ছাত্র : স্যার আপনি এক জন মুক্তি যুদ্ধা , কিন্তু আমার সমবয়সি অনেকে জানেনা কেন?
স্যার : কারন হচ্ছে আমি সবার কাছে বলে বেড়াইনি তাই ইয়াং জেনারেশানের অনেকে জানেনা ।
ছাত্র : অন্যরা তো বলে থাকে আমি এক জন বীর মুক্তিযুদ্ধা , কিন্তু আপনি বলেন না কেন?
স্যার : আমারা যুদ্ধ করেছি, এবং দেশকে স্বাধীন করেছি । এটা আমাদের একটা মহৎ কাজ । নিজের ভালো কাজের কথা অন্যের কাছে বলে বেড়ানো লজ্জার ব্যেপার ও বটে । আসলে যারা বলে বেড়ায় তাদের লজ্জা কম । আমি যদি একটা ভালো কাজ করি তা অন্যরা বলবে । কবিতায় পড়েছোনা - আপনাকে বড় বলে , বড় সেই নয় , লোকে যারে বড় বলে বড় সেই হয় ।
ছাত্র : আইচ্ছা স্যার আমি অনেক মুক্তিযুদ্ধাকে চিনি । কিন্তু রেজাকার এক জন কে চিনি,আমাদের গ্রামের মশামিয়া, সে দেখতে ভালো মানুষ । রেজাকার কি তেমন বেশি মানুষ ছিলো না?
স্যার : মশামিয়ার কথা বলতেছো , সে তো আসলে সত্যিকারের রাজাকার না। সে পাকিস্তানীদের সাথে থেকে বাংলাদেশি দেরকে সাহায্য করেছে । তাই যুদ্ধের পর তাকে কেউ কেছু করেনি । রেজাকার ছিলো অনেকেই ।
ছাত্র : তা হলে তারা কোথায় ?
স্যার : আসলে সত্যি কথা বলতে কি যুদ্ধের প্রথম অবস্তায় অনেকে ভেবেছিলো দেশটা এক থাকলে পৃথিবীর বুকে একটা বড় এবং শক্তি শালি মুসলিম দেশ হিসেবে থাকবে । এবং আমাদের পাশের দেশ আমাদের সাথে অন্যায় ভাবে কিছু করতে চিন্তা করবে । কিন্তু পাকিস্তানীরা যা করেছে তাতে মানুষ আর দৈয্য ধরে থাকতে পারেনি । এবং এক জন সচেতন নাগরিকের দৈয্য ধরে বসে থাকার পরিস্তিতি ছিলোনা । কিন্তু কোন কোন এলাকার মসজিদের ইমামরা যেহেতু আগে থেকে ইসলামী দলের সাথে জড়িত ছিলো , তাই তারা এবং কিছু প্রভাব শালী ব্যেক্তি ও তাদের সাতে কিছু শয়তান প্রথম আবস্তায় পাকিস্তানীদের কে সাহায্য করেছিলো । কিন্তু পরে পাকিস্তানীদের আচরন দেখে অনেকে নিরব হয়ে যায় । এবং অনেকে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেয়। অনেকে আবার পাকিস্তানীদের সাথে থেকে তাদের কেম্প থেকে বিভিন্ন রকমের খাদ্য এবং তথ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধা এবং সাধারন মানুষকে সাহায্য করেছে । তারা রাজাকার হয়েও মুক্তিযুদ্ধাদের জন্য কাজ করেছেন । যারা শয়তান ছিলো তারা পাকিস্তানীদের মতো বর্বর কাজ করেছে , এমন অনেক কেই ১৬ ডিসেম্বারের পর মেরে পেলেছে সাধারন মানুষ এবং মুক্তিযুদ্ধারা মিলে । এবং কিছু নেখোজ হয়ে গেছে । আবার কাউকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে ।
ছাত্র : স্যার আমার মনের মধ্যে সব সময় একটা প্রশ্ন যাগে কিন্তু সাহস করে কাউকে জিজ্ঞেস করতে পারিনি , আপনি যদি কিছু মনে না করেন...
স্যার : কোন সংকোঁচ ছাড়া বল , কি জানতে ছাও ? আমরা শিক্ষক আমাদের কাজই হচ্ছে তোমাদেরকে জানানো ।
ছাত্র : আমাদের জেলায় যারা মুক্তিযুদ্ধা , যেমন বীর মুক্তিযুদ্ধা জয়নাল হাজারী , ভি পি জয়নাল , আহছান উল্লা ভুঞা , এম এ হোসেন , মুক্তিযুদ্ধা বাহার মিয়া, চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী, নুর নবী দুলাল , কাসেম, সহ আরো যাদেরকে আমি চিনি এদের ভিতরে দুই এক জন ছাড়া প্রায় সবাই খারাপ মানুষ । তারা মদ খায় , জুয়া খেলে, সন্ত্রাসী করে এবং বিভিন্ন খারাপ কাজের সাথে জড়িত । তাই আমার মনে প্রশ্ন যাগে মুক্তিযুদ্ধা কি তেমন ভালো মানুষ ছিলো না ?
স্যার : ছিলো অবশ্যই ছিলো । তোমাকে আগে বলেছিনা যারা ভালো মানুষ তারা নিজেকে প্রচার করতে লজ্জাবোধ করে । তারা সব সময় ভালো কাজ নিয়ে ব্যাস্ত । আর তুমি যাদের নাম বলতেছো এদের ভিতরে অনেকে তাদের জীবনে একটাই ভালো কাজ করেছে, সেটা হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ । তাই তারা সেটাকেই প্রচার করতেছে ভালো করে । এবং এরা মুক্তিযুদ্ধের আগেও বদমাইশ ছিলো । যুদ্ধের সময়ের অস্র সব জমা দেয়নাই । কিছু গোপনে রেখে দিয়েছে এখন তা দিয়ে সন্তাসী করতেছে ।
(আরো আছে)
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মে, ২০০৭ রাত ১২:১০