শাহবাগ প্রজন্ম স্কয়ারের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
শাহবাগে ইসলাম বিদ্বেষের প্রতিবাদে গর্জে উঠুন শিরোনামে আজকে আমার দেশে প্রকাশিত একটি বিজ্ঞাপন এবং গত কয়েকদিন ধরে যে অপপ্রচার চলছে সেই বিষয়ে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে গণজাগরণ মঞ্চ থেকে। সবার জন্য সেটি শেয়ার করছি। আশা করি এরপর দয়া করে কেউ আর বিভ্রান্তি ছড়াবেন না। নিজেরাও বিভ্রান্ত হবেন না। বিবৃতিটি হুবহু তুলে দিলাম।
গত ১৫ দিন ধরে প্রজন্ম চত্বরের গণজাগরণ মঞ্চে লাখ লাখ মানুষ একাত্তরের মানবতাবিরোধী দল ও অপরাধীদের বিচারের সুনির্দষ্টি দাবিতে দিনরাত ২৪ ঘন্টা স্লোগান দিচ্ছেন। গলা ফাটিয়ে সুতীব্র আত্মচিত্কারে প্রকাশ করছেন ৪২ বছরের পঞ্জীভুত ক্ষোভ। এখানে মুসলমান, হিন্দু, বেৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ সকল ধর্ম, মত ও আদর্শের মানুষ আসছেন। কেবলমাত্র গণহত্যাকারী, খুনী, ধর্ষক, যুদ্ধাপরাধী ও তাদের দোসররা ছাড়া দেশের সর্বসত্মরের মানুষ আজ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ'।
এই গণজারণ মঞ্চ কোন গোপন সমাবেশ নয়। চার দেয়ালে বন্দী কোন কর্মযজ্ঞ নয়। এখানে কী হয়, তা দেশের সব মানুষ দেখেছেন। দিনরাত ২৪ ঘন্টা এখানকার কার্যক্রম সমপ্রচার করছে দেশের সব টেলিভিশন চ্যানেল। সংবাদ প্রচার করছে দেশের সব জাতীয় সংবাদপত্র।
মানবতাবিরোধী অপরাধী, যুদ্ধাপরাধী ও গণহত্যাকারীদের অর্থপুষ্ট কিছু সংবাদমাধ্যম শুরু থেকে জনগণের এই জাগরণ নিয়ে আপত্তিকর, মিথ্যা, বানোয়াট, উদ্ভট কল্পকাহিনী প্রচার ও প্রকাশ করছে। রাজাকার শয়তানের দোসর মসিত্মষ্ক বিকৃত এসব অপ-সংবাদ মাধ্যমকে বিক্ষুব্ধ জনতা ঘৃনাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে।ওরা ওদের গ্রহণযোগ্যতার শেষ বিন্দুটিও হারিয়ে ফেলেছে। ঘাতক ও গণহত্যাকারীদের দোসররা এই দেশে তাদের সর্বশেষ মরণ কামড়টি বসাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। আর তাই দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাসের অপব্যবহার করে শাহবাগে ইসলাম বিদ্বেষের প্রতিবাদে গর্জে উঠুন' শিরোণামে সামপ্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে। অতীতেও যখন ধর্মব্যবসায়ীরা অসিত্মত্বের সংকটে পড়েছে তখনই মানুষের ধর্মানুভূতি ব্যবহার করে প্রিয় বাংলাদেশকে দোযখে পরিণত করার হিংস্র অপচষ্টোয় মেতে উঠেছে। এ কাজটি ওরা একাত্তরেও করেছে। ধর্মের নামে, ধর্মকে ব্যবহার করে এসব শয়তানেরা গণহত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট জায়েজ করতে চেয়েছিলো। কিন্তু জেগে ওঠেছে জনতা। হায়েনার কুচক্র, ঘাতকের শয়তানি, দেশবিরোধীদের সকল অপপ্রচার ভেসে যাবে দেশপ্রেমের জোয়ারে।
দেশবাসীর প্রতি আমাদের অনুরোধ, আপনারা চোখ কান খোলা রাখুন; সজাগ থাকুন। ধর্মের নামে কোন ধরনের অপপ্রচারে বিভ্রানত্ম হবেন না। দেশের আলেম সমাজকে বলছি, শয়তানের প্ররোচনায় প্ররোচিত হবেন না। গণজাগরণ মঞ্চে কেবল ইসলাম ধর্মই না, অন্য কোন ধর্ম কিংবা মতের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ কিংবা ঘৃণা উচ্চারিত হয়নি, হচ্ছে না, হওয়ার কোন কারণ নেই। এই মঞ্চে যাবতীয় ঘৃনার উচ্চারণ যুদ্ধাপরাধী, রাজাকার ও তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে'।মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার, জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষদ্ধি, তাদের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বয়কট এসব দাবির বাইরে গণজাগরণ মঞ্চের অন্য কোন দাবি নেই। কাজেই গণমাধ্যমের কাছে অনুরোধ এর বাইরে অন্য কোন বিষয় নিয়ে আমাদের সাথে কথা বলবেন না।
আমরা স্পষ্ট করে বলছি, ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার। বাংলাদেশের মাটিতে, বাংলা মায়ের পবিত্র দেহে ধর্মান্ধ, মেৌলবাদী, দেশবিরোধীদের একটি আঘাতও পড়তে দেবো না। এসব অপশক্তির বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম চলছে, সংগ্রাম চলবে। জয় বাংলা'।
এ সম্পর্কিত আমার একটি লেখার লিংক:
Click This Link