somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যাকাত এবং দানকৃত অর্থের সঠিক বন্টন মুছে দিতে পারে দেশের দারিদ্র্যতা !!!

১২ ই আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৩:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঈদ হল খুশি। তবে সবার জন্য নয়। যাদের টাকা পয়সা আছে তাদের জন্য। যারা খেতে পারছে না, পরতে পারছে না তাদের জন্য ৩৬৫ দিনই সমান। ঈদ আসছে, তাই দৌড় ঝাপ শুরু হবে টাকা-পয়সা ওয়ালাদের। কোটি কোটি টাকার যাকাতের শাড়ি বিতরন করবেন আর মিডিয়াতে প্রচার হবে যে, তিনি একজন জনদরদী। গরীবের বন্ধু। এই ১টি শাড়ি আর লুঙ্গি বছরে ১বার। একটা মানুষের জীবনে কি পরিবর্তন আনতে পারে? একটু ভাবার দরকার আমাদের। ভাবতে হবে তাদের, যারা যাকাত দেয়ার এই পন্থা অবলম্বন করছেন। ১টি শাড়ি বা লুঙ্গি দান না করে স্থায়ী কোন সমাধান কি করা যায় না???

এই বিপুল পরিমানের দানকৃত অর্থ কি একজন সাধারণ মানুষেরও ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটাতে পারবে? যাকে কাপড়টি দেয়া হচ্ছে তারতো দরকার অর্থনৈতিক মুক্তি। তার দরকার দুমুঠো ভাত। তার চাকুরী নেই, তার টাকা নেই, তার সহায়সম্বল কিছুই নেই। ১পিস শাড়ি কাপড় তার জন্য কি যথেষ্ট??? ১০০০ জন মানুষকে ১টি কাপড় না দিয়ে, যদি কষ্ট করে ১০ মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যায় তাহলে কিন্তু এই দানের অর্থের সঠিক বণ্টন হবে বলে আশা করছি। ১০ মানুষের রুটি-রুজির ব্যবস্থা করা মানেই, তাদের পরিবারের জীবিকার ব্যবস্থা করা। প্রতি বছরই এভাবে যাকাতের অর্থ দান করেন অনেকে কিন্তু কাংখিত সফলতা কি আসছে? এই পদ্ধতি অবলম্বন করেও, অন্য কোন উপায়ে গরীব মানুষের স্থায়ী সমাধানের চেষ্টা করা উচিত।

যাকাত দেয়া ফরজ! তাই যিনি যাকাত অথবা অন্যকোন দানের অর্থ দিবেন তিনি যদি সুন্দর একটি পরিকল্পনা করে দান করেন। তাহলে অবশ্যই এই অর্থ দানে সাধারন মানুষের বেকারত্ব উপকারে আসবেই। প্রথম বছর তিনি যদি ১০জনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারেন, পরবর্তী বছর অন্য ১০জন মানুষের জন্য কাজ করতে পারবেন। এতে করে ধীরে ধীরে মানুষের কর্মসংস্থান বাড়তে থাকবে এবং দারিদ্র্যতা কমতে থাকবে। যাকাত অথবা দানকৃত অর্থ দিয়ে যদি ঐ গরীব মানুষের ভাল একটি কাজের ব্যবস্থা করা দেয়া যেতে পারে। এতে করে ঐ ব্যক্তির ভবিষ্যত আয়ের স্থায়ী ব্যবস্থা হয়ে যায়। এছাড়া পরিবারের কারও উচ্চ শিক্ষার জন্য সহযোগিতা করা সম্ভব। তাছাড়া কাউকে রিক্সা কিনে দেয়া, ছোট্ট দোকানের ব্যবস্থা করে দেয়া, চাষাবাদ/খামার করার জন্য ব্যবস্থা করা যায়। একজন মানুষ যখন সহযোগিতা পায় তখন তার উপার্জনের প্রতি আগ্রহ বাড়ে এবং তিনি উপার্জন করে পরিবারের সহযোগিতায় আগ্রহী হয়ে উঠেন। এই সকল পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে আমাদের দেশে ভিক্ষাবৃত্তি বেড়ে যাচ্ছে। কর্মসংস্থানের অভাবে বেড়ে যাচ্ছে চুরি, ডাকাতি অথবা খারাপ পথের উপার্জনের চেষ্টা। সহযোগিতা না পেয়ে মানুষগুলো পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্রের বোঝা হয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশে মানুষের যেই পরিমানের অর্থ আছে। সঠিকভাবে যাকাত দেয়ার ব্যবস্থাটুকু করতে পারলে দারিদ্র্যতা ধীরে ধীরে বিদায় নিবে আমাদের দেশ থেকে। কিন্তু সুদুরপ্রসারী চিন্তা ভাবনার অভাব এবং দানের টাকা সঠিকভাবে বণ্টন না হওয়ায় বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। অথচ প্রতিবছরের যাকাত অথবা দানকৃত অর্থ দিয়ে হাজার হাজার মানুষের পুনর্বাসন করা সম্ভব। তাই আমাদের পরিচিত সকল সম্পদশালী ব্যক্তিদের আমরা জানাই, কিভাবে সত্যিকারের সহযোগিতা করা যায়। আপনার আমার সহযোগিতায় হয়ত তার নিজস্ব এলাকায় কিছু মানুষের সারাজীবনের উপার্জনের ব্যবস্থা হয়ে যেতে পারে। অথবা আপনার অন্য কোন পরিকল্পনা থাকলেও ঐ ধনী ব্যক্তিদের অর্থের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে যার যার এলাকার হত দরিদ্র গরীব মানুষের উপকার করা সম্ভব। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সেই যোগ্যতা দান করুক এবং আমাদের চেষ্টায় যেন না খাওয়া মানুষগুলোর অন্য, বস্ত্র এবং বাসস্থানের ব্যবস্থা হয়ে যায়।

একটা কথা মনে রাখা দরকার। যিনি সাধারণ মানুষের মনের স্থান করে নিতে পারবেন, তার জন্য অন্য কিছুর দরকার হয় নেই। সাধারণই মানুষ তার সম্পদ। এই গরীবমানুষগুলো, পুরো পরিবারসহ তার জীবন দিয়ে দিতেও প্রস্তুত হবেন। কারন তার পরিবারের বর্তমান অবস্থানে আসার পেছনে, এই ভাল মানুষটির অবদান ছিল। এক জীবনে এর চাইতে আর বড় পাওনা কিছুই হতে পারে না। তাই আসুন, আমরা যার যার অবস্থান থেকে মানুষের উপকার করার চেষ্টাটুকু অব্যাহত রাখি। কারন এই মানুষগুলোতো আমাদের ভাই-বোন। আমরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। এই হত দরিদ্র মানুষরা আমার-আপনার পরিচিত। আমি যদি ভাল উপার্জন করতে সক্ষম হই, তাহলে আমার সহযোগিতায় হাসিফুটুক রাস্তার একজন সাধারণ মানুষের। হয়ত এই চেষ্টা কিয়ামতের দিনে আল্লাহর দরবারে নাজাতের ফয়সালা হয়ে যেতে পারে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সেই তাওফিক দান করুক, আমীন।

ফেসবুক শেয়ার
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৩:১৩
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×