আওয়ামী লীগ সরকারের সংসদীয় দলীয় উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী এবার খালেদা জিয়ার বিচার করবেন বলে হুমকী দিয়েছেন। কারন খালেদা জিয়া জামায়াতের সাথে জোট করে তাদের মন্ত্রিত্ব দিয়েছেন। তাহলে তো, স্বাধীনতার পর থেকে আওয়ামী লীগের ক্ষমতাকালীন সময়ে যে সব আওয়ামী লীগ নেতারা সরকারের দায়িত্ব পালন করে গেছেন, তাদের সবার বিচার হওযা উচিত । কারন সে সমস্ত ক্ষমতাসীন সরকারের নেতারা যুদ্ধ্পরাধের বিচার স্বাধীনতার ৩৮ বছর পযর্ন্ত ঝুলিয়ে রেখেছেন। আসলে এ কথাটি বলার মধ্যদিয়ে তিনি যে যখন তখন যার তার বিরুদ্ধে যা তা বলতে পারেন তা প্রমান করলেন। স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ে যেখানে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোন দলের সমর্থক খুজে পেতে, টর্চ লাইট দিয়েও খুজে পাওয়া যেত না, সেখানে বর্তমানে বাংলাদেশের কতজন মানুষ আওয়ামী লীগের আদর্শকে, তাদের রাজনীতিকে, সমর্থন করেন। এ বিপুল সংখ্যক আওয়ামী লীগ বিরোধী জনগনের অনেকেই আগে আওয়ামী লীগ করতেন এবং প্রচুর সংখ্যক নতুন প্রজন্ম পাওয়া যাবে যাদের পুর্ব প্রজন্ম আওয়ামী লীগের সমথর্ক ছিল, কিন্তু এরা এখন বি এন পি কিংবা জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত। এভাবে যে কোন দল করার স্বাধীনতা থাকলে আদর্শিক পছন্দ অনুযায়ী যে কোন মানুষ যে কোন দলের সাথে জড়িত হতে পারে। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধই কোন একটি দলের মুল আদর্র্শিক পরিচিতির জন্য যথেষ্ঠ হতে পারে না। বি এন পি, আওয়ামী লীগ, জামায়াতের একটি ভিন্ন ভিন্ন আদর্র্শিক প্রেক্ষিত আছে। এ আদর্র্শিক প্রেক্ষিতকে সমর্র্থন করে যে কেউ যে কোন সময় তার সমর্থন যেকোন রাজনৈতিক দলের প্রতি জানাতে পারেন। তবে এটা ঠিক যে জামায়াত ৭১ এ স্বাধীনতা যুদ্ধে সমর্থন না দিয়ে একটি গহির্ত কাজ করেছেন। যেসব মুক্তিযোদ্ধারা এখন আওয়ামী লীগ না করে অন্য কোন মতাদর্শের রাজনীতির সাথে জড়িত হন, তারা অন্য কোন বাচ-বিচার ছাড়াই এখন অপরাধী হয়ে যাবে, সবাই যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে গেছে এসব অভিযোগে অভিযুক্ত হবে। সাজেদা চৌধুরীর এমন বক্তব্য দায়িত্বহীন এবং অযৌক্তিক।
এবং, জামায়াত করলেই যখন তখন যে কেউ স্বাধীনতা বিরোধী, দেশ বিরোধী, হয়ে যাবে এটাও আমি একটি অযৌক্তিক বচন বলেই মনে করি। তবে বিচার হওয়া উচিৎ যারা ৭১ এ স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বিভিন্ন অপরাধ কার্যে জড়িত ছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কিছু কিছু নেতার কথা শুনলে মনে হয় জামায়াতের রাজনীতির সাথে যুক্ত হওয়া মানেই যুদ্ধাপরাধ করা। এসব বিবেচনা করলে যুদ্ধাপরাধ ইস্যুটি পুরোটাই একটি রাজনীতি মনে হয়।
অপরাধীর বিচার হওয়া উচিত কোন রাজনৈতিক দলের নয়। দলের বিরুদ্ধে ঢালাওভাবে কোন অভিযোগ করে জাতির মধ্যে একটি বড় বিরোধ তৈরি করার কোন মানে হয় না।