সকাল থেকে মেজাজ খুব খারাপ হয়ে আছে, রাতে ভাল ঘুম হয়নাই তার উপর বাড়ি বর্তি মেহমান। বাপের বড় ছেলে বলে কিনা জানিনা দুনিয়ার সকল জঞ্জাল আমার উপ্রে আইসা ভর করে। সয়তান একটা আছে একটু পর পর মেসেজ, দেয় জান্টু পাখি কি করো, কলিজাটা নাস্তা করছো। আজিব সাত সকালে সামনে থাকলে মনেহয় একটা বন থাপ্পড় খাইত। আর আমার বাপ জানের কথা আর কি কমু দুনিয়ার সমস্ত দায়িত্ব তার নেয়াই লাগে। ফুপাত ভাই আসছে বিয়া করতে ওনাদের নিজের ভাড়ি আছে তাও আমাদের বারিতেই বিয়ার আয়োজন করতে হবে কিন্তু নিজের পোলার বিয়ার বয়স পার হইয়া যাইতাছে কোন খবর নাই।
ভাইয়া (আমার ফুপাত ভাই, যার বিয়া নিয়া এই কাহিনী) আমাকে এসে জিজ্ঞেশ করে কিরে তুই বলদের মতো এমন গুরিস কেন যা গোসল কইরা রেডি হ। আমি কইলাম কেমনে কি? সকালে আলমারি খুইলা দেখি একটাও ক্রিম কালারের পাঞ্জাবী নাই( ভাই ক্রিম কালারের শেরওয়ানী পরবে সে যন্য হগলের ঐ কালার এর পাঞ্জাবী পরা লাগবো , অদ্ভুৎ)।হেয় কয় আগে কবিনা ছাগল( বড়রা কি যে মনে করে নিজেদের, বলদ , ছাগল, গাধা এইসব গালি মুখে লাইগাই থাকে) নে ধর কইয়া ৩০০০টাকা দিলো পাঞ্জাবী কিনতে। টেকা দেইখা মনটা ভাল হইয়া গেল। গেলাম পাঞ্জাবী কিন্তে ২ ঘণ্টায় ৩০টা দোকান গুইরা হালার ক্রিম কালারের পাঞ্জাবী পাইনা। আমার পোরা কপালের শুরু সেখান থেইকা। যাইহোক শেষমেশ বসুন্ধরায় গিয়া পাওয়া গেল। তারা হুরা কইরা আইতে গিয়া দোকানে পাঞ্জাবী থুইয়া আরেক মহিলার শাড়ি নিয়া বাসায় আইসা পরছি। সবাই আগ্রহ নিয়া পাঞ্জাবী দেখার লাইগা প্যাকেট খুইলা দেখে শাড়ি , ওনাদের আর পায় কে!!হাসির শব্দে আমার সুইসাইড খাইতে মঞ্চাইলো। দৌড়াইয়া গেলাম আবার, মহিলা দেখি দোকানে বইয়া রইছে এই শাড়ি না নিয়া যাইবনা।মাগমা কি বেডির বেডি!! আমি পুরুষ পোলা তাও আর কিছুক্ষণ ঐখানে থাকলে আমার বাচ্চা প্রসব হইয়া যাইত।
যাক পাঞ্জাবী নিয়া বাসায় আইসা গোসল দিয়া হেব্বি একটা মাঞ্জা মারলাম। ওম্মা রুম থেইকা বের হতেই আমার বাপে কয় বাবা তারা হুরার বিতরে পানের জর্দা আনতে ভুইলা গেছিগা । একটু দৌড় দিয়া লইয়া আয়। আমার মেজাজ কোন পর্যায়ে কি আর কইতাম। মোরে আইসা জর্দা কিনলাম রিক্সা নিয়া বাসায় যাইতাছি, হটাৎ দেখি বুকের কাছটা গরম গরম লাগে , হাত দিয়া দেখি ভিজা ভিজা !!কি হইলো?? পাশে দাড়িয়ে থাকা বাসের জানলায় দেখি এক বুড়া বেটায় তরমুজের বিচির মতো দাঁত বের কইরা হাসে, কয় বাবা মাফ কইরা দেও আমি দেখিনাই। পাঞ্জাবির দিক চাইয়া দেখি লাল রঙের পানের পিক দিয়া পুরাটা ছাপা। অতি রাগে বোদাই হইয়া গেলাম , মুখ দিয়া দেখি কিছু আর বের হয়না। বাসায় গিয়া আবার সাওয়ার নিলাম আলমারি থেকে মেরুন কালারের একটা পাঞ্জাবি পরলাম। ততক্ষণে সবাই চলে গেছে।আহারে আমি আমার এক দোস্তরে নিয়া বাইক দিয়া রওয়ানা দিলাম। হালায় কয় ও চালাইব ,বাইক চালায় না বুলেট ট্রেন চালায় আল্লাই যানে(রোলার কোস্টারে উডনের কতাডা মনে পইরা গেল) আমিতো চোখ বন্ধ কইরা খিচ মাইরা রইলাম আর মনে মনে ওয়াদা করলাম এই জীবনে আর কারো বাইক-এর পিছনে উডুমনা (নিজের বাইক এর লাইগা বড় মায়া হইলো)। বিয়া বাড়িতে গিয়া দেখি সবাই খাওয়া দাওয়া শুরু কইরা দিছে।
আথকার মইধ্যে এক বেডি আমারে ডাক দিয়া কয় ঐ ওয়েটার এইদিকে আসো দেখনা টেবিলে রাইস নাই রাইস নিয়া আস, তোমরা এত কাম চোর কেন? খালি হাওয়া লাগাইয়া গুরো কে!! টিপস নেওনের সময় তো দৌড়াইয়া আসো। আমি তো টাস্কি এডা কি হইলো?? মহিলার কতা হুইনা সব আমার দিকে বেটকি মাছের মত চাইয়া রইছে। মহিলা আবার কয় খারাইয়া রইছস কেন বেটা দৌড়দিয়া যা। ভাবির বাপে আইসা কয় আপা এইটা আমাগ জামাইয়ের ভাই। মহিলা এই কতা হুইনা আমার দিকে একবার তাকাইয়া কয় জামাইর ভাই তাইলে ওয়েটারগো ড্রেস পীনসে কেন?? চার দিক তাকাইয়া দেখি কতা ঠিক সব ওয়েটার মেরুন কালারের পাঞ্জাবী পরা। ভাবির বাপে সখ কইরা এই আয়োজন করছে, সব ওয়েটাররে একটা কইরা মেরুন পাঞ্জাবী কিনা দিছে। কি আর কইতাম চুপ চাপ ভাইয়ের সাইডে গিয়া বইয়া রইলাম। একটু পরে বেয়াইনরা আইসা কয় দুলা বাই আপ্নের ভাই ওয়েটার সাইজা আইসে কেন? ভাইও দেখি ওগো লগে মজা লইতাছে। মনের দুঃখে না খাইয়া বাসায় আইয়া পরলাম।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:২০