তুমি যদি একটা পাখির ছোট্ট নীলচে পালক হয়ে, গাছের ডালের ফাঁকে, বয়ে চলা বাতাসে ভর করে উড়ে যাও, তবে তোমাকে কেউ স্পর্শ করতে পারবে না। কুয়াশা ঢাকা ভোরের সদ্য উঁকি দেয়া কুসুম কুসুম সূর্যটা তার হালকা নরম রোদের উষ্ণতা তোমাকে দেবে। সে উত্তাপকে মনে হতে পারে মায়ের বুকের মধ্যিখানে ঘাপটি মেরে থাকার মত নিরাপদ অনুভবের উষ্ণতা। সে উষ্ণতা হতে পারে কোন কোমল মনের মানুষের গাল বেয়ে গড়িয়ে পরা তপ্ত অশ্রুর উষ্ণতা। কিংবা এক টুকরো মোমের আলোর যে বৃত্তবন্দী তাপ আছে, সেই উষ্ণতা।
বেখেয়ালি কোন হাওয়া এসে তোমাকে সূতোকাটা ঘুড়ির মত সাঁই সাঁই করে উড়িয়ে নিতে পারে। ফুঁয়ো ফুঁয়ো রোয়ার মত মেঘে তুমি আটকে যেতে পারো, গোত্তা খাওয়া কোন চিলের চিৎকার শুনতে পারো, গোলক ধাঁধার মত কোন এক খণ্ড আকাশের ঘূর্ণিতে হারিয়ে যেতে পারো। আবার হারিয়ে যাবার ঠিকানা খুঁজতে গিয়ে, নিজেকেই ফের নতুন করে আবিষ্কার করতে পারো। ইচ্ছে মতন যা খুশি তাই করতে পারো।
এক মুঠো সবুজ ঘাস হতে পারো। কালচে হলুদ বুনো প্রজাপতি হয়ে বনের মাঝে ঘুরতে পারো, লালচে পোকা হয়ে মরচে পড়া শুকনো পাতায় হাটতে পারো। হাওয়ার দোলে পথ ভুলে কোন মাকড়শার জালে আটকেও যেতে পারো। ইচ্ছে মতন ইচ্ছে গুলো ল্যাজহীন ঘুড়ির মত উদ্দেশ্যহীন ভাবে উড়িয়ে দিতে পারো। দাওয়ায় বসে রোদ পোহানো সেই নব্বই বছরের বৃদ্ধার ছানি পরা ঝাপসা চোখের এক বিন্দু আলো হতে পারো। ও পাড়ার নতুন বউটির রঙ্গিন কাঁচের চুড়ি হতে পারো। মন কাঁদানো কোন বাঁশির সুর হতে পারো, সাদা ক্যানভাসের বুক ভরা তৃষাও হতে পারো।
ল্যাম্পপোষ্টের টাটকা আলোয় শুয়ে থাকা পথ শিশুদের খেলার সঙ্গী হতে পারো। নদীর পানির চিকচিকে বালি বা এক কণা জ্যোৎস্না হয়ে আমার কান্না লুকাতে পারো। আজ চাইলেই তুমি এক পরশে সবার মাঝে লুকিয়ে থাকা ছোট্ট কোন পিদিম হয়ে জ্বলতে পারো। আজ তুমি যা ইচ্ছে তাই কর, আজ তোমাকে মন জানালার কপাট খুলে উড়িয়ে দিলাম। আজকে না হয় ক্লান্ত শরীর মন কে ছাড়াই তন্দ্রা যাক।