সুইডেনের কিছু প্রাচীন সমাধির ভেতরে পাওয়া কাপড়ের মাঝে আরবী হরফে ´আল্লাহ্´ ও ´আলী´শব্দ উদ্ধার করা হয়েছে। সমাধিগুলো ভাইকিংদের সময়ের। প্রায় ১০০০ বছর পুরনো। উপ্সালার পুরনো নগরীর এক সমাধিস্থল থেকে তোলা ভাইকিংসদের মৃতদেহে কাপড়গুলো জড়ানো ছিল। একটি দুটি নয়, ১০টি মৃতদেহের কাপড়ে লেখা আছে ´আল্লাহ্´ ও ´আলী´।
কয়েক বছর আগে বিরকা শহরের এক নারীর কবরে পাওয়া রুপার আংটিতে পাওয়া গিয়েছিল´আল্লাহ্´শব্দটি।
ভাইকিংসদের সাথে, অন্য অর্থে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান এলাকার মানুষদের সাথে আরব মুসলিমদের যোগাযোগ হয়েছিল তার প্রমাণ পাওয়া যায় পুরনো ধাতব মুদ্রা ও অলঙ্কার থেকে। কিন্তু কবরের মধ্যে পাওয়া কাপড়ে শব্দগুলোর অর্থ দাঁড়াতে পারে যে সেই সময় এই অঞ্চলের কিছু মানুষ ইসলাম ধর্মের অনুসারী হয়েছিল এবং তাদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার / দাফনের রীতিনীতি অংশ ছিল আরবি হরফে লেখা কাপড় পরিধান করানো।
´আলী´শব্দটি হয়তো এসেছে হযরত আলী ইবনে আবু তালিব (আ.) থেকে যিনি ইসলামের ইতিহাসের অন্যতম প্রধান ব্যক্তি। তিনি চতুর্থ খোলাফায়ে রাশেদীন এবং হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহুর চাচাতো ভাই ও মেয়ের জামাই। হতে পারে উপ্সালার কোন এক গোত্র হযরত আলী ইবনে আবু তালিবের অনুসারীদের ধারা অনুপ্রাণিত হয়ে ইসলাম ধর্ম অথবা ধর্মের কোন নির্দিষ্ট রীতি গ্রহণ করেছিল।
এটাও হতে পারে যে আরবের মুসলিমদের সাথে নয়, ভাইকিংসদের যোগাযোগ হয়েছিল স্পেনের মুসলিমদের সাথে। কারন উপ্সালা ইউনিভার্সিটির এক প্রত্নতত্ত্ববিদ কাপড়ের মধ্যে পাওয়া এরকম ক্ষুদ্র জ্যামিতিক নকশা স্পেনেও পেয়েছিলেন।
ভাইকিংসরা কোন বংশ বা ধর্মের মতাবলম্বী ছিলো না তাই প্রত্নতত্ত্ববিদদের কাছে এই সমাধিগুলো রহস্য হয়ে এসেছে।
ভাইকিংসদের অন্য একটি সমাধিস্থল থেকে মস্তকহীন দেহ তোলা হয়েছে। সেই সবগুলোর সাথে উপ্সালার সমাধি একদম মেলে না।
ভাইকিংরা মুলত সমুদ্রচারী ব্যবসায়ী ও যোদ্ধা ছিল যারা ৮ম শতক থেকে ১১শ শতক পর্যন্ত ইউরোপের বিশাল এলাকা জুড়ে রাজত্ব করে। জাহাজের নকশা তৈরিতে ও জাহাজ বানানোতে ভাইকিংরা অসম্ভব রকমের মুনশিয়ানা অর্জন করেছিল। আইসল্যান্ড ও স্ক্যান্ডিনেভিয়ার অনেক লোকগাথায় ভাইকিংদের শৌর্য-বীর্যের কথা উঠে এসেছে। ১১শ শতকের শেষের দিকে স্ক্যান্ডিনেভিয়া অঞ্চলের মানুষেরা খ্রিস্টধর্মে ধর্মান্তরিত হতে শুরু করলে ভাইকিংদের প্রভাব ধীরে ধীরে হ্রাস পায়।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:১১