পেশাদার যৌন কর্মী কারা, তাদের কাজ কি-তা আমরা সবাই জানি। যারা নানা কারণে নিতান্ত বাধ্য হয়ে কিংবা প্রতারিত হয়ে পেশাদার যৌন কর্মী হয়ে উঠে, তাদের আমরা সবাই অপছন্দ করি। পুরুষ-নারী নির্বিশেষে সবাই পারতপক্ষে তাদের এড়িয়ে চলি। সমাজে তাদের ঘৃণার চোখে দেখি। এমনকি যেসব পুরুষ গোপনে এসব যৌন কর্মীর কাছে গিয়ে নিজের যৌন চাহিদা পূরণ করে আসেন, তারাও প্রকাশ্যে এদের ঘৃণা করেন।
আমাদের গনমাধ্যম পেশাদার যৌন কর্মীর চেয়েও খারাপ। গত ১৪ বছরে গণমাধ্যমের সঙ্গে প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ততায় এ অভিজ্ঞতা অনেক আগেই হয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে আরও বেশি টের পেলাম।
গণমাধ্যমে এখন দুটি প্রধান পক্ষ। প্রথম আলো, সমকাল, কালের কন্ঠসহ প্রায় অধিকাংশ সংবাদপত্র ও টিভি চ্যানেল একদিকে শাহবাগ প্রজন্ম স্কয়ারের পক্ষে ইতিবাচক সংবাদ পরিবেশন করছে। শাহবাগ প্রজন্ম স্কয়ারের তরুণদের দাবিগুলো ইতিবাচকভাবে তুলে ধরছেন। এসব দাবির মধ্যে একটি হচ্ছে জামাত সমর্থিত বা তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় যেসব প্রতিষ্ঠান আছে সেসব প্রতিষ্ঠান বর্জন করা। এরা সাধারণ মানুষকে উজ্জীবীত করছে জামাতসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বর্জনের জন্য এবং কেউ বর্জন করলে তা ফলাও করে প্রচার করছে। কিন্তু আরেক দিকে জামাতসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন প্রচার করছে।
যেমন ইসলামী ব্যাংক এর বিজ্ঞাপন প্রায় সব চ্যানেলে দেখা যায়। জনপ্রিয় সব পত্রিকায় দেখা যায়। বরং এ সময়কালে আরও বেড়ে গেছে। এ বৈপরীত্য পেশাদার যৌনকর্মীর চেয়েও জঘণ্য। ঘৃণ্য।
অন্যদিকে গণমাধ্যমের ক্ষুদ্র অংশ আমার দেশ, নয়া দিগন্ত ও জামাতের মুখপত্র সংগ্রাম তাদের নিজস্ব দর্শনের প্রচার-প্রসারে ব্যস্ত। যা নিয়ে আমার কোন আগ্রহ, মতামত ও মন্তব্য নাই। কিন্তু তারা শাহবাগ প্রজন্ম স্কয়ারের যে আন্দোলন, যে আন্দোলন নিয়ে নেতিবাচক খবর প্রকাশ করে যাচ্ছে।
গণমাধ্যমের বোধদয় কবে হবে, আদৌ হবে কিনা-এটা কঠিন প্রশ্ন। কিন্তু মূলধারার গণমাধ্যমের চাহিদা কমুক-বাড়ুক, তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা ক্রমশ কমে যাচ্ছে। মানুষ কোন একটি নির্দিষ্ট গণমাধ্যমকে এখন আর বিশ্বাস করতে পারছে না। এক্ষেত্রে বিকল্প গণমাধ্যমগুলো এজন্যই খুব দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।