আমার প্রথম প্রশ্ন বন্যা আমাদের জন্য উপকারী না অপকারী? অনেকই হয়ত বলবেন বন্যা আবার উপকারী হয় কী করে। কিন্তু সার্বিক বিচারে অতি বন্যা ক্ষতিকর হলেও স্বাভাবিক বন্যা আমাদের দেশের মত গঠন প্রকৃয়া চলমান একটি ব-দ্বীপের জন্য কেবল উপকারীই নয় বরং প্রকৃতিক ও অতি আবশ্যক একটি বিষয়। হাজার বছর ধরে এদেশের নদ-নদী, খাল-বিল, হাওড়-বাওড় আর প্লাবনভূমি উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া বন্যার পানি একদিকে যেমন ভূমিকে প্লাবিত করে জমির উর্বরা শক্তি ও উচ্চতা বাড়িয়েছে অন্যদিকে তেমনই পলিজমে ভড়াট হওয়ার হাত থেকে আমাদের নদ-নদীকে বাঁচিয়ে আসছে। আজ যে জমির উর্বরা শক্তি কমে যাচ্ছে, নদ-নদী, খাল-বিল, হাওড়-বাওড় ভড়াট হয়ে যাচ্ছে তার অন্যতম কারন হচ্ছে বাঁধের মাধ্যমে বন্যা নিয়ন্ত্রণের মত আত্নঘাতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া। পৃথিবীব্যাপী আজ বন্যা নিয়ন্ত্রণের পরিবর্তে বন্যা ব্যবস্থাপনার বিষয়টি অগ্রাধীকার পাচ্ছে।
আমার দ্বিতীয় প্রশ্ন শুষ্ক মৌসুমে আমাদের কতটা পানি প্রয়োজন। হাজার বছর ধরে হাওড় এলাকায় যে চাষ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে তাতে শুষ্ক মোসুমে অতিরিক্ত পানি ক্ষতির বিষয় হয়েই দেখা দেবে। কারণ এসময় চাষের জন্য কম পানি প্রয়োজন হয় এমন ফসলই তারা নির্বাচন করে থাকে। এসময় যদি হঠাৎ করে পানির প্রবেশ ঘটে তাহলে তাদের ফসলের ক্ষতি হবে বই উপকার হবে না।
আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হাজার বছর ধরে এ অঞ্চলে যে জীববৈচিত্র্য গড়ে উঠেছে তা হঠাৎ করে পরিবর্তিত হয়ে যাওয়া পরিবেশের সাথে খাপ খায়াতে না পেরে হারিয়ে যাবে এবং তা আর কোন ভাবেই ফিরে পাওয়া সম্ভব হবে না।
ভূ-গঠন প্রক্রিয়া চলমান এমন একটি বিশাল এলাকার বর্ষা এবং শুষ্কতা প্রাকৃতিকভাবে পরিচালিত হবার পরিবর্তে মানুষের স্বার্থ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হলে তা সেই এলাকার ভূমি গঠন প্রক্রিয়াকে বাঁধাগ্রস্থ করবে, চাষ ব্যবস্থাকে বাঁধাগ্রস্থ করবে, জীববৈচিত্র্যে বড় ধরণের ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে। একথায় একটা বিপর্যয় ডেকে নিয়ে আসবে। যেমনটি হয়েছে পদ্মায় ফারাক্কা আর তিস্তায় গোজালডোবায় মাধ্যমে বেশিরভাগ পানি প্রত্যাহারের ফলে।
আমরা মনে করি যেখানে বাঁধ সেখানেই বিপর্যয়। তাই বাঁধ মুক্ত জীবনের জন্য চাই বাঁধ মুক্ত পৃথিবী। যারা আমাদের সাথে একমত তারা আমাদের ফেসবুক গ্রুপে অংশ নিন আর শেয়ার করুন আপনার মতামত। নিদেন পক্ষে আমাদের ফেসবুক পাতায় একটা লাইক দিন।
আমাদের ফেসবুক গ্রুপ - আমাদের ফেসবুক পাতা
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে নভেম্বর, ২০১১ রাত ৮:৪৪