মাকে আমরা ডাকতাম তুমি করে আর বাবাকে আপনি------ এই লাইনটিতেই কবি তুলে ধরেছেন প্রকট ভাবে ইভটিজিং এর কারন।
জন্মের পর থেকেই দেখছি বাবা মা কে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে । তাই আমিও করি। মা আবার মানুষ নাকি। মাকে অসম্মান করা থেকেই আমাদের জীবন শুরু। এর পর দেখেছি পরিবারের নারী সদস্যদের অবস্থান। তারা যেন জড় বস্তু। তাদের ইচ্ছার নেই জোর, ঝাপট লাগে মাথার উপর ধুলায় লুটায় মাথা। তাদের যেভাবে খুশি ব্যাবহার করা যায়। যা খুশি বলা যায়।
নারী আশ্রয় নিচ্ছে পুরুষের কাছে । সে ছেলে হোক, ভাই হোক, স্বামী হোক বা বাবা হোক। তাদের যাবার কোন জায়গা নেই।
নারী আমার কাছে সব সময়ই ভোগ্য পন্য। তার কোন কথা থাকতে পারেনা। তার কোন চাহিদা থাকতে পারে না, তার কোন ইচ্ছা থাকতে পারে না। আমি যা বলবো তাই আইন। তাই হবে।
এরপর আমি শিখলাম আমার বাসার কাজের লোকটি কে অপমান করা। তাকে কেউ সম্মান করে না। তাকে ডাকতে হবে তুই বলে। সে যত বয়োজেষ্ঠ্যই হোক না কেন। তাকে অপমান করতে কারও এতটুকু বোধ কাজ করে না। আমি যখন ছোট ছিলাম, বৃদ্ধ রমজান একদিন আমাকে তুমি করে বলার কারনে মা তাকে জুতা দিয়ে মেরেছিলেন।
আমি শিখিনি আমার চেয়ে সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিন ভাবে নিচু স্তরের কাউকে মানুষ ভাবতে। ওরা সবাই আমার আজ্ঞাবহ। থিক আমার পোষা কুকুরের মত।
ইভটিজিং এখন এক ভয়াবহ অবস্থায় এসে পৌঁছিয়েছে। এর প্রধান করন পরিবার। পরিবার থেকেই আমরা শিখি কি ভাবে কার সাথে ব্যাবহার করতে হবে।
কোন পোষাক যেমন ইভটিজিং এর কারন নয় তেমনি কোন পোষাক ইভটিজিং বন্ধ করতে পারবে না।
আমরা তাকেই ইভটিজিং বলবো ---কাউকে উদ্দেশ্য করে কিছু বললে সে যদি বিব্রত হয়। যদি সে বিব্রত না হয় তবে তা টিজিং নয়। আমরা আড্ডায় অনেকে অনেক কথা বলি সেটা কিন্তু শ্রেফ বন্ধুত্বের জন্যই।
ইভটিজিং এর স্বীকার হচ্ছে নিরীহ মেয়েরাই বেশি। তাদের কিন্তু আমরা কখনই অশালীন পোষাকে দেখিনা। ৯ বছর থেকে শুরু করে ১৪বছরের মেয়েরা কতটুকুই বা অশালীন হয়।
আমদের অন্দোলন গড়ে তুলতে হবে বাড়ির ভিতর থেকে। একেবারেই অন্তর থেকে। বাসা থেকেই শিখাতে হবে সবাইকে সম্মান করতে হয়। সে নারী হোক বা পুরুষ। সে শিশু হোক বা বৃদ্ধ। সে চাকর হোক বা দাস। সে পতিতা হোক বা হিজরা। সে কৃষক হোক বা শ্রমিক। সে প্রতিবন্ধী হোক বা পাগল ।সম্মান করতে শিখলে অসম্মান করার চিন্তা কখনই আসবে না।
তার আগে দরকার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। এই যে চাঁপা রানীর হত্যাকারী বা মিজানুর এর হত্যাকারীর কঠোর শাস্তি। এই শাস্তির কথা স্মরনে থাকলে আমরাই আমাদের সন্তানদের অন্যকে সম্মান করা শেখাবো-- আমরাই পারবো সমাজকে সুন্দর করতে।