somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

আলতাফ শেহাব
শৈশব কেটেছে ডাকাতিয়া পাড়ের নিজগ্রামের মাটি আর ধূলাতে। কৈশরেই (১৯৯৩ খ্রীস্টাব্দে) চ’লে আসেন বাবার কর্মস্থল কুমিল্লা শহরে। মফস্বলের আলো হাওয়ায় অতিক্রান্ত হয় প্রথম যৌবন। বর্তমানে ঢাকায় বসবাস করছেন।nnছাত্র আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত হন ১৯৯৯ খ্রীস্টাব্দে।

আমিই জয় বাংলার লোক

১৬ ই জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কোটা প্রথা সমাজের শ্রেণী বৈষম্য দূর করার জন্য একটি অস্থায়ী সমাধান। সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠিকে মূলধারার সাথে সামিল করার জন্য কোটা প্রথা প্রয়োজন আছে। কিন্তু রাষ্ট্রের বর্তমান কোটা ব্যবস্থায় উল্টো বৈষম্য তৈরী করছে। তাই কোটা ব্যবস্থার আশু সংস্কার জরুরী। কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রতি পূর্ণ সমর্থন রেখেই কিছু কথা বলতে চাই-

জয় বাংলা- এই শ্লোগানটি একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ ও পূর্ববর্তী সময়ে পুরো একটি জাতিগোষ্ঠিকে ঐক্যবদ্ধ করে, দেশ স্বাধীন হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর কিছু সুবিধাবাদী গোষ্ঠির অতিলোভের কারণে অল্প সময়ের মধ্যেই দৃশ্যপট পাল্টে যায়। পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে ক্ষমতায় আসে জনসম্পৃক্ততাহীন সরকার। প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠি ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তিকে তুষ্ট করতে এবং তাদের সমর্থন আদায় করতে ‘জয় বাংলা’ শ্লোগানকে দূরে সরিয়ে জিন্দাবাদকে প্রতিষ্ঠিত করতে উঠেপড়ে লাগে। রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে প্রতিষ্ঠিত করে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তিকে। ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে দেয়ার প্রচেষ্টা চালায় ‘জয় বাংলা’ শ্লোগানকে। সাধারণ জনগণের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন হয় ‘জয় বাংলা’র, সম্পর্ক শিথিল হয় মুক্তিযুদ্ধের বোধের। তৈরী হয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার থেকে বিচ্ছিন্ন একটি প্রজন্ম।

এই সুযোগে নব্বই পূর্ববর্তী সময় থেকে আওয়ামী লীগ ‘জয় বাংলা’ শ্লোগানকে নিজেদের শ্লোগান হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করে। পরবর্তীতে রাষ্ট্রক্ষমতায় এসে সুকৌশলে পুরো মুক্তিযুদ্ধকে নিজেদের অর্জন হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করার প্রচেষ্টা চালায়। অনেকাংশে সফলও হয়। আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি হিসাবে নিজেকে পূর্ণ প্রতিষ্ঠা দিতে অনিবার্যভাবে সামনে নিয়ে আসে যুদ্ধাপরাধ ইস্যু। নতুন প্রজন্ম সাদরে গ্রহণ করে, শুরু হয় যুদ্ধাপরাধের বিচার। কিন্তু যুদ্ধাপরাধের বিচার চলাকালীন তরুণ প্রজন্ম আদালতের বিচারে সম্পর্ণ সন্তুষ্ট হতে পারেনি, শুরু হয় আন্দোলন। এই আন্দোলনের হাত ধরে আবার সামনে আসে ‘জয় বাংলা’।

‘জয় বাংলা’ যখোন আপামরের নিকট পুনঃপ্রতিষ্ঠা পেতে শুরু করেছে, আবার উঠে পড়ে লেগেছে প্রতিক্রিয়াশী মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তি। আওয়ামী লীগ সরকারের বিরোধিতা করতে গিয়ে জনগণকে কৌশলে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে ‘জয় বাংলা’র মুখোমুখি। আন্দোলনের জোশে অথবা কারো প্ররোচণায় বুঝে নাবুঝে তুরুণ প্রজন্মের একটা অংশ নিজেদেরকে ‘আমি রাজাকার’ বলে পরিচয় দিচ্ছেন। আমি দৃঢ়ভাবে এটা বিশ্বাস করি বাংলাদেশের কেউ সচেতনভাবে নিজেকে রাজাকার বলে পরিচয় দিতে পারে না।

নতুন প্রজন্মকে বলতে চাই কেন আপনি নিজেকে একজন ধর্ষক, লুটেরা, খুনির পারিচয়ে পরিচয় দিতে চান? হ্যাঁ, রাজাকার বলতে আমি একজন ধর্ষক, লুটেরা, খুনিকেই বুঝি। মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশলক্ষ শহীদের পরিবার, সম্ভ্রম হারানো দুই লক্ষ মা-বোন, সর্বোপরি মুক্তিযুদ্ধের সময়ের আপমর জনগণ সাক্ষী; রাজকার বলতে ধর্ষক, লুটেরা, খুনিই বুঝায়। আর মুক্তিযোদ্ধা বলতে বেয়নেটে লাল-সবুজের পতাকা বাঁধা রাইফেল কাঁধে দুর্বার এক যুবকের ছবি ভেসে ওঠে মানসপটে।

আওয়ামী লীগ একবার ‘জয় বাংলা’ বলে হামলা করলে, আপনারা দশ বার সমস্বরে ‘জয় বাংলা’ বলে চিৎকার করে প্রতিরোধ করুন। নিজেকে ‘জয় বাংলা’র লোক বলে পরিচয় দিন, রাজাকার নয়। ‘জয় বাংলা’ কোন নির্দিষ্ট দলের নয়, ‘জয় বাংলা’ আপামর জনগণের। আমি, আমরাই ‘জয় বাংলা’র লোক।

সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৩:২১
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আগে বুঝতে হবে রিসেট বাটন কি......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ১৭ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১০:০৩

আগে বুঝতে হবে রিসেট বাটন কি......

বেশ কিছুদিন যাবত ডক্টর ইউনুস সাহেব এক সাক্ষাৎকারে "রিসেট বাটন" শব্দদ্বয় বলেছিলেন- যা নিয়ে নেটিজেনদের ম্যাতকার করতে করতে মস্তিষ্ক এবং গলায় রক্তক্ষরণ হচ্ছে। আমরা যারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধু ভগবান না হয় ইশ্বর!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১০:৫২



মানুষ বঙ্গবন্ধুর ওপর এতোই ত্যক্তবিরক্ত যে আজকাল অনেকেই অনেক কথা বলছে বা বলার সাহস পাচ্ছে। এর জন্য আম্লিগ ও হাসিনাই দায়ী। যেমন- বঙ্গবন্ধু কলেজ, বঙ্গবন্ধু স্কুল (হাজারের কাছাকাছি),... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ্‌ সাহেবের ডায়রি ।। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১:২৮





বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে গত জুলাই-আগস্টের গণহত্যার মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মতিয়া চৌধুরীর মৃত্যু সংবাদ শুনে কোন গালিটা আপনার মুখে এসেছিলো?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৬



"খবিশ মহিলা", গালিটি বা তার কাছাকাছি কিছু?

মতিয়া চৌধুরী (১৯৪২-২০২৪) ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা ও সৎ রাজনীতিবিদ। গত ৫৩ বছরে বাংলাদেশে তিনিই ছিলেন একমাত্র নারী মুক্তিযোদ্ধা ও সবচেয়ে নিবেদিত-প্রাণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্বে চরম দারিদ্র্যে বাস করা প্রায় অর্ধেক মানুষই ভারতের

লিখেছেন সরকার পায়েল, ১৭ ই অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৮


বিশ্বের ১১০ কোটি মানুষ দারিদ্রে দিন কাটাচ্ছে। তাদের প্রায় অর্ধেকই যুদ্ধ-সংঘাত লেগে থাকা দেশের বাসিন্দা। জাতিসংঘের উন্নয়ন সংস্থা ইউএনডিপির এক গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন তথ্য।


ইউএনডিপির বরাতে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×