বাংলাদেশ অতীতে 'গৌড়দেশ' নামে পরিচিত ছিল ।পরবর্তীতে গৌড় বলতে উত্তরবঙ্গকে বোঝাত ।বাংলার দক্ষিণ ও পূর্ব অঞ্ঝল 'বঙ্গ' ,আরও পরে উত্তর অঞ্ঝল 'বরেন্দ্র' ,পশ্চিম অঞ্ঝল 'রাঢ়' নামে পরিচিত ছিল ।মুসলমান আমলে বঙ্গ ,রাঢ় ,বরেন্দ্র ,গৌড় নামগুলো প্রচলিত ছিল ।
মুঘল আমলে বাঙ্গালাহ বা সুবায়ে বাঙ্গালা থেকে বাঙলা নামের সৃষ্টি ।পর্তুগিজদের কাগজপত্রে BANGLA থেকে পরবর্তীকালে ইংরেজদের কাজে BENGAL শব্দের উৎপত্তি ।পর্তুগিজরা এদেশীয় ভাষাকে BENGALA ভাষা বলেছেন । ইংরেজরা 'বাঙ্গালি ভাষা' হিসেবে নামকরণ করেছেন 'বাঙলা ভাষা' । উনিশ শতকের প্রথম দিকে 'গৌড়ীয় ভাষা' বলা হতো বাঙলা ভাষাকে ।রামমোহন রায় তার ব্যাকরণের নাম দিয়েছিলেন 'গৌড়ীয় ব্যাকরণ' ।উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময় থেকে ভাষা অর্থে বাঙলা শব্দ ব্যবহৃত হচ্ছে ।বিদ্যাসাগর ,বঙ্কিমচন্দ্র প্রমুখ লেখক বাঙলা শব্দ ব্যবহার করেছেন বাংলা ভাষা অর্থে । 'বাংলা' বানান অতি সাম্প্রতিক কালের ।আমাদের দেশে কিছুদিন পূর্বেও 'বাঙলা' বানান ব্যবহৃত হয়েছে ।অনেকেই তাই এ বানানটিকে শুদ্ধ বলে মত দিয়েছেন ।
¤¤¤¤¤
বাংলা ভাষার উৎপত্তি
প্রায় পাঁচ হাজার বছর পূর্বে মধ্য এশিয়ার পশ্চিম এবং ইউরোপের মধ্যভাগ থেকে দক্ষিন পূর্বাংশ পর্যন্ত একটি সুসভ্য জাতি বসবাস করত ।তারা মোটামুটি একই ভাষায় কথা বলতো ।এই ভাষাকেই ইন্দো-ইউরোপীয় মূল ভাষা বলা হয়ে থাকে ।এই মূল ভাষাটি থেকে বাংলা ভাষার জন্ম কীভাবে হয়েছে তার রূপ নিচে দেয়া হলঃ
ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাবংশ>শতম>আর্য>ভারতীয় আর্য>কথ্যরুপ>প্রাচ্য>মাগধী>মাগধী অপভ্রংশ>মৈথিলী>বাংলা
স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের ভাষা বাংলা বহুমুখী ব্যবহারের উপযোগী হয়ে উঠেছে ।তাই বর্তমানে ভাষাবিদগণ বাংলা ভাষার ব্যাকরণ নিয়ে ব্যাপক ও বিস্তৃতি গবেষনায় রত আছেন ।এ কারণে আশা কারা যায় ,বাংলা ভাষা ও বাংলা ও বাংলা ব্যাকরণ গ্রন্থের নীতি পদ্ধতির আন্তর্জাতিক মান রক্ষিত হবে ।