মুসলমান সে যে আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পন করেছে। আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পন করার অর্থ হল নিজের জীবন, মরণ, ধন-জন, এক কথায় নিজের সবকিছু আল্লহর জন্য নিবেদিত করা। কিন্তু আমরা কয় জন তা সঠিক ভাবে করতে পেরেছি?
মুসলমান হবার প্রথম শর্ত হল আল্লাহ যে এক ও অদ্বিতীয় তা বিশ্বাস করা। মানে আল্লহর সাথে কাওকে শরীক না করা। আমরা কি জানি আমরা আল্লাহর সাথে শরীক করি কিনা?
এটা জানতে হলে আমাদেরকে জানতে হবে শরীক করা কি?
কোনও কাজে কাওকে শরীক করা করা বুলতে বুঝায় যে সেই কাজ করতে তার অবদান আছে বা তার সাহায্য প্রয়োজন। এখন, আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে শরীক করা বলতে বুঝায় যে ঐ কাজ টি সম্পাদন করতে আল্লাহর সাথে ঐ সত্তারও প্রয়োজন আছে অথবা ঐ সত্তা একাকীও কাজ টি সম্পাদন করতে সক্ষম।
যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে আমরা একবার ভেবে দেখি কতো কাজের ব্যাপারেই না আমরা আল্লহর সাথে শরীক করছি!
যদি তা নাই করে থাকি তাহলে আমরা কেন নামাজের সময় হলে নামাজ পরতে যাইনা? কেনো ইস্লামের প্রতি, সৃষ্টিকর্তার পাঠানো বানীর প্রতি আমাদের এত অনাগ্রহ যে আমরা তা খুলে দেখার সময়ও পাইনা?
কেন প্রতিদিন সকালে একবার কুরান এর দিকে নযর দেয়ার সময় পাইনা?
আসলে সেই সময়গুলোতেই আমরা আল্লাহর সাথে শরীক করে থাকি! কি ঘাবড়ে গেলেন নাকি? আচ্ছা বুঝিয়ে বলছি,
ফজর নামাজের সময় মনে করি আরাম দেয়ার মালিক বিছানা, আল্লাহ কে তখন আর আরাম দেয়ার মালিক মনে হয়না। তাই আমরা আর বিছানা ছেরে উঠে কষ্ট করে নামাজ পড়িনা।
যোহর নামাজের সময় কাজে ব্যাস্ত থাকি, মনে হয় এই কাজ টা এই মুহুর্তে ছেরে না গেলেই মনে হয় কাজ টা আমি করতে পারবো, ভুলে যাই সব কাজ সম্পাদন করার ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহরই আছে।
বিকেলে একটু আরাম আয়েশ করতে হবেনা! অন্তত শরীর টাকে ফিটিং রাখার জন্য হলেও একটু প্রাক্টিস দরকার, মনে হয়না যে শরীর ঠিক রাখার মালিকও আল্লাহ। তাই তখন আসরের নামাজটাকে ঝামেলা মনে হয়। মাগরিবের সময় পরতে বসতে হবে, তাই তখন আর মাগরিবের নামাজ পরার সময় থাকেনা। তখন আমাদের মনে থাকেনা যে সকল হিকমাত এর মালিক আল্লাহ! আর এশার কথা নাহয় নাই বা বললাম!
এই হচ্ছে আমাদের শিরিক করার নমুনা। আমরা শুধু এই কয়টি ক্ষেত্রে নয় জীবনের অসংখ্য ক্ষেত্রে এই ধরনের শিরিক করে থাকি। নবীজী আমাদের কে শিরিকে ছগীরা থেকে সাবধান করে গেছেন। এই হলো সেই শিরিকে ছগীরা। এই বিজ্ঞানের যুগে কেউ কোনোও পাথরের মুর্তি কে প্রতিপালক ভাববেনা, অন্তত কন মুসলমান নয় যার সামান্যতম জ্ঞানও আছে!
কিন্তু শিরিক তো শিরিক ই। এটা আল্লাহর উপর সবচেয়ে বড়ো যুলুম। কুরআনে বর্ণীত অতিত জাতিরা আল্লাহর সাথে বড় যুলুম করেছিল, আর তাই আল্লাহ তাদের কে বড় ধরণের শাস্তিও দিয়েছিলেন।
আমাদের যে কষ্ট আসে তা এই ছোট ছোট শিরিক গুলো করার জন্যই। তাহলে আমরা কি এটা বলতে পারিনা যে আমরা সত্যিকার অর্থে মুসলমান ই নই?
আমি সবাইকেই এর অন্তর্ভুক্ত বলছিনা, আমরা গুটিকয়েক আছি যারা শিরিক কম করি বা না করার চেষ্টা করি। আবার আল্লাহ কাওকে দুনিয়ায় উপভোগ করার সুযোগ দিয়েছেন, তারাও এর আওতার বাইরে।
আসুন, আমরা খুজে বের করি কোথায় কোথায় আমরা শিরিক করছি, আর সেগুলো বাদ দেবার চেষ্টায় রত থেকে পরিপুর্ন মুসলিম হতে চেষ্টা করি। এতে আমরা আল্লাহর উপর যুলম করা থেকেও বাচবো, আর আল্লাহর উপর করা যুলুমের শাস্তি পাওয়া থেকেও বাচবো।
সুপ্রিয় পাঠক,
শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ, আল্লাহ আমাকে ও আপনাকে এই বিষয়টি স্মরন রেখে জীবন পরিচালনা করার তাওফিক্ব দিন। আমীন!
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ উপরক্তো লেখা সম্পুর্ন্তটাই আমার নিজের চিন্তাধারা। কারও বই বা কথা বা উক্তি থেকে কোনও অংশ সংযোজন করা হয়নি, যদি কাকতালীয় ভাবে এসেও থাকে তার জন্য আমি দুঃখিত। এই লেখা কারো মতের বিরুদ্ধে গেলে আমি দুঃখিত এবং প্রয়োজনীয় সংশোধন যা হতে পারে তা জানাতে অনুরোধ রইলো। আর কেউ যদি আমার মতামত কে সমর্থন করেন তাহলে তাও জানাতে অনুরোধ রইলো।
মা আসসালাম