এইচ এস সি পরীক্ষার রসায়ন ব্যবহারিক পরীক্ষার আগে আমার কলেজের রসায়ন বিষয়ের স্যারকে জিজ্ঞাস করলাম স্যার পরীক্ষা কবে হবে? সে ক্ষেপে গেলো এবং রাগারাগি করলো, আমি অনেকটা বোকা হয়ে চলে আসলাম। রসায়ন ব্যবহারিক পরীক্ষার দিন একটা মৌখিক পরীক্ষা হয়। সেই পরীক্ষায় স্যার আমার কাছে জানতে চাইলো তার দুইটা দোষের কথা।
আমি চিন্তায় পরে গেলাম, পরীক্ষার আগে কবে পরীক্ষা হবে জিজ্ঞেস করায় সে বিরক্তি দেখাইছে এখন তার দুইটা দোষের কথা বললে সে তো নির্ঘাত আমাকে ফেল করায়ে দিবে। আমি বললাম স্যার আপনার কোন দোষ আমার জানা নাই তবে আপনি অনেক ভালো পড়ান সেটা আমরা সবাই আলোচনা করি।
স্যার বললেন তুমি ভয় পাচ্ছো যাও তোমাকে দুই পেপারে ৫০ নাম্বার দিয়ে দিচ্ছি, এবার বল। স্যার নাছোরবান্দা, আমাকে বলতেই হবে, ভয়ে ভয়ে বললাম স্যার আপনি হঠাৎ রেগে যান এটা একটা দোষ, আর কোন দোষ আমার জানা নাই।
পরীক্ষা দিয়ে বের হয়ে এসে নম্বরপত্র পাওয়ার আগ পর্যন্ত টেনশনে ছিলাম, নম্বরপত্র পেয়ে দেখলাম ৫০ ই পেয়েছি।
এটা নিঃসন্দেহে স্যারের একটা অস্বাভাবিক আচরন। এটা খুব সাধারণ ঘটনা যে কারণে স্যারের এই অস্বাভাবিকতা আমাকে কিছু সময় টেনশনে রাখলেও আমি অস্থিরতায় ভুগি নি।
কিন্তু বড় কোন ঘটনা বা ঘনিষ্টজনদের অনেক অস্বাভাবিক আচরন তার কাছের মানুষদের অস্বাভাবিক করে ফেলে।
অস্বাভাবিকতা সংক্রামক ব্যাধির মত, আপনার ঘনিষ্ট মানুষজন যখন অস্বাভাবিক আচরন করবে সেটা তখন আপনাকেও সংক্রামিত করবে। ঘনিষ্ট জনদের আনন্দ যেমন আপনাকে আনন্দিত করে, দুঃখ যেমন আপনাকে দুঃখিত করে তেমনি অস্বাভাবিক আচরন আপনাকে অস্বাভাবিক করবে।
মানুষ কখন অস্বাভাবিক আচরন করে? যে ঘটনা বা পরিস্থিতি মানুষ তার সাধারন চিন্তা দ্বারা ব্যাখা করতে পারে না সেটাই মানুষকে অস্থির এবং অস্বাভাবিক করে তোলে। দীর্ঘদিন ধরে ঘটে যাওয়া ব্যাখ্যাতিত যে ঘটনাগুলো মানুষের অবচেতন মনে থেকে যায় সেগুলোর টুকরো স্মৃতিগুলো হঠাৎ মনে এসে আপনাকে অস্বাভাবিক করে দিতে পারে।
আমরা জটিল সামাজিক পরিবেশের ভেতর দিয়ে যাচ্ছি। ব্যস্ততা আমাদের ঠান্ডা মাথায় পরিস্থিতি বিশ্লেষন করতে দেয় না। এর সাথে যদি ক্রমাগত একটার পর একটা ঘটনা ঘটতে থাকে, তাহলে তার জট খুলতে দীর্ঘ সময় লাগাই স্বাভাবিক।
১. ১৮ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:১১ ০