কম্পিউটার মার্কেট ঢাকায় কিংবা ঢাকার বাইরে গড়ে উঠছে ধীরে ধীরে। ক্রেতারা আরো বেশী করে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে শপিং সেন্টার থেকে কম্পিউটার কিনতে। কিন্তু শপিং সেন্টারের ভিতরটা কি বদলাচ্ছে যদিও বাইরের বদলটা লেগেই আছে । বাইরের চাকচিক্য বাড়ছে আর বাড়ছেই।
আমাদের দেশের শপিং সেন্টারের কাউন্টার গুলোতে মেয়েদের কে তো দেখাই যায় না। অন্য অনেক দেশেই মেয়েরাই সেল্সে কাজ করে। আর সেল্স মানেইতো সার্ভিস, এই সার্ভিসে মেয়েরা ভালো করবে, এটাই স্বাভাবিক। যদি কোন শপিং সেন্টারে দেখা যেতো সেল্সে বেশির ভাগই মেয়ারা কাজ করছে, ক্রেতারা কতইনা স্বস্তিবোধ করতো।
একটা জিনিস বুঝতে পারিনা সেল্স কাউন্টারে যারা বসে তাদের মুখে হাসি থাকেনা কেন। বিক্রেতারা কি ভাবে ক্রেতারা তার শক্ত প্রতিপক্ষ? মুখে হাসি আনলে কি ক্রেতার কাছে নিজের দূর্বলতা প্রকাশ হয়ে যায়?
সদা হাসিময় বিক্রেতারা ক্রেতাদের কাছে কতই না আপন হতে পারতো।
আমাদের কাছে পরিচ্ছন্নতার একটা মাপকাঠি থাকা দরকার। র্বিসিএস কম্পিউটার সিটিকে সবাই পরিষ্কার মার্কেট বলে। আমিও অনেকটা একমত। তবুও একই রকম ফিটিংস এর অন্য দেশের একটা মার্কেটের টয়লেট গুলো আরো পরিচ্ছন্ন ও দুর্গন্ধ মুক্ত থাকে। ক্রেতার চাপ আরো বেশী থাকে সেখানে। তারা কিভাবে এটা পারে, আমরা পারি না কেন? আমরা কি তবে পরিষ্কার জিনিষটাই কি তাই বুঝিনা?
পার্কিং এ নিজের গাড়ী লক করে কি মার্কেটের ভিতরে নিশ্চিন্তে ঘুরতে পারি? এই বুঝি আমার গাড়ীর মিরর কিংবা বাতি খুলে নিয়ে গেল, মনের ভেতরে এই খচখচানি নিয়ে কি শপিং সেন্টারে ঘুড়ে বেড়ানো যায়? কিংবা মার্কেটের সামনে দাঁড়ানো ট্যাক্সি বা সিএনজিতে ফিরতে গিয়ে প্রতারণার দুশ্চিন্তা মাথায় রেখে কি ক্রেতা সুস্থির থাকতে পারেন?
শপিং সেন্টার এখন আর শুধু কেনা কাটার জায়গা না। এটা মন ভালো রাখার ও ঘুড়ে বেড়াবার জায়গাও। রেস্ট্রুরেন্ট, সাইবার ক্যাফে, বসার জায়গা এসব যথেষ্ট থাকার দরকার। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন তো থাকতেই হবে। অফিসের কাজে যে এক্সিকিউটিভ একবার এসেছিলেন তিনি অন্যদিন পরিবারের সাবাইকে নিয়ে আবার আসবেন তো?
কোন জিনিসের কত দাম তা সেল্স কাউন্টারের সবাই মুহুর্তের মধ্যেই বলে দেয়। কিন্তু সেই যন্ত্রের কারিগরি গুণাবলি নিয়ে সঠিক তথ্য কি ক্রেতাকে দিতে পারে? কম্পিউটার টেকনোলজি প্রতিদিন দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। সাধারণত সেল্সে যারা কাজ করে তারা কি এগেুালো নিয়ে পাড়াশোনা করে? কিংবা কোন ট্রেনিং? আমার কিন্তু তা মনে হয় না।
কম্পিউটারের রয়েছে হরেক রকমের যন্ত্র, আর তার ওয়ারেন্টিও নানান রকমের। একেক দোকান একই জিনিসের বিভিন্ন রকমরে ওয়ারেন্টি দিয়ে থাকে। কিন্তু একটা মার্কেটে একটাই ওয়ারেন্ট পলিসি থাকা দরকার। ক্রেতা যে দোকান থেকেই কিনুক, ঐ ওয়ারেন্টীর নিয়ম তার পণ্যের জন্যও প্রযোজ্য হওয়া দরকার। ক্রেতার মনে শান্তি ও স্বস্তি এর চেয়ে বেশী আর কি বা হতে পারে।
কোন শপিং সেন্টার পুরো দিন বন্ধ থাকে কিভাবে?
তাও আবার প্রতি সপ্তাহে একদিন? শপিং সেন্টার গুলোর এ এক উদ্ভট বিলাসিতা। শপিং সেন্টার ক্রেতাদের জন্যই, তারা যখন ভালো মনে করবে তখনই আসবে। দোকান গুলো সে ভাবেই তার কর্মচারীদের সিডিউল ঠিক করবে, এটাই হওয়া উচিৎ। কিন্তু আমাদের এখানে তার উল্টো। মনে হয় ক্রেতারা এখানে আসবেন কিংবা কিনবেন বিক্রেতার মর্জির হিসাব করে। এটাতো হতে পারে না।
সময় এসেছে বিক্রেতাদের বদলে যাওয়ার।
অনেকে বলে বিসিএস কম্পিউটার সিটি অনেকটাই আন্তর্জাতিক মানের। আমি বলি পুরোপুরি আন্তর্জাতিক মানের শপিং সেন্টার হতে হলে তার ভেতরটা বদলাতেই হবে।
এবং খুব দ্রুত।