.
,
,
,
,
,
,
,,
,
সকালেই রাকিবের ফোন।
: হ্যালো (ঘুম জরানো গলায়)
: ওই শালার পুত। *#$^#%$#%%@%@%% এত বেলা হইয়া গেসে, এখনো ঘুমাস !
: কিরে, সকাল সকাল এত গাইল পারতাসোস কেন ? কি হইছে ?
: সম্বন্ধীর নাতি, কথা কম ক, জলদি শপিং কমপ্লেক্সের সামনে আয়, আর্জেন্ট ! ১০ মিনিটের মধ্যে ! কুইক ।
: আচ্ছা, আসতেছি
তড়িঘড়ি করে রেডি হয়ে নাস্তা না করেই দৌড় দিলাম । দেখলাম শপিং এর সামনে রাকিব দাঁড়ানো। বেশ চিন্তিত মনে হল।
: কিরে , কি হইছে ? এত আর্জেন্ট কি? নাস্তাও করতে পারলাম না তোর জন্য ।
: কথা পরে হবে, আগে রিক্সায় উঠ ।
চুপচাপ কথা না বাড়িয়ে রিক্সায় উঠে পড়লাম, বুঝলাম ঘটনা খুব একটা সুবিধার না। নিশ্চিত মারামারি বা মেয়েঘটিত ব্যপার। আল্লায় যে আজ কপালে কি রাখসে উনিই জানেন।
একটু সামনেই একটা ফাস্টফুডের দোকানের সামনে থামতে বলল ও । আমি আশার আলো দেখতে থাকি।
রিক্সা থেকে নেমে রাকিব বলল, তুই দোকান টা তে যা, গিয়ে বস, খাবারের অর্ডার দে, আমি বিল দিব।
দোস্ত, তোর মত বন্ধু হয় না, তুই আমারে ডাইকা আইনা খাওয়াইতেসিস ! তুই এত ভাল হলি কবে থেইকা ! আমি একলা খামু নি, তুই ও আয় …
: ফাইজলামি রাখ ! ফুডশপে ঢুইকা দেখবি দুইপক্ষ সামনা সামনি বসে কথা বারতা বলতেসে, দেখলেই বুঝবি ছেলে পক্ষ মেয়ে দেখতে আসছে। তুই ঠিক পাশের টেবিলটাতে গিয়ে বসবি আর ওদের কথা শুনবি।
: আজিব ! মাইনসের কথায় আমি কান দিমু কেন ?
: আরে আহাম্মক ! ওই পোলা সামিয়া কে দেখতে আসছে, আমি ভেতরে গেলে সামিয়ার ফ্যামিলি চিনে ফেলবে। আর সামিয়া তোকে সামনাসামনি দেখে নাই, সো তুই যা।
আমি ভেতরে গেলাম, ওদের সামনের টেবিলটাতে বসলাম। একটা বার্গার, একটা পেস্ট্রি, একটা মিল্কশেকের অর্ডার দিলাম। কিন্তু ওদের কথা খুব একটা শুনতে পারছিলাম না। সামিয়াকেও বেশ স্বাভাবিক মনে হলো। আমার দিকে সামিয়ার মা বেশ কয়কবার আড়চোখে তাকাল আর ফিসফিস করে সামিয়ার বাবাকে কি যেন বলল।
আমি বুঝতে পারলাম থাকা ঠিক হবে না আর সামিয়ার ভাই আশেপাশেই আছে। তাই খাওয়া শেষ হলে নিজের টাকায় বিল দিয়ে কেটে পড়ি। বাইরে বের হয়ে একটু দূরের টং দোকানে দেখি রাকিব চা খাচ্ছে। আমাকে দেখে আবার রিক্সা নিয়ে জিইসির দিকে চলে আসে। কিছু জিজ্ঞেস করল না, আর আমিও কিছু বললাম না।
রিক্সা থেকে নেমে দুইজন শফিক মামার দোকানে ঢুকলাম। এবার ও বলল, ছেলে আম্রিকা থাকে, বিশাল বড়লোক, সামিয়ার বাপ-মা-ভাই তো পারে না কালকেই বিয়ে দিয়ে দেয়।
হুম্ম, তা বুঝলাম কিন্তু তোর ব্যাপারে তো সামিয়ার বাসায় জানার কথা। আর তুই ও তো খারাপ না। ভাল রেজাল্ট করে বের হইসস। আর একটু চেষ্টা করলে তোর চাকরি পেতে তেমন কষ্ট হবে না। আর ওদের এলাকায় এতবছর থাকিস, ছেলে হিসেবে তুইতো খারাপ না ।
হুম, ওর ভাই কি বলসে জানোস , " পোয়া যত ভালা অইবো অজ্ঞুই , ভইঙ্গা ( চট্টগ্রামের বাইরের ) পোয়ার কাছে বিয়া ন দিয়্যুম " ( ছেলে যত ভাল হোক না কেন, চট্টগ্রামের বাইরের ছেলের কাছে বিয়ে দিব না)
খাইছে ! তাইলে তো কাহিনী খারাপ ! থাক বাদ দে! সামিয়া ঠিক থাকলে সব ঠিক ।
ও তো বলসে যে কোন উপায়ে ও এসব ভেস্তে দিবে। আমার ওর ওপর বিশ্বাস আছে ।
দেখ দোস্ত, তুই হাল ছাড়িস না,ও একটা ব্যবস্থা হবেই । তবে তোকে একটা কথা বলি : Uncertainty বলে একটা কথা আছে, বিশ্বাস থাকা উচিত, বিশ্বাস না থাকলে ভালবাসা হয় না । তবে অন্ধবিশ্বাস ভাল না, এই ৫-৬ বছরে আমাদের অনেক বন্ধুকেই প্রেম করতে দেখেছিস এবং পরিসংখ্যান অনুযায়ী অধিকাংশের পরিণাম সুখকর হয় নি। ওদের কারোরই বিশ্বাসে কমতিছিল না। দোস্ত , আম্রিকা প্রবাসি, দামি গাড়ি, নিজের বাড়ি এসব জিনিস ওদের ভালবাসায় চিড় ধরাতে বেশীক্ষন নেয় না ।তার উপ্রে তুমি আবার ভইঙ্গা । দোস্ত কিছুটা মানসিক প্রস্তুতি রাখিস ।
রাকিব সেদিন চুপ করে ছিল । আমার কথার অর্থ সে বুঝতে পেরেছিল
। জীবনটা সিনেমা নাটক না , আর একালের প্রেম এত মহানও না ।ও শেষ পর্যন্ত যা হবার তাই হয়েছিল ।
একই সাথে প্রকাশিত কথার নাটাই! তে
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই নভেম্বর, ২০১২ রাত ১২:০২