.
..
.
.
ক্লাসে স্যার বেশ মজা করে কি যেন বুঝাচ্ছে, আর আমি পেছনে বসে আড়াল থেকে তোমাকে দেখছি। স্যারের দিকে আমার একটুও খেয়াল নেই, আর তুমি মনোযোগ দিয়ে স্যারের কথা শুনছ আর হাসছো। কি যে মিষ্টি তোমার হাসিটা, আমি এভাবে গত চারটি বছর ধরে আড়াল থেকে তোমাকে দেখে গেছি। তুমি হয়ত কখনই খেয়াল করনি। আমি হয়ত তোমার কাছে ইনভিজিবল ভার্সিটির প্রথম দিনে তোমাকে দেখেই কেমন ভাল লেগে গিয়েছিল। আর তুমি দেখতে ভীষণ মিষ্টি বলে সবাই তোমার সাথে বন্ধুত্ব করতে চাইতো, কিন্তু আমার সাহসে কুলায় নি।
কিছুদিন যেতে না যেতেই ক্লাসের ফার্স্ট ছেলেটার সাথে তোমার সম্পর্ক হল, বেশ ঘটা করেই, আর আমার মনটা ভেঙ্গে গেল। ক্লাসের সবচেয়ে বেশি জিপিএ পাওয়া নই বলে আমি হয়ত তোমার কাছে ছিলাম স্পটলাইটের বাইরে। তুমি খুব চালাক, তোমার আর ক্লাস লেকচার আর নোটস নিয়ে কোন ঝামেলা করতে হয় নি, সব তোমার ওই রেডি করে দিত, আর তোমার রেজাল্ট ও ভাল হল । তোমার দূরদর্শিতার প্রশংসা করতে হয়। কিন্তু তোমার আরো চাই। বছর খানেকের মধ্যে তুমি সম্পর্কটা ভেঙ্গে দিলে।
এবার তুমি আরো হুশিয়ার, এবার নতুন করে প্রেম শুরু করলে প্লেবয় টাইপের ছাত্রনেতার সাথে, তোমাকে আর পায় কে ? ট্রেনে সিট পাওয়া নিয়ে তোমাকে আর ভাবতে হয় না আর বখাটেদের ছেলেদের উৎপাত একে পারে বন্ধ হয়ে গেল। এবার পুরো ক্যাম্পাসে যেন তোমার আধিপত্য । বেশ ভালই সুবিধা নিচ্ছিলে তুমি কিন্তু অবশ্যই বিনিময়ে কিছু দিয়ে।
ক্লাসের সবাই তোমাদের মাখামাখি নিয়ে কানাঘুষা করত। মাস চারেক যেতে না যেতেই তোমার প্লেবয় ছাত্রনেতা বয়ফ্রেন্ডের কাছে তোমার সর্বোচ্চ উপযোগিতা শেষ হল আর এবার সে তোমাকে ডাম্প করল । সবার কাছে তোমাকে শয্যাসঙ্গিনী বানানোর মুখরোচক গল্প করে বেড়াতো সে। খুব খারাপ লাগত এসব শুনে, তবে নিজেকে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট আর ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রনেতা না হবার জন্য আর দোষ দিতাম না, কারন আমি স্পটলাইটের বাইরে থাকলেও তোমার সাথে হয়ত এমন কখনো করতাম না।
এবার তুমি সম্পূর্ণ বদলে গেছ, হিজাব করা শুরু করেছ, ফেসবুকে ধর্মীয় পোস্ট আর ছবি দাও, বলে বেড়াও প্রেম করা হারাম আর ছেলে মানুষ খুব খারাপ।
তোমার এই নতুন রুপে তোমাকে আরো ভাল লাগে, এখনো আড়াল থেকে তোমার হাসি দেখতে আমার ভাল লাগে,
কিন্তু কেন জানি তোমার জন্য আমার মনে আর প্রেম জাগে না, করুণা হয়।