somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশের মৎস্য সম্পদ পরিসংখ্যান ২০০৯-২০১০: একটি বিশ্লেষণ

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশের মৎস্য অধিদপ্তর বিগত বছরগুলোর মত ২০১১ সালেও ২০০৯-২০১০ অর্থ বছরের মৎস্য সম্পদের বছরওয়ারি পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। সেই পরিসংখ্যানের গুরুত্বপূর্ণ অংশ এখানে বিশ্লেষণসহ উপস্থাপন করা হল।

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ মৎস্যের জলায়তনের মধ্যে বদ্ধ জলাশয়ের পরিমাণ বাড়লেও (১৫.৮৩%) কমেছে উন্মুক্ত জলাশয়ের পরিমাণ (-০.৫৬%)। বদ্ধ জলাশের আধাবদ্ধ জলাশয় হিসেবে নতুন যোগ হয়েছে প্লাবনভূমি যার পরিমাণ ২২,৩৮২ হেক্টর। অন্যদিকে সুন্দরবনসহ নদী ও মোহনা, বিল এবং কাপ্তাই হ্রদের জলায়তন অপরিবর্তিত রয়েছে তেমনই অপরিবর্তিত রয়েছে সামুদ্রিক মৎস্যের জলায়তন।

জেলের সংখ্যা এবং চিংড়ি চাষির সংখ্যা অপরিবর্তিত থাকলেও বেড়েছে মৎস্যচাষির সংখ্যা (+ ৩৭.৩৪%)।

এবছর দেশের মোট মৎস্য উৎপাদন হয়েছে ২৮,৯৯,১৯৮ মে. টন যা গত বছরের চেয়ে ৬.৮২ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে অভ্যন্তরীন জলাশয়ের মৎস্য উৎপাদন বেড়েছে ৮.১৯ শতাংশ এবং সামুদ্রিক উৎস্য হতে উৎপাদন বেড়েছে মাত্র ০.৫১%। অভ্যন্তরীন জলাশয়ের মৎস্য উৎপাদনের মধ্যে বদ্ধ জলাশয়ের (চাষকৃত) মৎস্য উৎপাদন ২১.৩৯% বাড়লেও উন্মুক্ত জলাশয়ের (আহরিত) মৎস্য উৎপাদন কমেছে ৯.১৩%।

হেক্টর প্রতি চাষকৃত মাছের গড় উৎপাদন সর্বোচ্চ বেড়েছে বাঁওড়ে (১৯.৬৯%) অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি কমেছে চিংড়ি খামারে (-৫.৫৩%) । হেক্টর প্রতি আহরিত মাছের গড় উৎপাদন বেড়েছে শুধুমাত্র নদী ও মোহনা অঞ্চলে। বিল, কাপ্তাই লেক, প্লাবনভূমিতে কমলেও সবচেয়ে বেশি কমেছে সুন্দরবনে (-১২৬.০৯%)।

প্রজাতি ভিত্তিক মৎস্য উৎপাদন ইলিশের ক্ষেত্রে ৪.৬০% বাড়লেও চিংড়ির ক্ষেত্রে কমেছে ৩১.০৮%। সামুদ্রিক ইলিশের উৎপাদন কমলেও বেড়েছে অভ্যন্তরীণ ইলিশের উৎপাদন। চাষকৃত চিংড়ির উৎপাদন কমেছে ১৬.৯২% অন্যদিকে আহরিত চিংড়িও উৎপাদন কমেছে ৪৩.৬৭%। চাষকৃত ও আহরিত চিংড়ির উৎপাদন কমলেও মোট উৎপাদিত চিংড়ির ৪৭.০৭ ভাগই চাষকৃত যা গত বছরের চেয়ে ১০.৭৭ শতাংশ বেশী।

মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ প্লান্টের সংখ্যায় গত বছর কোন পরিবর্তন না হলেও এ বছর বেড়ে হয়েছে ১৬২ টি যা গত বছরের চেয়ে ১৭.৯০% বেশী। অন্যদিকে মৎস্য ও মৎস্যজাত দ্রব্যাদি রপ্তানির পরিমাণ ও মূল্য বাড়লেও বৈদেশিক মুদ্রায় অবদান কমেছে ১১.১১%।

গত বছরের মত এবছরও জিএনপি-তে মাছের মূল্য ও অবদানের কোন পরিবর্তন হয় নি অন্যদিকে কৃষিখাতে অবদান গত বছর ৬.৫২ শতাংশ বাড়লেও এ বছর রয়েছে অপরিবর্তিত।

জনপ্রতি মাছের বাৎসরিক চাহিদা গত বছরে ১৩.৫৬% বাড়লেও এবছর অপরিবর্তিত রয়েছে। অন্যদিকে বাৎসরিক মাছের মোট চাহিদা বেড়েছে ৮.৯৯ শতাংশ। জনপ্রতি বাৎসরিক মাছ গ্রহণের পরিমাণ ৭.৫ % বাড়লেও জনপ্রতি বাৎসরিক মাছের ঘাটতি কমেছে ৯৪.৬৮ শতাংশ যা আশাপ্রদ খবর। তবে প্রাণিজ আমিষ সরবরাহে মাছের অবদানে কোন পরিবর্তন হয়নি এবছরও।

দেশে মৎস্য হ্যাচারির সংখ্যা গত বছর ২.১৮% কমলেও এ বছরে বেড়েছে ৮.২৭ শতাংশ। কিন্তু হ্যাচারিতে রেণু উৎপাদন, মৎস্য নার্সারির সংখ্যা এবং নার্সারিতে পোনা মাছ উৎপাদন বাড়েনি সামান্যও। কিন্তু প্রাকৃতিক উৎস্য হতে রেণু সংগ্রহের পরিমাণ ১৪.৮৪% বেড়ে হয়েছে ২,২০৩ কেজি‌।

গত বছর বাগদা হ্যাচারির সংখ্যা সামান্য বেড়ে (১.৭৫%) ৫৮টি হলেও এবছর নতুন কোন হ্যাচারি স্থাপিত হয়নি। এছাড়াও অপরিবর্তিত রয়েছে বাগদার রেণু (পিএল) উৎপাদন, গলদা হ্যাচারি সংখ্যা, গলদার রেণু (পিএল) উৎপাদন ও প্রাকৃতিক উৎস্য থেকে চিংড়ির রেণু (পিএল) সংগ্রহের পরিমাণ।

মৎস্য হ্যাচারি/মৎস্যবীজ উৎপাদন খামার ৫.৮৮% বেড়ে হয়েছে ১১৯টি এবং হ্যাচারিতে বেণু উৎপাদন বেড়েছে মাত্র ০.৭৫ শতাংশ। অন্যদিকে মৎস্য/চিংড়ি প্রশিক্ষণ খামার, মৎস্য প্রশিক্ষণ একাডেমি, বাগদা চিংড়ি হ্যাচারি, গলদা চিংড়ি হ্যাচারি, চিংড়ি প্রদর্শনী খামার, চিংড়ি আহরণ ও সেবা কেন্দ্র, মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র (বিএফডিসি) ও মৎস্য গবেষণা কেন্দ্র/উপকেন্দ্রের সংখ্যা অপরিবর্তিত রয়েছে এবছরও।

সামুদ্রিক মৎস্য আহরণ ইউনিটের মধ্যে সনাতনী নৌকা এবং জাল ও বড়শীর পরিমাণ অপরিবর্তিত থাকলেও বেড়েছে ট্রলার (১৫.৫৭%), ইঞ্জিন চালিত নৌকা (২০.২০%) এবং ইঞ্জিন বিহীন নৌকা (৩.৪৪%)।

বিদেশী মৎস্য প্রজাতি, স্বাদু পানির চিংড়ি প্রজাতি, সামুদ্রিক সৎস্য প্রজাতি ও সামুদ্রিক চিংড়ি প্রজাতির সংখ্যায় কোন পরিবর্তন না আসলেও স্বাদু পানির মাছের প্রজাতির সংখ্যা ১.৯২% কমে হয়েছে ২৬০টি।

মৎস্য অধিদপ্তর মৎস্য সেক্টরের জনবলের ২০০৯-২০১০ সালের তথ্যাদি প্রকাশ করে নি। ফলে তা এখানে দেখানো হল না।


আরও বিস্তারিত রয়েছে বিডিফিশের এই পাতায়


www.bdfish.org | en.bdfish.org | bn.bdfish.org
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ৮:০২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমেরিকার ডিপার্টমেন্ট অফ এডুকেশন বন্ধ করা নিয়ে কিছু ব্যক্তিগত ভাবনা

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২২ শে মার্চ, ২০২৫ সকাল ৮:৪১


সম্প্রতি আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন বহুল আলোচিত "ডিপার্টমেন্ট অফ এডুকেশন" বন্ধ করা নিয়ে অনেককেই উদ্বিগ্ন দেখতে পাচ্ছি। বিষয়টি আমাদের মতো সাধারণ আমেরিকান নাগরিকদের জন্য কিছুটা হলেও চিন্তার কারণ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ: গণতন্ত্র ও আইনের আলোকে বিশ্লেষণ

লিখেছেন নতুন নকিব, ২২ শে মার্চ, ২০২৫ সকাল ১০:৪৪

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ: গণতন্ত্র ও আইনের আলোকে বিশ্লেষণ

অন্তর্জাল থেকে সংগৃহিত।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে আওয়ামী লীগ বিশেষ ভূমিকা পালনকারী দল। দলটি দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও গণতন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা একটা কঠিন সময় পার করছি....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ২২ শে মার্চ, ২০২৫ দুপুর ২:৫১

আমরা একটা কঠিন সময় পার করছি....

বিএনপি জানে তাদের মূল প্রতিপক্ষ কারা.....
ছাত্রসমন্বয়করা জানে রাজনীতিতে তাদের দৌড় কতদূর...

তারেক রহমানের যখন দেশে ফেরার সময় ঘনিয়ে আসছে তখনই হাসনাত গং নানান কাহিনী শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০৫০ সালে বিশ্বের বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীদের সংখ্যা সংক্রান্ত পূর্বাভাস

লিখেছেন সাড়ে চুয়াত্তর, ২২ শে মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৮

পিউ রিসার্চের ২০১৫ সালের একটা জরীপের ফলাফল নিয়ে এই পোস্ট দিলাম। পিউ রিসার্চ একটি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সামাজিক জরীপ এবং গবেষণা সংস্থা। এই জরীপের বিষয় ছিল, ২০৫০ সালে বিশ্বের বিভিন্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

শ্বেতশুভ্র সোর্ড লিলি

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ২২ শে মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৫:৩৪



সোর্ড লিলি বা মেক্সিকান সোর্ড লিলির নামের সাথে লিলি থাকলেও এটি আসলে লিলি বা লিলি পরিবারের কোনো ফুল নয়। কিভাবে কিভাবে যেনো এর নামের সাথে লিলি জুড়ে গেছে। এতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×