আমরা সবাই বেহেশতে যেতে চাই । প্রতিদিন আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, চালাও সে পথে যে পথে তোমার প্রিয়জন গেছে চলি, আর সরল-সঠিক পথ পবিত্র কোরআনে আল্লাহ্ পরিষ্কার করে বলে দিয়েছেন ।
অথচ আমরা কত দরগা মাজার তরিকা কতগুলো পন্ডশ্রমে ডুবে থাকি। কিন্তু কোরআন পড়ে দেখিনা জান্নাতের মালিক জান্নাতে যেতে কি বলে দিয়েছেন।
বেহেশতের চাবি হচ্ছে 'বিশ্বাস' এবং সৎ কাজ। কোরআনে আল্লাহ্ যতবার বেহেশতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ততবারই বিশ্বাস ও সৎকর্মের পূর্বশর্ত দিয়েছেন। এই বিশ্বাস ও সৎকর্মের বিস্তারিত তালিকাও আল্লাহ্ কোরআনে বলে দিয়েছেন । কিন্তু আমাদের পরিচিত ইসলামের সাথে সেই তালিকার সম্পর্ক খুব একটা মিল নেই বললেই চলে।
আল কোরআন যেসব আয়াতে বেহেশতের প্রতিশ্রুতি ও পূর্বশর্ত দেওয়া হয়েছে তা এক নজরে দেখে নেই ।
যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তাদেরকে সুসংবাদ দাও যে, তাদের জন্য আছে জান্নাতসমূহ। সুরা বাকারা আয়াত ২৫
নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে, যারা ইয়াহূদী হয়েছে এবং নাসারা ও সাবিঈরা* -(তাদের মধ্যে) যারা ঈমান এনেছে আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি এবং নেক কাজ করেছে - তবে তাদের জন্য রয়েছে তাদের রবের নিকট তাদের প্রতিদান। আর তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিতও হবে না।সুরা বাকারা আয়াত ৬২
যারা ঈমান আনে ও নেক ‘আমাল করে তারাই জান্নাতবাসী, তারা সেখানে চিরস্থায়ী হবে। সুরা বাকারা আয়াত ৮২
যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে, অচিরেই তাদেরকে আমি প্রবেশ করাব জান্নাতসমূহে>আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য। আর কে আল্লাহর চেয়ে কথায় সত্যবাদী?। সুরা নিসা আয়াত ১২২
যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে, অচিরেই আমি তাদেরকে প্রবেশ করাব জান্নাতসমূহে> সেখানে তারা হবে স্থায়ী । সুরা নিসা আয়াত ৫৭
যারা ঈমান এনেছে এবং নেক কাজ করেছে আল্লাহ ওয়াদা দিয়েছেন, তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার। সুরা মায়েদা আয়াত ৯
নিশ্চয় যারা ঈমান আনে এবং নেক আমল করে, তাদের রব ঈমানের কারণে তাদেরকে পথ দেখাবেন, আরামদায়ক জান্নাতসমূহে যার তলদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত। সুরা ইউনুস আয়াত ৯
যারা সবর করেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তাদের জন্যই রয়েছে ক্ষমা ও মহা প্রতিদান। সুরা হুদ আয়াত ১১
নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে, সৎকর্ম করেছে এবং বিনীত হয়েছে তাদের রবের প্রতি, তারাই জান্নাতবাসী, তারা সেখানে স্থায়ী হবে। সুরা হুদ আয়াত ২৩
নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে, নিশ্চয় আমি এমন কারো প্রতিদান নষ্ট করব না, যে সুকর্ম করেছে। সুরা কাহফ আয়াত ৩০
নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে, তাদের মেহমানদারির জন্য রয়েছে জান্নাতুল ফেরদাউস।সুরা কাহফ আয়াত ১০৭
নিশ্চয় যারা ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে আল্লাহ তাদেরকে দাখিল করবেন এমন জান্নাতে, যার পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত। নিশ্চয়ই আল্লাহ যা ইচ্ছা তাই করেন। সুরা হজ আয়াত ১৪
যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে নিশ্চয় আল্লাহ তাদেরকে দাখিল করবেন এমন জান্নাতে, যার পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত। যেখানে তাদেরকে সোনার কাঁকন ও মুক্তা দ্বারা অলংকৃত করা হবে এবং যেখানে তাদের পোশাক-পরিচ্ছদ হবে রেশমের।সুরা হজ আয়াত ২৩
সুতরাং যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও সম্মানজনক রিয্ক।সুরা হজ আয়াত ৫০
যারা ঈমান আনে আর সৎকাজ করে তাদের জন্য আছে নি‘য়ামাতে ভরা জান্নাত। সুরা লোকমান আয়াত ৮
তিনি প্রতিদান দেন তাদেরকে যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে। তাদেরই জন্য রয়েছে ক্ষমা ও সম্মানজনক রিয্ক। সুরা সাবা আয়াত ৪
যারা ঈমান আনে আর সৎকাজ করে তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহা প্রতিফল। সুরা ফাতির আয়াত ৭
নিশ্চয় যারা ঈমান আনে এবং সৎকাজ করে তাদের জন্য রয়েছে নিরবচ্ছিন্ন প্রতিদান। সুরা ফুসসিলাত আয়াত ৮
যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তারা জান্নাতের উদ্যানসমূহে থাকবে। তারা যা চাইবে, তাদের রবের নিকট তাদের জন্য তাই থাকবে। এটাই তো মহাঅনুগ্রহ। সুরা শুরা আয়াত ২২
যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে তাদের রব পরিণামে তাদেরকে স্বীয় রহমতে প্রবেশ করাবেন। এটিই সুস্পষ্ট সাফল্য। সুরা জাসিয়া আয়াত ৩০
যারা ঈমান এনেছে, সৎকর্ম করেছে এবং মুহাম্মাদের প্রতি যা নাযিল করা হয়েছে তাতে বিশ্বাস স্থাপন করেছে ‘আর তা তাদের রবের পক্ষ হতে (প্রেরিত) সত্য, তিনি তাদের থেকে তাদের মন্দ কাজগুলো দূর করে দেবেন এবং তিনি তাদের অবস্থা সংশোধন করে দেবেন। সুরা মোহাম্মদ আয়াত ২
যে আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তিনি তার পাপসমূহ মোচন করে দিবেন এবং তাকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতসমূহে, যার পাদদেশ দিয়ে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত হয়, তথায় তারা স্থায়ী হবে। এটাই মহাসাফল্য। সুরা তাগাবুন আয়াত ৯
যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তাদের জন্য রয়েছে নিরবচ্ছিন্ন পুরস্কার। সুরা ত্বিন আয়াত ৬
নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে তারাই সৃষ্টির সর্বোৎকৃষ্ট। সুরা বায়্যিনাহ আয়াত ৭
আর তোমরা আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় কর এবং নিজ হাতে নিজদেরকে ধ্বংসে নিক্ষেপ করো না। আর সুকর্ম কর। নিশ্চয় আল্লাহ সুকর্মশীলদেরকে ভালবাসেন। সুরা বাকারা আয়াত ১৯৫
আমরা আল্লাহর কাছে যা চাই তা হচ্ছে প্রার্থনা কিন্তু আল্লাহ আমাদের কাছে যা চান তাই হচ্ছে সৎকর্ম যারা আল্লাহর কমান্ড / আদেশ পরিপুন্ন ভাবে মানবে ভালো কাজ করবে আল্লাহ তাদের বেহেশত প্রবেশাধিকার দিবেন ।
কোরআন হচ্ছে জীবন বিধান কিন্তু কোরআন কে পাশ কাটিয়ে জীবনের সাথে সম্পর্কহীন সমাজ-সংসারে গুরুত্বহীন কিছু পোষাক আশাক দোয়া তাবিজ রীতি-রেওয়াজ কে আমরা ধর্ম হিসেবে চর্চা করি কিন্তু আল কোরআন যেসব করনীয়-বর্জনীয় বলে দিয়েছে সে সব ছায়ার মতো অনুসরণ করলে শুধু আখেরাত নয় । আমাদের দুনিয়ার জীবনে হবে প্রাপ্তিতে প্রশান্তিতে পরিপূর্ণ । মিলবে আখেরাতে কাংখিত জান্নাত ।
আমার লিখা বই ( আত্মশুদ্ধি ) পাণ্ডুলিপি থেকে আংশিক ।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা এপ্রিল, ২০২২ বিকাল ৩:২৪