সিলেট, ক-৩৭৯। নম্বরপ্লেট দেখলেই বুঝে নেওয়া যায়, মাখন রঙের গাড়িটির বয়স হয়েছে অনেক। তবু আঙুলের করে গুনে আপনার সঙ্গে এর বয়সের পার্থক্যটা ধরতে হলে জেনে নিন, ১৯৩৭ সালে আমেরিকায় এর জন্ম। খাঁজকাটা নাকের দুই পাশে সোনালি চোখ। চোখের চারপাশে কালো রং দেওয়া, যেন মালিক নজর না-লাগা কাজল পরিয়েছেন!
গ্যাজ ১৯৬১
ভদ্রলোকের (!) আদি নিবাস রাশিয়ায়। ১৯৬১ সালে তার জন্ম। জলপাই রং, সুঠাম শক্তপোক্ত দেহ আর পেছনে সৈন্যসামন্ত বহন করার মতো প্রশস্ত জায়গাই বলে দেয়—এ ঘাগু মাল! যুদ্ধটুদ্ধ নিয়ে এর কায়কারবার। গাড়িটির বর্তমান মালিক হাবিবুর রহমান। ডাকনাম সানী। তাঁর সঙ্গে কথা বলে অনুমানের সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেল। রুশ সেনাবাহিনীর কাছ থেকে এ গাড়ি এনেছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনী। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কাছ থেকে গাড়িটি সংগ্রহ করেন সানী।
ভলভো পি ভি ফাইভ ফোরটি ফোর, ১৯৬১
সুইডিশ ভলভো কোম্পানির তৈরি এ গাড়ি। দরজা দুটো হলেও ভেতরে রয়েছে চারজন বসার মতো সুবন্দোবস্ত। সামনের অংশের অদ্ভুত গড়নের কারণেই হয়তো বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়া এই সুইডিশকে দেখতে বেশ অভিজাত দেখায়।
ফিয়াট ১৯২৯
দেখা হলো কুমিল্লা ক-১১৩ নম্বরধারী গাড়িটির সঙ্গে। লাল রঙের ফিয়াটটি আলাদাভাবে চোখে পড়ল ভিন্ন কারণে। কোন খেয়ালে কে জানে, গাড়িটির গায়ে আঁকা হয়েছে সার বেঁধে হেঁটে চলা কালো পিঁপড়ার দল। গাড়ির মালিক মাহমুদুল ফারুক। ফিটফাট ফিয়াট গাড়িটির জন্ম ১৯২৯ সালে।
ডজ, ১৯৩০
এই গাড়িরও মালিক হাবিবুর রহমান সানী। তাঁর কাছ থেকে জানা গেল, গাড়িটির রয়েছে ঐতিহাসিক মাহাত্ম্য। ডজ কোম্পানির নীল রঙের গাড়িটি একসময় বয়ে বেড়াত ত্রিপুরার মহারাজকে। রাজার গাড়িও রাজকীয় ভঙ্গিতেই আসন গেড়েছে প্রদর্শনীতে। নানা হাত ঘুরে গাড়িটি পৌঁছেছে সানীর হাতে।
সানবিম ট্যালবট, ১৯৩৭
দেখতে চমৎকার এ গাড়ির বেশ একটা মিল রয়েছে রিকশার সঙ্গে! রিকশার মতো এ গাড়িতেও আছে হুড। রোদে যেমন হুড তোলা থাকলেই মিলবে ছায়া, তেমনি ফুরফুরে বাতাস চাইলে হুড ফেলে দিয়ে বেশ একটা সিনেমাটিক আমেজ পেতে পারেন। চাইলে সামনের কাচটাও ভাঁজ করে শুইয়ে দেওয়া যায়। ব্রিটিশ গাড়িটির জন্ম ১৯৩৭ সালে। খাঁজকাটা নাক, গোল চোখ, দুই পাশে উঁচু চোয়াল—হঠাৎ দেখলে অনেকটা ঘাপটি মেরে বসে থাকা কুকুরের মুখের মতো দেখায়!