somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কেউ কি শকুন্তলার পুরো কাহিনীটা জানেন?

১৫ ই আগস্ট, ২০০৮ রাত ১০:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভাগ্যক্রমে আমি ইন্টারে পড়ার সময় আমার বাংলা শিক্ষকের কাছে শকুন্তলার পুরো কাহিনীটা শুনতে পেরেছিলাম। পুরোটা মনে নেই, যতটুকু মনে আছে বলছি। আপনারা কেউ যদি কাহিনীটা জেনে থাকেন তাহলে দয়া করে কোনো ভুল থাকলে শুধরে দেবেন, কোনো মজার ডিটেইল থাকলে তাও জানান। কাহিনীটা আমারনোটসে দেব বলে এটা সঠিক হওয়া চাই। তাই সাহায্য চাইছি।

বিশ্বামিত্র নামে এক বড় ঋষি ছিল। সে উপাসনা করতে করতে অনেক এগিয়ে যাচ্ছিল। দেবতারা মনে করলো সে তাদেরকেও ছাড়িয়ে যাবে। তাই দেবতারা মেনকা নামের এক অপ্সরাকে পাঠিয়ে দিয়েছিলো তার মনোযোগ সরানোর জন্য। তারা সফলও হলো। অপ্সরা মেনকার গর্ভে জন্ম নিল শকুন্তলা। শকুন্তলাকে রেখে তারা চলে গেল (আসল কাহিনীতেও নাকি এমন লেখা আছে- ‘চলে গেল’)। একটা শকুন্ত বা ভাসপাখি তাকে লালন পালন করতে লাগলো। শকুন্তলা শকুন্ত পাখির পাখনার আশ্রয়ে বড় হতে থাকে। একসময় মহামুনি কণ্ব শকুন্তলাকে শকুন্তের কাছে দেখতে পান। তিনি শকুন্তলার দায়িত্ব নেন এবং শকুন্ত তাকে রক্ষা করেছিল বলে তার নাম দেন শকুন্তলা।

শকুন্তলা কণ্বের আশ্রমে বড় হতে থাকে। একদিন দুষ্মন্ত (দুশন্তো) নামে এক রাজা হরিণশিকারে বনে আসেন। কিন্তু ঘটনাক্রমে তিনি কণ্বের আশ্রমে যান। তবে কণ্ব আশ্রমের বাইরে ছিলেন। ঘটনাতো তোমরা বইয়েই পড়েছো। কণ্বের আশ্রমে দুষ্মন্ত শকুন্তলাকে দেখলো, শকুন্তলাকে তার পছন্দ হলো, তাদের বিয়ে হলো এবং শকুন্তলা গর্ভবতী হলো। কণ্ব একসময় ফিরে এলেন, ফিরে এসে শকুন্তলা ও দুষ্মন্তের কথা জানতে পারলেন। প্রথমে তিনি মেনে নিতে পারেন নি, কিন্তু পরে মেনে নিয়েছিলেন।

মাঝে এক ঘটনা ঘটলো। শকুন্তলার কাছে দুর্বাসা নামে এক ঋষি পানি চেয়েছিলো। দুর্বাসা ঋষি কথায় কথায় অভিশাপ দিতো। শকুন্তলা রাজা দুষ্মন্তকে নিয়ে ব্যস্ত ছিল, তাই পানি দিতে দেরি হয়েছিলো। তাই দুর্বাসা ঋষি শকুন্তলাকে অভিশাপ দিলো- তুই যার জন্য আমাকে পানি দিতে দেরি করলি সে তোকে কখোনোই চিনতে পারবে না। পরে তিনি অভিশাপটি পুনর্বিবেচনা করেন, এবং যে অভিজ্ঞান (প্রমাণ) হিসেবে কিছু দেখালে সেই লোক শকুন্তলাকে চিনতে পারবে।

রাজা দুষ্মন্ত খবর পেলেন তার রাজ্যে তাকে প্রয়োজন। সে শকুন্তলাকে একটি আংটি দিয়ে বললো আমার রাজ্যে এটা নিয়ে গেলে তোমাকে আমি চিনবো। রাজা চলে যায়।

শকুন্তলা একটি ছেলে শিশুর জন্ম দিলো। তার নাম ছিল ভরত (বানানটা ঠিকই আছে, ভারত কিংবা ভর্তা নয়)। কয়েকবছর পর আর থাকতে না পেরে ভরতকে নিয়ে শকুন্তলা রাজা দুষ্মন্তের সঙ্গে দেখা করতে গেল। শকুন্তলা ও ভরত নৌকা দিয়ে যাচ্ছিল। শকুন্তলা পানি খেতে গিয়ে তার হাত থেকে আংটিটা খুলে পানিতে পড়ে যায়।

শকুন্তলা দুষ্মন্তের কাছে যান। তাকে সব ঘটনা বলেন কিন্তু দুষ্মন্ত সব কথাই ভুলে গেছেন। বাধ্য হয়ে শকুন্তলা প্রাসাদ থেকে বের হয়ে আসেন। সেই রাজ্যেই এক পরিবারে আশ্রয় নেন।

শকুন্তলার আংটিটা একটা মাছ গিলে ফেলেছিল। সেই মাছটা এক জেলে ধরে ফেলে। যখন সে পেটের ভিতর আংটিটা পায় তাতে দেখে যে এটার মধ্যে দুষ্মন্তের নাম লেখা আছে, তখন সে আংটিটা দুষ্মন্তের কাছে নিয়ে গেল। তবুও রাজা দুষ্মন্ত মনে করতে পারলো না। পরে সে একটি দৈববাণী (অদৃশ্য দেবতার কথা) শুনতে পেলেন- আংটিটা শকুন্তলার এবং সে তোমার স্ত্রী।

পরে তিনি শকুন্তলাকে খুঁজে বের করেন এবং তাকে স্বীকার করে নেন। একসময় ভরত বড় হয়। তাকে দায়িত্ব অর্পণ করে দিয়ে রাজা শেষ জীবন ধর্মকর্মে কাটিয়ে দেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই আগস্ট, ২০০৮ দুপুর ২:১৫
৯টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমেরিকার ডিপার্টমেন্ট অফ এডুকেশন বন্ধ করা নিয়ে কিছু ব্যক্তিগত ভাবনা

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২২ শে মার্চ, ২০২৫ সকাল ৮:৪১


সম্প্রতি আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন বহুল আলোচিত "ডিপার্টমেন্ট অফ এডুকেশন" বন্ধ করা নিয়ে অনেককেই উদ্বিগ্ন দেখতে পাচ্ছি। বিষয়টি আমাদের মতো সাধারণ আমেরিকান নাগরিকদের জন্য কিছুটা হলেও চিন্তার কারণ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেনা প্রধানের ভুমিকা আসলেই প্রশ্নবিদ্ধ!

লিখেছেন আহলান, ২২ শে মার্চ, ২০২৫ সকাল ৯:০৮




বর্তমানে দেশে সেনা প্রধানের ভুমিকা নিয়ে অনেকের মনেই নানা রকম ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। তার প্রতি সাধারণ জনগনের যে আস্থা বিশ্বস্ততা তৈরী হয়েছিলো, তাতে বেশ ভাটা পড়তে শুরু করেছে। আমার কাছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ: গণতন্ত্র ও আইনের আলোকে বিশ্লেষণ

লিখেছেন নতুন নকিব, ২২ শে মার্চ, ২০২৫ সকাল ১০:৪৪

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ: গণতন্ত্র ও আইনের আলোকে বিশ্লেষণ

অন্তর্জাল থেকে সংগৃহিত।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে আওয়ামী লীগ বিশেষ ভূমিকা পালনকারী দল। দলটি দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও গণতন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা একটা কঠিন সময় পার করছি....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ২২ শে মার্চ, ২০২৫ দুপুর ২:৫১

আমরা একটা কঠিন সময় পার করছি....

বিএনপি জানে তাদের মূল প্রতিপক্ষ কারা.....
ছাত্রসমন্বয়করা জানে রাজনীতিতে তাদের দৌড় কতদূর...

তারেক রহমানের যখন দেশে ফেরার সময় ঘনিয়ে আসছে তখনই হাসনাত গং নানান কাহিনী শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০৫০ সালে বিশ্বের বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীদের সংখ্যা সংক্রান্ত পূর্বাভাস

লিখেছেন সাড়ে চুয়াত্তর, ২২ শে মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৮

পিউ রিসার্চের ২০১৫ সালের একটা জরীপের ফলাফল নিয়ে এই পোস্ট দিলাম। পিউ রিসার্চ একটি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সামাজিক জরীপ এবং গবেষণা সংস্থা। এই জরীপের বিষয় ছিল, ২০৫০ সালে বিশ্বের বিভিন্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×