somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"বিস্মৃতি"

২৪ শে মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৪:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সে যে আজ কোথা হারিয়ে গিয়েছে, আঁধার ছেয়েছে ঘনঘোর কালো;
চাঁদ নেই তারকারাজিও উধাও, নেই জ্বলে কোথা টিমটিমে আলো!
সে যে জানে শত হৃদয়ের কথা, মায়াজালে ঘেরা হাজার স্মৃতি!
কত দিন কত রাতের প্রহর কেটেছে, সাক্ষী শুক্লাতিথি!

'কিছু মানুষকে মনে রাখার কোনো অর্থ নেই; আর আমি সেই মানুষগুলোরই একজন।'

যারা অতি সহজেই সবকিছু ভুলে যেতে পারে তারা তাদের কোনো দুঃখ নেই। সব, ব্যথা, যন্ত্রণা, কষ্ট, স্মৃতির আঁচড় থেকে মুছে গেলে জীবন শান্তিময়।
পৃথিবীতে ভুলোমনা মানুষের কমতি নেই। অনেক ভুলোমনা মানুষ আছে যারা কখন কোথায় কোন জিনিস রাখে একটু পরেই তা ভুলে যায়। তখন পাগলের মতো খুঁজতে থাকে। হয়ত আঁতিপাঁতি করে গামছা খুঁজছে, পরে দেখা গেল গামছা তার কাঁধেই ঝুলছে। হয়ত চশমা খুঁজতে গিয়ে ঘরের সবকিছু তছনছ করে ফেলছে, পরে দেখা গেল চশমাটা তার কপালের ওপর শোভা পাচ্ছে। কখন যেন ঠেলে কপালের ওপর তুলে দিয়েছিল।
এসব ভুলোমনা মানুষ একদিক দিয়ে ভালোই আছে। কারণ, কিছুক্ষণ আগে কী করেছিল একটু পরেই তা বিস্মৃত হয়ে যাচ্ছে। আর এই সামান্য জিনিস ভুলে যাওয়া মানে জগতের সবকিছু ভুলে যাওয়া। টেনশন, প্যারা কোনোকিছুই তখন মাথার ওপর বোঝা হয়ে চেপে থাকার সুযোগ পায় না।
ঠিক এভাবেই মাঝেমধ্যে পৃথিবীর সবকিছু ভুলে, মাথা থেকে সব ঝেড়ে ফেলে সময় কাটানোর জন্য হা-পিত্যেশ করি। চেষ্টা করি অতীতের সবকিছু ভুলে যেতে। সব যন্ত্রণা, কষ্ট, দুঃখ এসব চিরতরে ভুলে যাওয়ার চেষ্টা অনবরত কসরত থাকি। কিন্তু চেষ্টা করলেই কি সব হয়? দেখা গেল অনেক চেষ্টা করে কিছু জিনিস প্রায় ভুলেই গেছি, হঠাৎ করেই পরিচিত কোনো ঘটনা, দৃশ্য বা অন্য কোনো জিনিস সামনে উপস্থিত হয়ে অতীতের কিছু স্মৃতি জাগিয়ে তুলছে। তখন হুড়মুড় করে আবার সব মনে পড়ে যাচ্ছে। আরে বাবা! আমি তো সব ভুলেই গেছি, মন থেকে ঝেড়ে ফেলে দিয়েছি, কী দরকার আবার সেসব সামনে এনে খামোখা স্মৃতিকাতর করে দেওয়ার?

জীবনটা স্মৃতিবিহীন কাটিয়ে দিতে পারলে খারাপ হতো না, কিন্তু স্মৃতি এমনই এক জিনিস, যাকে হাজার তাড়াতে চাইলেও সহজে ছেড়ে যেতে চায় না।

মনে হয় হুমায়ূন আহমেদ এমনটাই বলেছিলেন-
'ভুলে যেতে পারাই ভাল।
যে মানুষ কোনোকিছু ভুলতে পারে না,
সে শেষ পর্যন্ত পাগল হয়ে যায়।'

ভুলোমনা হওয়ার ধন্বন্তরী ওষুধ আছে কি কারো কাছে?

শেষে Devon Eaton-এর
A Book I’ll never write থেকে কিছু পঙক্তি:

'আমাকে তুমি ভুলে যাবে। এমন নয় যে, খুব দ্রুত বা হঠাৎ করেই ভুলে যাবে। এমনভাবেও নয় যে, একদিন আমি চলে যাব আর তার পরদিন সেখানে একটি খালি জায়গা পড়ে থাকবে। বাস্তব হলো, খুব ধীরে ধীরে তুমি আমার কন্ঠস্বর ভুলে যাবে। আমার মুখচ্ছবি আর তোমার চোখে ভাসবে না। অবশেষে একসময় তুমি বৃষ্টির পূর্বে আকাশে জমা হওয়া মেঘের দিকে তাকিয়ে থাকবে, কিন্তু সে মেঘগুলোর রং কী, তা বুঝতে পারবে না। যদিও সেগুলোর রং দেখতে হবে আমার চোখের মণির মতোই, বাদামী-নীল।
তারপর থেকে তুমি আর কখনই জানবে না যে, আমি সমাপ্তিরেখার মতো অস্পষ্ট আকৃতি নিয়ে জেগে আছি। জেগে আছি সংযোগবিহীন স্মৃতি হয়ে, যেগুলো কখনও কখনও তোমার অতীত স্মৃতির সাথে মিলেমিশে যাবে। আমার মনে হয় সেটাই ভালো হবে। কিছু মানুষকে মনে রাখার কোনো অর্থ নেই; আর আমি সেই মানুষগুলোরই একজন।'
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৪:৫৬
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হিলিয়াস

লিখেছেন নিথর শ্রাবণ শিহাব, ০৫ ই এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১২:৩২


“আমাদের হাতে সময় কতটুক আছে আর?” নিয়ানা ফিরে তাকায় রোমানের দিকে।
“অক্সিজেনের হিসেবে আর আট ঘণ্টা। নাইট্রোজেন কনভার্সন হিসেবে ধরলে আরো বাড়তি তিন ঘণ্টা। মোটে এগারো ঘণ্টার রেস্পিরেটরি সাপ্লাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহনা ( শেষ পর্ব)

লিখেছেন সামিয়া, ০৫ ই এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৪:০২



ঈশান সবার দিকে তাকিয়ে দৃঢ় কণ্ঠে বলল,
- আই’ম সরি ফর বিহেভিং দিস ওয়ে ইন ফ্রন্ট অফ এভরিওয়ান। বাট ওলি ডিজার্ভড ইট। হি মাস্ট অ্যাপলজাইজ টু অহনা রাইট নাউ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ওয়াক্ফ সম্পত্তি আইন ২০২৫: ভারতের মুসলিম নিধন নীতির আইনগত চাবিকাঠি !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১০:০৪


ভারত আজ আর গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র নয়—আজকের ভারত এক হিন্দুত্ববাদী নিয়ন্ত্রিত রাজনৈতিক প্রকল্প, যেখানে সংবিধানকে অস্ত্র বানিয়ে একের পর এক সংখ্যালঘু নিধন চালানো হচ্ছে। 'ওয়াক্ফ সম্পত্তি আইন ২০২৫' তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে ওরিয়ানা ফাল্লাচির সাক্ষাৎকার - Sheikh Mujibur Rahman's interview with Oriana Fallaci

লিখেছেন জনাব রায়হান, ০৫ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১১:৫৫

(Interview with History বই থেকে, পৃষ্ঠা ১২২-১৩৫, বাংলায় ভাবানুবাদ)

"১৯৭২ সালে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফাল্লাচি বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে একটি তীব্র ও বিতর্কিত সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। তার বই Interview... ...বাকিটুকু পড়ুন

মোদির সাথে ডঃ ইউনূসের সাক্ষাৎ এবং.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৬ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৭:৫০

মোদির সাথে ডঃ ইউনূসের সাক্ষাৎ এবং.....

'সাইড লাইনে সাক্ষাৎ" দেখে যারা উল্লাসে উচ্ছ্বসিত, আনন্দে উদ্ববেলিত....কেউ কেউ আরো কয়েক ধাপ এগিয়ে গলাবাজি করছেন- ভারত ভুল বুঝতে পেরেছে, ডক্টর ইউনুস স্যারের কাছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×