বিশেষ দৃস্টি আকর্ষনঃ পাঠক, বিটিয়ারসি সাইবার ক্রাইম প্রোটেকশন টিম ও সম্ভাব্য ল এনফোর্সমেন্ট এজেন্সিজ এর প্রতি দৃস্টি আকর্ষন করছি- ইহা নিতান্তই তৃতীয় শ্রেনীর থ্রীলার কল্পকাহিনী। এমন গল্প হলিউডি মুভিতে অহরহ পাওয়া যায় । বাস্তবের কোন চরিত্র বা ঘটনার সাথে এই ছোট গল্পের কোন প্রকার দুরতম সংস্রবও নেই। কেহ বাস্তবের সাথে কল্পকাহিনীর সামাজিক,রাজনৈতিক, আইনগত কোন মিল খুঁজতে গেলে তা সম্পুর্ন নিজ দায়িত্বে খুঁজবেন । এর জন্য লেখক কোন অবস্থাতেই দায়ী থাকবে না।
--------------------------------------------------------
সময়ঃ সেপ্টেম্বরের শেষার্ধ,২০১৩। কোন এক বর্ষনমুখর রাত
স্থানঃ গ*ভবন (গনপ্রজাতন্ত্রী **লা*শ সরকারে প্রধানমন্ত্রীর রাস্ট্রীয় বাসভবন)
গতকয়েক সপ্তাহের প্রচন্ড ভ্যাঁপসা গরমের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক উত্তাপ। এপ্রিল থেকে অবনতির দিকে যেতে থাকা পরিস্থিতি ক্রমশই ভয়াবহ সংঘাতে রুপ নিয়েছে। একদিকে সরকারের একগুঁয়েমী অন্যদিকে বিরোধী জোট আর উগ্র মৌলবাদী দলসমুহের মাঠ দখলে রাখারার প্রচেস্টা সাড়া দেশে সশস্ত্র দাঙ্গার বন্যা বইয়ে দিচ্ছে। অবরুদ্ধ রাজধানীতে বাড়ছে সাধারন মানুষে হাহাকার। রেডিও ও টিভি চ্যানেলে কর্কশ ভাষায় নিরাপত্তা বাহিনীর শক্তি প্রয়োগের মাত্রা বাড়ানোর ক্রমাগত হুশিয়ারী আর আন্দোলনের কেন্দ্রে থাকা মৌলবাদি দলগুলোর পাল্টা হুংকারে বিপর্যস্ত ঢাকাসহ সমগ্র দেশের জনজীবন। সরকারি দলের ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে থাকার শেষ প্রচেস্টার সাথে সমানুপাতিক হারেই গোলযোগ আর জন অষন্তোস বৃদ্ধি পাচ্ছে। দু পক্ষের সংঘাতে নিত্য দিন কারো না কারো স্বজন হাড়ানোর ব্যাথা বহন করা আর সম্ভব হচ্ছে না বলেই হয়তো এই পরিস্থিতির হাত থেকে যে কোন উপায়েই হোক সাধারন মানুষ মুক্তি চাচ্ছে। ক্ষমতার গ্রীপ ক্রমশই যেন সরকারি দলের হাত থেকে পিছলে বেড়িয়ে যাওয়ার এই অস্থির সময়ে প্রকৃতিও যেন চোখ রাঙ্গাচ্ছে সবাইকে একহাত দেখে নেয়ার।
দেশের উপকুলীয় এলাকায় নিম্নচাপের কারনে গত রাত থেকেই প্রচন্ড বর্ষন হচ্ছে ঢাকা সহ দক্ষিনের জেলাগুলোতে । আবহাওয়া দফতর দুর্যোগপুর্ন আবহাওয়ার জন্য ৭ নং মহাবিপদ সঙ্কেত দেখালেও রাজনীতিতে আসন্ন মহা দুর্যোগের বিপদ সংকেত ঘোষনা করার যেন কেউ অবশিস্ট নেই। উগ্র ধর্মান্ধদের কাঁধে ভর করে উভয় পক্ষেরই প্রতিপক্ষের উপর প্রভাব বিস্তারের লড়াইয়ে অনেকাংশেই জয়ী বিরোধী জোট। এই প্রতিদ্বন্দিতায় এখন চালকের আসনে বিরোধীরা। তবে প্রধান বিরোধী দল একটি বিশেষ সংগত কারনেই চুরান্ত বিজয় অর্জনের কাছাকাছি এসেও নেতৃত্বর সংকটে কিছুটা মানসিক ভাবে হতবিহবল। যার কারনে আন্দোলনের নেতৃত্বর ব্যাটন চলে গেছে উগ্র মৌলবাদিদের হাতে।
কট্টর ধর্মীয় নেতাদের লাগাতার অবরোধের পাশাপাশি প্রবল বর্ষনে ঢাকা শহর আজ জলাবদ্ধতায়ও বন্দী।সরকার প্রধান সব চেস্টাই করে গেছেন পরিস্থিতি অনুকুলে আনার জন্য। ব্লাসফেমি আইন পাশ, নাস্তিক ব্লগারদের ফাঁসির দন্ড কার্যকর, জেল জরিমানা সহ সর্বাত্বক ছাড় দিয়েও কোন ভাবেই ধর্মীয় নেতাদের বাগে আনতে পারছেন না তিনি। দফায় দফায় পার্টির প্রেসিডিয়াম বৈঠকেও কোন কার্যকর সমাধান আসছে না। বেশির ভাগ প্রেসিডিয়াম সদস্য সটকে পরার মতলবে আছেন বলে তার জানা আছে। এদিকে কট্টরপন্থী ইসলামি দলগুলি ধীরে ধীরে জাল গুটিয়ে আনতে শুরু করেছে।
গত ১ মাস আগে প্রধান বিরোধীদলের চেয়ারপার্সন তার পদ থেকে শারীরিক অসুস্থতা জনিত কারনে আকস্মিক ভাবেই পদত্যাগ করেছেন । তারই দীর্ঘ দিনের চির প্রতিদ্বন্দী ভদ্রমহিলা এভাবে মাঠ ত্যাগে তিনি কিছুটা হতাশ। তাঁর জন্য তিনি অবশ্য প্রথমে অনেকটা খুশির সাথে কিছুটা অফমুডেও ছিলেন বটে । কারন আবাহনী-মোহামেডান দ্বৈরথ ছাড়া ফুটবল মাঠ যতটা ম্লান রাজনীতির ময়দান তারচেয়েও বেশি ম্লান *সিনা_*লেদা ছাড়া। তবে কয়েক দিনের মধ্যেই তাঁর সে উচ্ছাস আতংকে রুপ নেয়া ।কারন কিছু নির্ভরযোগ্য গোয়েন্দা তথ্যে। ডিজিএফআই ও বন্ধুদেশের গোয়েন্দা সংস্থার রিসার্চ ক্যাডারদের দেয়া তথ্য অনুযায়ি চির প্রতিদ্বন্দীর অসুস্থতা নিশ্চিত ভাবে প্রাকৃতিক কারনে নয়, বরং তা মাঠ থেকে জর্জেটওয়ালীকে চিরতরে সরানোর উদ্দেশ্যেই তার খুব কাছে মানুষদের করা ষড়যন্ত্রের ফল। অজানা বিষের বিষক্রীয়ায় আক্রান্ত হয়ে তিনি শয্যাশায়ি, মৃত্যুর প্রহর গুনছেন। অন্য সময় হলে তিনি হয়তো আনন্দেই স্বভাবসূলভ বালখিল্য অ-প্রধানমন্ত্রীয় আচরন করে বসতেন, ইনার সার্কেলের সবাইকে ডেকে নিয়ে হাসি ঠাট্টায় মাততেন, দেখতেও হয়তো যেতেন ফুল ফল শুভেচ্ছা কার্ড সমেত। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে এই খবর অত্যন্ত অ্যালারমিং ...**লাদেশের আকাশে জমাট বাঁধা কালো মেঘে মেঘে ঘর্ষন শুরু হয়ে গেছে, ভয়ানক দুর্যোগ অত্যাসন্ন।
বিগত ৭ দিন ধরে তাঁর তেঁজগাও এর কার্যালয় পরিত্যাক্ত ভু লুন্ঠিত অবস্থায় পরে আছে। ক্লান্ত পুলিশ প্রশাষনও নির্দেশ মানছে না।অনেকটা গা ছাড়া ভাবেই তারা তাকিয়ে দেখছে । রাজায় রাজায় যুদ্ধ খামাখা তারা কেন উলখগড়ার মত প্রান দিবেন বা নিবেন ? সরকারের প্রধান নির্বাহি হিসাবে তিনি অনেকটা বাধ্য হয়েই অফিস করছেন তার বাসভবনের অস্থায়ী অফিসে। যারা এ সময় মাঠে আর অনলাইনে থেকে তার সরকারকে সমর্থন দিতে পারতো তারা হঠকারী প্রশাষনের স্টিম রোলারে বেশির ভাগই মুছে গেছে আর ঐ অহেতুক নির্যাতন নিপীড়ন বাকিদেরকে তার থেকে চিরতরে দূরে ঠেলে দিয়েছে। রাজধানী ঢাকায় সরকারি নিয়ন্ত্রন নাম মাত্র অবশিস্ট আছে এবং তা শুধুই সেকেন্ড ক্যাপিটালের আসেপাশে আর ক্যান্টনমেন্ট এলাকায়।
রাত ১১.০৫- প্রবীন নেতা তো*য়েল আহামেদ গ*ভবনের টেরেসে দাঁড়িয়ে বৃস্টির ছাট মুখে মাখতে মাখতে ভাবছেন পুরানো দিনের কথা। সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে তিনি কত ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে ঊঠে এসেছেন সেকথা খুব কম মানুষই উপলব্ধি করবে। আদ্র বাতাস গায়ে মাখতে মাখতে প্রবীন এ নেতা কিছুটা নস্টালজিক হয়ে গেলেন যেন। তার মনে পড়লো ৩৮ বছর আগে জাতির জনকের হত্যাকান্ডের পরপর রক্ষী বাহিনীর সাভার ট্রেনিং সেন্টারের সদস্যরা তাদের পলেটিক্যাল কমিশার তরুন রাজনীতিবিদ তো*য়েল আহামেদকে ফারুক রশিদের হাতে তুলে দেয়ার জন্য কিভাবে ব্যাতিব্যাস্ত হয়ে পরেছিলো সে দিন। যারা ১ দিন আগেও ছিলো কমিটেড, নিবেদিত প্রান আদর্শধারী একটা প্রতাপশালী ফোর্স তারা কত দ্রুতই না বদলে গেলো মাত্র একটি সকালের ব্যাবধানে!
নেত্রীকে তার তরফ থেকে শেষবারের মতন সৌজন্যমুলক বিদায় সম্ভাষন আর কিছু পরামর্শ দেয়া হয়ে গেছে। নেত্রীর সম্ভবত ঐ পরামর্শের বাইরে যাওয়ার সুযোগও খুব একটা নেই । তিনি নিজেও তা জানেন। সব কিছু পায়ে দলে দাবড়ে বেড়াতে চাওয়ার পরিনতি শেষতক এই হয় ভাবলে পোঁড়খাওয়া প্রবীন পলেটিশিয়ান। ভাবতে ভাবতে তো*য়েল আহামেদ গাড়িতে উঠে বসলেন। বাংলাদেশের রাজধানীতে আর থাকার প্রয়োজন তার ফুড়িছে। জীবনের বাকি কটা দিন নিজ গ্রামেই থাকতে চান তিনি।
রাত ১১ .১৫ –তিনি সরকারের সর্বশক্তিমান প্রধান নির্বাহী হলেও এমুহুর্তে একাকীই চুরান্ত গোছগাছে ব্যাস্ত । অবশ্য এ পরিস্থিতিতে সাথে নেয়ার মত জিনিসও খুব বেশি না।সে প্রয়োজনও তার নেই,পর্যাপ্ত ইউরো আর ডলার যথাস্থানে নিরাপদেই গচ্ছিত আছে শুধু পৈত্রিক প্রান আর কয়েক প্রস্থ জামদানী শাড়ী, নিত্য ব্যাবহার্য জিনিস ও সেফ ভল্টে থাকা একটা দামি চামরার বাটুয়া সাদৃস ব্যাগ সাথে নিতে হবে। বিভিন্ন সময়ে উপহার পাওয়া মহা মুল্যবান পাথরগুলোতো আর ফেলে যাওয়া যায় না।
রুমের বাইরে থাকা এসএসএফ সদস্য কিছুক্ষন আগে জানিয়ে গেলেন ৪৬ ব্রিগেড মুভ করতে শুরু করেছে ...এবং পিজিআর প্রধান কিংবা ৯ম ডিভিশনের জিওসি কেউই ফোন রিসিভ করছেন না। সেনাপ্রধান যদিও ঘন্টাখানেক আগে তাকে আশ্বস্ত করেছেন “এভ্রি থিং ইজ আন্ডার কন্ট্রল , উই উইল আপ হোল্ড দ্য কন্সটিট্যুশন অ্যান্ড ইউ আর দ্যা কমান্ডার ইন চীফ... ডিফেন্স মিনিস্ট্রি ইজ স্টিল ইন ইউর পোর্টফোলিও..... সো ডোন্ট গেট টুমাচ ওরিড”। তবুও ৩ দিন আগে সঞ্জীব বাবুর দেয়া তথ্য তিনি কোনভাবেই ফেলে দিতে পারছেন না। তাছাড়া এতো বছর বিপদআপদ আর ঝঞ্জা শংকুল পরিস্থিতি কাটিয়া আসায় নিজের মধ্যেও একটা সিক্সথ সেন্স গড়ে উঠেছে। আর তাঁর সেই ষস্ট ইন্দ্রিয়ই তাকে বারবার বলছে আজকেই সেই রাত, আজকেই সেই রাত...
২ জন এস এস এফ সদস্যকে নিয়ে ধীরে ধীরে তিনি গ*ভবনের এন্টিক ঝাড়বাতির আলোয় দামী কার্পেটে মোড়ানো সিড়ি বেয়ে ছাদের দিকে উঠতে শুরু করলেন।
গ*ভবনের ছাদ রাত ১১.২০-
এক চোখ বৃস্টির ফোঁটার ঝাপসা উইন্ড শিল্ডে ওয়াইপারের অবিরাম নড়াচড়ায় রেখে অন্য চোখে নেভিগেশন প্যানেলে দেখে সাবধানে অল ওয়েদার প্রুফ আগস্টা ওয়েস্টল্যান্ড হেলিকাপ্টার ল্যান্ড করালেন নৌ বাহিনীর অভিজ্ঞ পাইলট। এই দুর্যোগপুর্ন আবহাওয়ার মধ্যেও সোজা চিটাগাং থেকে তার প্রিয় যান্ত্রিক পাখিটিকে উড়িয়ে নিয়ে সোজা গ*ভবনের ছাদে ল্যান্ড করার নির্দেশ আছে তার।ইতালির নির্মিত এই কপ্টার এ ধরনের প্রতিকুল আবহাওয়ায় কাজ করার জন্য উপযুক্ত বাহন । মাত্র গত বছরই নৌ বাহিনীতে সংযোযিত হওয়া আগস্টা ওয়েস্টল্যান্ড কপ্টার মিসাইল ফ্রীগেট বিএনএস বঙ্গবন্ধুতেই সাধারনত দায়িত্ব পালন করে।
তবে আজকের মিশন অবশ্য একেবারেই ভিন্ন,আজ সম্পুর্ন ব্লাইন্ড মিশন । ন্যাভাল অপারেশন্স থেকে পাইলট ও কো পাইলট উভয়কেই সেভাবে ব্রিফ করার পর তার হাতে একটি সীলগালা খামে পরবর্তি নির্দেশনা দেয়া আছে। আর তা শুধু গ*ভবনের ছাদ থেকে উড্ডয়নের পরেই খুলতে হবে ও সে মোতাবেক নির্দেশ পালন করতে হবে। একজন অজ্ঞাত হাই প্রোফাইল যাত্রীকে নিয়ে আকাশে উড়তে হবে আজ এবং পৌছে দিতে হবে তিনি যেখানে যেতে চান। গ*ভবনের ছাদে বসেও এই অন্ধকার ঝড়ের রাতে ঝোড়ো হাওয়া আর রোটারের গর্জন ছাপিয়ে দূর থেকে “নারায়ে তকবির আল্লাহু আকবর” এর ক্ষীন আওয়াজ ভাবে ভেসে আসছে পাইলটদের কানে।
রেইনকোট গায়ে মাথা হুডে ঢেকে যাত্রী উঠে আসলেন গ*ভবনের ছাদে। রেলিং এর ওপর দিয়ে খানিকটা ঝুকে শেষ বারের মত লন সহ প্রাসাদোপম বাড়িটির ওপর এক নজর চোখ বুলিয়ে ছোট্ট করে দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন তিনি ।চশমার গ্লাস মোছার ভান করে ছলছল চোখ জেড়োও হয়তো মুছে নিলেন একবার । দু কদম এগিয়ে একটু দূরে দাঁড়ানো ২ এসএসএফ মেজরকে তাদের অর্পিত দায়িত্ব পালনে নির্ভীক ও অটল দৃঢ়তার জন্য শুভ কামনা জানিয়ে হাত নাড়লেন তারপর পা দানিতে ডান পা রেখে অস্ফুট স্বরে “বিসমিল্লাহ” বলে আসনে উঠে বসলেন তিনি।
কপ্টারের জানালার হাইটেম্পার্ড গ্লাসের বাইরে নিম্নচাপের ঝোড়ো বাতাস আর দমকা হাওয়ায় বৃস্টির ফোঁটা গুলো যেন গুলির মত বিধঁছে আর পটপট আওয়াজ করছে। হঠাৎই তার মনে পড়লো ধানমন্ডির ছাদে ভাইবোন ভাবী সহ এমনি বৃস্টিতে ভেজার কত স্মৃতির কথা । অনেক দিনের পুরোনো প্রিয় কাঁথার গন্ধের শোকার মত প্রিয় সেইসব স্মৃতি কয়েক মুহুর্ত তাকে আনমনা করে দিলো... ভাবলেন ইস ১৫ অগাস্ট যদি এমন একটা কপ্টার থাকতো ৩২ নাম্বারে তাহলে হয়তো...
রোটার ঘুরতে শুরু করেছে ... আরোহীর পরিচয় পাওয়ার পর হতচকিত পাইলট প্রথমে সালাম দিতেই ভুলে গেলেন! পরমুহুর্তে তার দায়িত্বের কথা মনে পড়া মাত্র কো পাইলটকে ইশারা করলেন টেকঅফের প্রস্তুতি নিতে। ধীরে ধীরে কাপ্টারের রোটারে সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নীচের গ*ভবনের প্রধান গেটের সামনে কয়েক লক্ষ জনতার উন্মত্ত কন্ঠস্বর...চিৎকার...। ট্যাস! ট্যাস!! আওয়াজে কয়েকটা গুলিও হলো যেন। দুইশ মিটার নীচের গ*ভবনের গেটে তখন আছড়ে পড়ছে বিক্ষুব্ধ মানুষের মশাল মিছিল । ইক্যুয়িপমেন্ট চেক ও নেভিগেশন সুইচ অন করে কো পাইলট লেঃকমান্ডার ফিরোজকে থাম্ব দেখিয়ে ইশারা করলেন নৌ বাহিনীর পাইলট কমান্ডার সমীর চৌধুরি...তারা টেকঅফ করবার জন্য প্রস্তুত। এরপর সীলগালা করা খাম খুলে দেখলেন তার হেলিকাপ্টারের পরবর্তি গন্তব্যস্থল...
গন্তব্যস্থল মেঘনা নদী ধরে কুমিল্লার উপড় দিয়ে সোজা উড়ে গিয়ে আগরতলা আইএ এফ এয়ারফোর্স বেজ। তেজঁগা প্যারেড গ্রাউন্ডে বসানো বিমান বাহিনীর এফ-৯০ সারফেস টু এয়ার মিসাইলের পাল্লার বাইরে আসা মাত্রই ভারতীয় বিমান সেনার এক ডজন সুখোই-২৭ এয়ার সুপেরিয়রিটি জেট ফাইটার স্কর্ট করে হেলিকপ্টারকে সীমানা পার করে দিবে নিরাপদে।
কিলো খানেক দূরে তখন এমপি হোস্টেলের শীর্ষে দাঁড়িয়ে এনভিজি ফোর্থ জেনারেশন নাইট ভিশন ফিল্ড গ্লাসে চোখ রেখে তীক্ষন দৃস্টিতে অদুরে দন্ডায়মান কপ্টারের মুভমেন্ট মাপছেন একহারা গড়নের এক ব্যাক্তি। রোটরের নড়াচরা নিশ্চিত হতেই এক ঝটকায় কাঁধে তুলে নিলেন গনচীনের তৈরি কিউ ডব্লিউ-২ ভ্যানগার্ড ম্যান পোর্টেবল শর্ট রেঞ্জ সারফেস টু এয়ার মিসাইল লঞ্চার। অপটিক্যাল সাইট চোখ রেখে বাতাসে আদুরে ভঙ্গিতে ঝুলতে থাকা যান্ত্রিক ফড়িংটিকে আবারো মাপলেন শেষবারের মত...টার্গেট ভিউ ফাইন্ডারে লক করে এরপর লম্বা নিঃশ্বাস টেনে আলতো চাপ দিলেন হেয়ার ট্রিগারে। প্রায় ৬ ফুট লম্বা আর ১১.০২ কেজি বিস্ফোরকবাহী মৃত্যুদুত আকাশে পাখা মেললো একরাশ স্ফুলিং ছড়িয়ে।
লক্ষবস্তু, গ*ভবনের ছাদের ২ শ মিটার উপরে অবস্থাকারী আকাশযান ও এর যাত্রীরা।