প্রত্রিকায় সম্প্রতিকালে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে গতকাল শনিবার বেতন-ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে এক সপ্তাহের আন্দোলন কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, গত ২৮ মে তারিখে কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের বেতন-ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর এর প্রতিবাদে ২৬ জুলাই থেকে আন্দোলন শুরু করে। আন্দোলন চলা কালে সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের মত ঘটনা ঘটার পর রমজান ও ঈদের ছুটি এগিয়ে এনে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ প্রদান করে কর্তৃপক্ষ।
উপরের চিত্রটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্প্রতিক সময়কে তুলে ধরলেও এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে কোন না কোন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ফি বছর এরকম ঘটনা ঘটতে দেখা যায় যা কারও কাম্য হতে পারে না। শিক্ষার্থীদের বেতন-ফি বৃদ্ধির কর্তৃপক্ষের যেমন যুক্তি রয়েছে তেমনই শিক্ষার্থীদেরও বেতন-ফি না বাড়ানোর পক্ষে যুক্তির অভাব নেই।
বর্তমানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নবাগত একজন শিক্ষার্থী স্পষ্টভাবে জানে না তার কোর্সটি শেষ করতে কত টাকা টিউশন ফি, পরীক্ষার ফি ইত্যাদি পরিশোধ করতে হবে। ১ম বর্ষ ভর্তির সময় কর্তৃপক্ষ একটি নির্দিষ্ট কোর্সে জন্য শিক্ষার্থী প্রতি যে ফি নির্ধারণ করে দেয় তা পরের বছর কমবে না বাড়বে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। কিন্তু একজন শিক্ষার্থী চার বছর ধরে (৪ বর্ষ বা ৮ সেমিষ্টার) সবগুলো কোর্স শেষ করার পর অনার্স ডিগ্রী অর্জন করে থাকে। এর ফলশ্রুতিতে একজন শিক্ষার্থীকে তার শিক্ষা জীবনের মাঝ পথে বেতন-ফি বৃদ্ধির শিকারে পরিনত হতে হয়। নতুবা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক ঘটনার মতো বিষয়াবলির অবতারণা ঘটা। উভয় বিষয়ই কারও কাছে প্রত্যাশিত নয়।
অথচ সম্মান প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থীদের নতুন সেশনে/ব্যাচে ভর্তির সময় একটু স্বচ্ছতা প্রদর্শন করেই এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। সহজ কথায় বিষয়টি হল এই যে, ভর্তির বিজ্ঞাপনেই একজন শিক্ষার্থীর কোন একটি কোর্স শেষ করতে কত টাকা টিউশন ফি, পরীক্ষার ফি ইত্যাদি সহ মোট কত টাকা পরিশোধ করতে হবে তার উল্লেখ করতে হবে এবং এই ফি পরিবর্তনযোগ্য নয়। ফলে একজন শিক্ষার্থী তার কোর্স শেষ করতে কত টাকা প্রয়োজন তার একটা স্বচ্ছ ধারণা পেয়ে যাবে। কোর্স ফির বিষয়টিও বিবেচনায় এনে একজন শিক্ষার্থীর জন্য তা বিশ্ববিদ্যায় নির্বাচনে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়কও হবে। সর্বোপরি এর মাধ্যমে এড়ানো সম্ভব হবে বর্ধিত বেতন-ফির যাঁতা কলে শিক্ষার্থীদের পিষ্ট হওয়া অথবা এর প্রতিবাদে আন্দোলন, সংঘর্ষ, ভাংচুর এর মতো ঘটনার প্রেক্ষিত বিশ্ববিদ্যালয়ে অনির্ধারিত বন্ধের মত ঘটনা ঘটার।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:৫৮