আজকের পৃথিবীতে মানবজাতিকে পরিচালনার জন্য এর চেয়ে ভালো কোন তন্ত্র-মন্ত্র কি হতে পারে? আমাদের দেশের তথাকথিত মুসলমান বুদ্ধিজীবীরা গণতন্ত্রের গুণকীর্তন করতে করতে মুখে ফেনা তুলছে। কিন্তু আমরা কেন একটু চোখ মেলে তাকিয়ে দেখি না সেই টু পার্টি ডেমোক্রেসি (মুখে বলে মাল্টিপার্টি) আমাদেরকে গত ৪০ বছরে কী দিয়েছে?
যদি বলা হয়, আমরা খারাপ, তাই কীভাবে গণতন্ত্রের মাধ্যমে দেশ পরিচালনা করতে হয় তা আমরা জানি না, তবে জানেটা কে? খোদ আমেরিকাতে সরকারি হিসাবেই ৫ কোটি লোক খেতে পায় না ঠিক মতো। ওই দেশে ১% ইহুদীরা গণতন্ত্রের ধুয়া তুলে তাদের অর্থনীতিকে চুষে খেয়েছে। তাদের জাতীয় সরকারি ব্যাংককে তারা ফেডারেল রিজার্ভের নামে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরিত করেছে।
৯/১১ ফলস ফ্ল্যাপ অপারেশন, ডগউ-এর মতো জাজ্জ্বল্যমান মিথ্যা বক্তব্যের মাধ্যমে এবং ভুয়া মানবাধিকারের ধুয়া তুলে সমস্ত পৃথিবী জুড়ে মুসলিম সভ্যতা একের পর এক ধ্বংস করে যাচ্ছে। এ হচ্ছে গণতন্ত্রের আদি ও অকৃত্রিম রূপ। ক্লিনটনের মতো দুরাচার, বুশের মতো মিথ্যাবাদী যদি গণতন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে পারে তবে খোদ শয়তান কী দোষ করলো? দেশে গত ৪০ বছর ধরে তো আমরা দুই পক্ষ গণতান্ত্রিক যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব নিয়েই কাটিয়ে দিলাম, উন্নয়নের সময় কোথায়? আর এই যুদ্ধাংদেহী ভাব ‘নিকট’ ভবিষ্যতে বাদ যাবে, দূর ভবিষ্যতেও বিলীন হবে বলে ধারণা করা যায় না। ভারতের গণতন্ত্রও দেখার মতো। পশ্চিম ভারত ফার্স্ট ওয়ার্ল্ড আর মধ্য এবং সূর্য ভারত থার্ড ওয়ার্ল্ডেরও নিচে। জাতীয় অর্থনীতিতে কী সুষম বণ্টন আছে? তবে কী ধরে নেয়া যায় না যে, এই গণতন্ত্র মন্ত্র এক ধোঁকাবাজী?
পৃথিবীর মানব রচিত আইনকে যতো সুন্দরভাবেই উপস্থাপন করা হোক না কেন, দিনের শেষে তাকে একটা সমাজ শোষণের হাতিয়ার হিসাবে পরিণত হতে দেখা যায়। মুসলমানদের উচিত খিলাফত বলতে কী বুঝায় সে সম্বন্ধে জ্ঞান আহরণের। খলীফা হযরত উমর ফারূক আলাইহিস সালাম তিনি বলেছিলেন, সুদূর ইরাকের ফোরাত নদীর তীরে যদি কোন একটি কুকুর না খেতে পেয়ে মারা যায়, তবে আমাকে কিয়মাতের দিন তার জন্য জবাবদিহীর সম্মুখীন হতে হবে। অথচ আমাদের এই গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত সরকারের আমলে সন্ত্রাসীরা বাসায় এসে নাবালক সন্তানের সামনে সাংবাদিক পিতা-মাতাকে হত্যা করলে প্রধানমন্ত্রী বলে, তিনি দেশের সব মানুষের বেডরুম পাহারা দিতে পারেন না। “হায় সেলুকাস কী বিচিত্র এ দেশ!” এবং কী বিচিত্র এই তন্ত্র-মন্ত্রের গণতন্ত্র। এখানে ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী কোন বিষয় না, এটা হচ্ছে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত নেতানেতৃদের দায়বদ্ধহীনতার অকৃত্রিম বহিঃপ্রকাশ।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর স্থানে অন্য কোন ব্যক্তি হলেও একই কাজ করতেন, একইভাবে কথা বলতেন। মানুষ যাতে দুনিয়াতেই বেহেশতের মতো সুখ-শান্তি পেতে পারে সে জন্যই মহান আল্লাহ পাক উনার প্রণয়নকৃত পদ্ধতি হলো ‘খিলাফত’ আর তা মুসলমানরা অর্জন করতে পারবে তখনই, যখন সত্যিকারের মুসলমান হওয়া যাবে। জিনসের প্যান্ট আর মুখে সিগারেট নিয়ে (হিযবুত তাহরীরের মতো) খিলাফত দাবি করলে সহজেই বুঝে নিতে হবে যে ওরা ইসলামের শত্রুদের গুমরাহী চক্রান্তে আক্রান্ত অথবা ওদের দ্বারা নিয়োজিত। গণতন্ত্রের খারাপ দিকগুলো গোপনভাবে প্রকাশের মাধ্যমে কিছু মুসলমান যুবককে আত্মঘাতী সন্ত্রাসীতে রূপান্তর করার এক পেশাগত ধোঁকাপূর্ণ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিই পারে মুসলমানদেরকে ধোঁকার মাধ্যমে ইসলামের বিরুদ্ধে এভাবে ব্যবহার করতে।