মানব জাতির কাছে অর্থনৈতিক সমস্যাই বড় সমস্যা। এ সমস্যার কারণেই পৃথিবীর মানুষ যুগ যুগ ধরে অশান্তি ভোগ করে। রাষ্ট্রনায়ক ও মানবতার মহান নির্দেশক মহানবী [সা] এ সমস্যাটির সুষ্ঠু সুন্দর ও ভারসাম্যপূর্ণ সমাধান দিয়ে এ ধরায় মানবতার কল্যাণ সাধন করেছেন।
প্রিয়নবী তথা হযরত মুহাম্মাদ [সা] বিশ্বের শ্রেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ছিলেন। একজন যোগ্য অর্থনীতিবিদ হিসাবে একটি সুন্দর ভারসাম্য অর্থনীতির রূপরেখা প্রণয়ন করে গেছেন তিনি। তিনি রাষ্ট্রের আর্থ সামাজিক প্রশাসনিক উন্নয়ন তথা ধনী দরিদ্র বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে একটি উৎপাদনমুখী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা কায়েম করে গেছেন।
১। সম্পদের মালিক আল্লাহঃ
অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধানে ইসলামের সবচেয়ে বড় অবদান হচ্ছে অর্থ-সম্পদ সম্পর্কিত প্রাচীন ও গতানুগতিক ধারার আমূল পরিবর্তন সাধন। আবহমান কাল ধরে ধন-সম্পদকেই মানুষ সবচেয়ে অধিক মূল্যবান এবং একমাত্র কাম্য বস্তু মনে করে আসছে। আর এ সম্পদের একমাত্র মালিকই হলেন মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন। মহান আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করেছেনঃ “আসমান ও জমীনে যা কিছু আছে তার সবকিছু আল্লাহর জন্যই, আল্লাহরই মালিকানাধীন”।
ইসলাম আরো বলে “অর্থ-সম্পদ মানুষের জীবনের জন্য অপরিহার্য তবে তা কখনও মানুষের একমাত্র লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হতে পারে না।
২। বিধিবদ্ধ ব্যক্তি মালিকানাঃ
ইসলাম ব্যক্তি মালিকানাকে বঞ্চিত করেনি। কিন্তু ইসলাম ব্যক্তি মালিকানায় কখনো শোষণ-পীড়ন ও অর্থনৈতিক বিপর্যয় সৃষ্টির সুযোগ করে দেয়নি। ইসলাম প্রত্যেক মানুষের ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্য, ব্যক্তিগত আযাদী ও অধিকার ক্ষুণ্ন না করেই সম্পদের বণ্টন ও ভোগ ব্যবহারের পন্থা নির্দেশ করেছে এবং যে ধরনের উৎপাদন বণ্টন ও ভোগ ব্যবহারে এ সকল বৈশিষ্ট্য ক্ষুণ্ন হয়, তাকে ইসলাম মানবতার জন মারাত্মক ও অপমানকর বলে উল্লেখ করেছে। কালামে পাকে ঘোষণা হয়েছেঃ
“তোমরা অন্যায়ভাবে একে অপরের সম্পদ ভোগ করো না, পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে পরিচালিত ব্যবসা ব্যতীত।”
৩। অপব্যয় নিষিদ্ধকরণঃ
সম্পদ ব্যয় করার ক্ষেত্রে ভারসাম্য রক্ষা করার জন্য ইসলাম নির্দেশ দেয়। অকাজে বিলাসে, সামরিক প্রতিযোগিতায়, অস্ত্র তৈরীতে, সমাজে অশান্তি ও বিপর্যয় আসতে পারে এমন খাতে অর্থ ব্যয়কে অপব্যয় ও শয়তানের কাজ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আল কুরআনে বলা হয়েছেঃ “নিশ্চয় অপব্যয়কারী শয়তানের ভাই।” (চলবে)
৬ষ্ঠ পর্ব ৫ম পর্ব ৪র্থ পর্ব ৩য় পর্ব ২য় পর্ব শুরু পর্ব