গনতান্ত্রিক বাশ কই পাই?
ঠিক আছে তোদের একটা কালা মহিলা বক দিলাম,নাম সাহারা বক এইটাই এখন তোদের রাণী, সে কিন্তু আয়রন লেডি, তারেই নিয়া সুখে থাক।


ব্যাঙরা বলল আচ্ছ ঠিক আছে, ঘ্যাংগর ঘ্যাংগর ঘ্যান।
ব্যাঙ-দেশের ঘরে ঘরে আজ খুশির জোয়ার নতুন রাণী, তাও আবার আয়রন লেডি।
কয়েকদিন পরই ব্যাঙদের আশাভংগ হইলো।নতুন রাণী কোন কাজই জানে না, সারাদিন এক পায়ে ঝিমায় আর তার কাছে কোন বিচার নিয়ে গেলে সে একটা কথাই বলে “কঠোর ব্যবস্থা উইদিন ৪৮ ঘন্টা”। কিন্তু সেই ৪৮ ঘন্টা আর শেষ হয় না, ব্যাঙদের ঘ্যানর ঘ্যানর করাও আর হয়ে ওঠে না। এর মধ্যেই গুজব ছড়িয়ে পরলো নতুন রাণী নাকি সুযোগ বুঝে দুই একটা ব্যাঙ খেয়েও ফেলে। এইতো কয়েকদিন আগে ইলিয়াস ব্যাঙকেও নাকি খেয়ে ফেলছে।

ব্যাঙদের এবার আর ধৈর্য রইলো না।তারা আবারো গেল দন্ডমুন্ডের কর্তার কাছে। কি রাণী দিলাগো কর্তা, সারাদিন ঝিম মাইরা বইসা থাকে, খালি একটাই কথা কয় ৪৮ ঘন্টা আর কঠোর ব্যবস্থা, কামের কাম কিছু করে না। সৃস্টিকর্তা বুঝলো ভোদাই কিছিমের কারো দাম ব্যাঙ এর দেশে নাই, তাই জিজ্ঞাসা করলো কিরকম রাণী চাস তোরা? ব্যাঙরা সমস্মরে বলল আপনার চয়েজ অনুসারে, আপনার মতই কাজ করে, শব্দ করে, আওয়াজ দেয় এমন রাণী।
দন্ডমুন্ডের কর্তা কইলো নে এবার তোদের রাজা দিলাম, এই রাজা জনতার মঞ্চে গিয়ে গান গায়, অতএব সে ঝিম মারবে না, এর ১৩ বছরের সাজা হইছে দূর্নীতির জন্য, কিন্তু কেউ তার টিকিটাও ছুইতে পারে নাই। এমন কর্মঠ, কর্মক্ষম, বুদ্ধিমানই তোদের জন্য উপযুক্ত রাজা, নে এবার, বাজা বাদ্য, কর ঘ্যানর ঘ্যানর ঘ্যান।


সবাই খুশি, ব্যাঙরা খুশি, দন্ডমুন্ডের কর্তারাও খুশি, খুশি খোদ কালা বক।কিন্তু খুশি হইতে পারলো না একজন, প্রিন্স অফ ব্যাঙ দ্বীপ। সে যে দূর থেকেই একটা শব্দ শুনতে পাইলো। ফোস ফোস একটা শব্দ।
নতুন রাজা মুখে যতই সুন্দর সুন্দর কথা বলুক, দন্ডমুন্ডের কর্তা যতই হাসি মুখ দেখাক, নতুন রাজার নিশ্বাসটা অবিকল দন্ডমুন্ডের কর্তার মতই, “ফোস ফোস, ফোস ফোস”। যেই শব্দটা একমাত্র ব্যাঙদের চীর শত্রু সাপের শব্দের সাথেই মিলে
(ব্যাঙ রাজার পরিচয় পড়তে পড়ুন Click This Link )
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১০:৩৭