এই ইট পাথরের জঙ্গলে তেমন
একটা বের হইনা ।তার ওপর
রাস্তায় অসংখ্য যান ও তাদের
জটের
কথা মনে হলে মনটা পিছিয়ে আসে ।
তবুও নানা কারণে মনটা খারাপ ,
আবার ছেলেমেয়ে দুটোও
বাইরে ঘুরতে
যেতে চাচ্ছে ,তাই গতকাল আসরের
পর
বের হলাম ।উদ্দেশ্য
বসুন্ধরা শপিং মল ।কিছুদুর
গিয়ে বাইকের ড্রাইভার ছুটলো
মতিঝিল ।
ওপথে কেনো জানতে চাইলে বলে শাপলা চত্বরটা দেখেই যাই ।
আমার হাত পা শীতল হয়ে গেলো ।
চুপ করে রইলাম ।আর
দেখতে লাগলাম"
হেফাজতি তান্ডব"আইল্যান্ড গুলি ।
একসময় পৌঁছে গেলাম
শাপলা ফুলটির
পাশে ।
ঝকঝকে তকতকে রাস্তা ঢাকার
শহরে বড়ই বেমানান ।আর
মতিঝিলের
রাস্তা তো আয়নার মত পরিস্কার ।
মনে পড়ে গেলো ,চাচাতো বড়ভাই
সিগারেট
খেলে এলাচদানা চিবুতো ,যাতে বাবা টের
না পায় ।
শুভ্র শাপলার চিত্কার
শুনতে পেলাম যেন ,না -হাহাকার
আর আর্তনাদ !
চোখ কান বুজে ছুটলাম আবার ।
শিশুপার্কের সামনে একটু
স্লো চলছিলাম।
দুটো ছেলে এসে দাড়ালো সামনে ,রং তুলি নিয়ে ।একটু দাড়ান বলে
ছেলে মেয়েদের হাত
টেনে দুটো টানে একটা করে পাখি
একে দিয়ে বখশিশ চাইলো ।
ততক্ষণে মেয়ে ছবি তুলে ফেলার
কাজ শুরু করে দিয়েছে ।কারণ
প্রাণীর ছবি হাতে আঁকলে
গুনাহ হয় ।যাই হোক একশ
টাকা দিয়ে
দিলাম ।এটাও একধরণের
চাঁদা বাজি ।আর চারুকলার
ছেলেরা চাঁদা কলাও
জানে ,সেটা জানতে পারলাম ।
ছোটাখাটো কয়েকটা জট
পারি দিয়ে বসুন্ধরার
সামনে গিয়ে দেখি ইউটার্ণ
নিয়ে বিশাল জ্যাম
পারি দিয়ে ঢুকতে ঘন্টা পেরিয়ে যাবে ।
সিদ্ধান্ত পাল্টালাম ।
নিউমার্কেটের
পথে যেতে আবারো জ্যাম ।
একটা হকার পিচ্চি ডাক
দিলো ,আপা আজকেই
একটা জুতো কিনে নিয়েন ।
চমকে উঠে তাকালাম পায়ের
দিকে ।জুতোর দিকে কতদিন
তাকাইনা
কে জানে !সুখতলি ঝুলে আছে ।
ছেলেটা
ভাইকেও খোঁটা দিলো ।
জুতা কিন্যা দেন না কেন ?
বেচারা লজ্জা পেয়ে ছেলেটার
দিকে চেয়ে হাসছিলো ।
নিউমার্কেট ঢুকে সোজা মসজিদে ।
অবাক
হয়ে দেখলাম মসজিদ
ছাড়িয়ে বাইরে চারকাতার
মুসল্লি ।ধুর দেশটা মূর্খ আর
অন্ধতে ভরে যাচ্ছে ।অশিক্ষিত
ছাড়া কেউ এইযুগে নামায পড়ে !
তাও আবার
নিউমার্কেট মসজিদে মসজিদ
ছাড়িয়ে চার কাতার !জামাত শেষ
হবার পরও
একা একা অসংখ্য মুসল্লি নামায
পড়ছে ।ফেরার পথে একই দৃশ্য
দেখেছি সূত্রাপূর থানার মসজিদে ।
কষ্টও পেয়েছি ।এই পুলিশই মন্ত্রীর
হুকুমে হাকীমের
হুকুমকে ভুলে যাবে হয়তো . . . .
জুতো কেনাটা আমার জন্য ভয়াবহ
একটা পরীক্ষা ।কোনো জুতাই পছন্দ
হয়না ।শেষমেশ আগের জুতোটাই
কিনে ফেললাম ।এই নিয়ে পরপর
৩বার এক ই জুতা পড়ছি. . .।ছেলের
জন্য জুতো
কিনতে পারলাম না ।কারণ প্রাণীর
ছবি
বা কার্টুন ছাড়া কোনো জুতো নেই ।
কি ভয়াবহ ব্যাপার ।গেঞ্জি ও
ফতুয়াও একই কারবার ।মন মেযায
তিক্ত হয়ে গেলো ।
মেয়েকে খেলনা কিনে দিয়ে ফিরতি
পথে ছুটলাম ।
।