somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

বন্ধু তুহিন প্রাঙ্গনেমোর
হৃদয় জুড়ে শতেক ফুটো খড়-কুটোতে ঢাকা-- জীবন যেন গত্তে পড়া গরুর গাড়ির চাকা--- তরল জলে সরল পুঁটি মনমোহিনী আঁশ--- এক ঝিলিকেই কী সুখ দিলো, সুখ যেন সন্ত্রাস!

স্টিফেন হকিংয়ের মৃত্যুর আগে মানুষের জন্য শেষ কথা ।

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



জীবনে কখনো কখনো এমন সময় আসে, যখন আমরা বুঝতে পারি, সব কিছু আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। আমার জীবনেও এমন একটা সময় এসেছিল।

একদিন হঠাৎই টের পেলাম, শরীরটা কেমন যেন কাজ করছে না। আমি পড়েও গেলাম। উঠতে পারলাম না। মা ভয় পেয়ে গেলেন, আমাকে নিয়ে গেলেন ডাক্তারের কাছে। বার্টস হাসপাতালের বিছানায় কতদিন কাটালাম! কতরকমের পরীক্ষা হলো। কিন্তু কেউই ঠিকমতো বলতে পারলো না, আমার আসলে কী হয়েছে। কিন্তু আমি নিজেই বুঝতে পেরেছিলাম, ব্যাপারটা মোটেও ভালো নয়। যে ডাক্তার আমার রোগ নির্ণয় করেছিলেন, তিনি নিজেই হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন। তাকে আর কোনোদিন দেখিনি।

মনে হলো, আমার জীবনের পথটা কেমন অন্ধকার হয়ে আসছে। আমি বুঝতে পারলাম, ব্যাপারটা খারাপ। যে ডাক্তার আমার রোগ নির্ণয় করেছিল, সে নিজেই হাত ধুয়ে নিলো।আমার অবস্থা যেন খুব দ্রুত খারাপের দিকে যাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল, পিএইচডি করার আর কোনো মানে নেই, কারণ আমি জানতাম না আদৌ কতদিন বাঁচবো। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তী হয়েছিলাম কসমোলজি পড়তে আর মহাবিশ্বের রহস্য বোঝার জন্য, । কিন্তু সেই স্বপ্নটাই যেন অধরা হতে চলেছে।

তারপর দেখলাম, আমার অবস্থা একটু একটু করে ভালো হচ্ছে। আর তখনই বুঝলাম, প্রত্যাশাগুলোকে যদি শূন্যে নামিয়ে আনি, তাহলে প্রতিটি নতুন দিন যেন একটা উপহার হয়ে দাঁড়ায়। কাজের দিকে মন দিতে শুরু করলাম আবার। জীবনটাকে নতুন করে অনুভব করতে শুরু করলাম। মনে হলো, ছোট ছোট জিনিসের মাঝেও কত বড় আনন্দ লুকিয়ে আছে!

আর সেই সময়ের মধ্যে, একদিন এক পার্টিতে আমার দেখা হলো জেন নামের এক তরুণীর সাথে। তার হাসিতে যেন একরকমের স্নিগ্ধতা ছিল। তার সাথে কথা বলেই যেন বুঝতে পারলাম, জীবনটা আবারও সুন্দর হতে পারে। আমাদের কথায় কথায় বন্ধুত্ব হলো, আর সেই বন্ধুত্বের হাত ধরেই আমাদের বাগদান হলো। যেন জীবনে নতুন এক আশার আলো পেলাম। বুঝলাম, যতক্ষণ জীবন আছে, ততক্ষণ আশা আছে।

আমরা মানুষ, আমাদের স্বপ্ন অনেক অনেক বড়। আমরা লক্ষ লক্ষ গ্যালাক্সির মানচিত্র আঁকতে চাই, মহাবিশ্বের রহস্য উন্মোচন করতে চাই। কিন্তু এটা তো শুধু বইয়ের পাতা নয়, আমাদের যেতে হবে আরও দূরে, মহাকাশে, গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে, মানবতার ভবিষ্যতের জন্য।

আমার মনে হয়, আমাদের এই পৃথিবীর বাইরে যেতে হবে নতুন বসতি গড়তে হবে নাহয় আমরা মানুষ জাতি এই ভঙ্গুর পৃথিবীতে আরো এক হাজার বছর টিকে থাকতে পারবো কিনা জানি না। কিন্তু আমি জানি, যতদিন আমরা কৌতূহলী থাকব, যতদিন আমরা আকাশের দিকে তাকিয়ে সেই তারাদের রহস্য বোঝার চেষ্টা করব, ততদিন আশা বেঁচে থাকবে।

আমাদের মানুষ হিসেবে অর্জন অনেক বড়। আমরা যারা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণার সমষ্টি, আমরা্ এই মহাবিশ্বকে নিয়ন্ত্রণকারী নিয়মগুলোকে কিছুটা বুঝতে পেরেছি—এটা আমাদের জন্য এক বিশাল সাফল্য। আমি যদি তাতে ছোট্ট একটা অবদান রাখতে পারি, তবেই আমি খুশি।

তোমাদের সবার কাছে আমার একটাই শেষ অনুরোধ, তোমরা যেন সবসময় পায়ের নিচে না তাকিয়ে, আকাশের মহাশুন্যের দিকে তাকাও। ভাবো, কেমন করে এই মহাবিশ্বের সৃষ্টি হলো। তোমাদের আশেপাশে যা দেখছো তার মানে খোঁজার চেষ্টা করো। সবসময় কৌতূহলী থাকো।

আর মনে রেখো, যতক্ষণ জীবন আছে, ততক্ষণ আশা আছে।



বাংলায় অনুবাদ: বন্ধু তুহিন।

সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৭
৯টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্প কি পুরোপুরি ভারতের উপর নির্ভরশীল?

লিখেছেন গেছো দাদা, ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪৭

অনেক ভারতীয় দের দেখি কেবল পেয়াজ, আলু, কাঁচা মরিচ এসবের উদাহরন দিয়েই সোশাল মিডিয়ায় বাংলাদেশি দের আক্রমন কে প্রতিহত করে! তাই আমরা বাংলাদেশে কি কি পন্য রপ্তানি করি সেই বিষয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি অরাজনৈতিক গল্প.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:১০

এক অন্ধ ভিখারি ভিক্ষা করতে করতে একদিন রাজপ্রাসাদে
ঢুকে পড়লো। রাজার মনে দয়া এলো।
রাজামশাই মন্ত্রী-কে ডেকে বললেন-
"'জানো হে, এই ভিক্ষুক জন্মান্ধ নন, একে চিকিৎসা করানো হোক। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিন্দু ধর্মের মানুষদের নোৗকায় ভোট না দিতে হুশিয়ারী দিয়েছে সার্ভিস আলম

লিখেছেন আহসানের ব্লগ, ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৫৭


ঠাকুরগাওয়ে হিন্দু ধর্মের মানুষদের নোৗকায় ভোট না দিতে হুশিয়ারী দিয়েছে সার্ভিস আলম। এবং তাদের ওপরে যে হামলা হয় তার জন্য হিন্দুরাই দায়ী। কারন হিন্দুরা নৌকায় ভোট দেয়। যার ভোট সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিঠাই লাগাইন্যা শয়তান!! # ২

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:২৭


গাজিয়াবাদের গোপন এক ডেরায় আপার মুখোমুখি বসে মিঠাই লাগাইন্যা শয়তান' বসে মিচকি মিচকি হাসিতেছে।
আপা তারে জিগাইল, 'হাসতে কিউ হু?' (আপার হিন্দী এই রকম, কেউ ভুল ধরিয়েন না)
মিঠাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

আরাফাতের ড্রাগ তত্ত্ব বিশ্লেষন

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৪৭



আওয়ামীলীগের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন আরাফাত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নিহত রংপুরের শহীদ আবু সাঈদের বিষয়ে মন্তব্য করতে যেয়ে বলে “ আন্দোলনকারীদের অনেকে ড্রাগড ছিল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×